ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চুয়াডাঙ্গায় ভরা মৌসুমেও ব্যাপারী নেই, চাষীরা লোকসানে

পান বেচাকেনা অর্ধেকে নেমেছে

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

পান বেচাকেনা অর্ধেকে নেমেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা ২৬, ফেব্রুয়ারি ॥ পান চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার কৃষকদের প্রধান অর্থকরি ফসল। চুয়াডাঙ্গার পান বাংলাদেশ ছাড়িয়ে রফতানি করা হয় মধ্যপাচ্যসহ অন্তত ১৫টি দেশে। হরতাল-অবরোধে সেই পান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। জেলার ৮টি পান হাটে যেখানে আগে সপ্তাহে ৬-৭ কোটি টাকার পান বিক্রি হতো বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস পানচাষীদের ভরা মৌসুম। বছরের এ সময় পানের দাম বেশি থাকায় চাষীরা তাদের উৎপাদিত পান বিক্রি করে থাকে। কিন্তু এ বছর দূর-দূরান্ত থেকে ঠিকমতো ব্যাপারী না আসায় একপ্রকার অর্ধেক দামে পান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক ব্যাপারী চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন হাট থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পান কিনছেন। তবে মোকামে পাঠাতে খরচ পড়ছে দ্বিগুণের বেশি। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ হাজার ৮৩১ হেক্টর জমিতে পান বরজ রয়েছে প্রায় ১২ হাজার। পান চাষের জড়িত রয়েছে প্রায় ২০ হাজার চাষী। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৮টি পানের হাট রয়েছে। এর মধ্যে দেশের অন্যতম বৃহত্তর পানের হাট চুয়াডাঙ্গা ভালাইপুর ও গোকুলখালি হাট। কিন্তু পানের এ ভরা মৌসুমে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পানের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। গোকুলখালি হাট থেকে প্রতি সপ্তাহে ৪০-৫০ ট্রাক পান ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের অঞ্চলে যেত। দেশে টানা অবরোধ ও হরতালে পানের হাটগুলোতে ব্যাপারী কম আসায় পানের চাহিদা তুলনা মূলকভাবে গত কয়েক হাটে অনেক কম। তাই পান অবিক্রীত রয়েছে। কৃষকরা বাধ্য হয়েই কম দামে পান বিক্রি করছেন। অন্য বছরগুলোতে যে পান এ সময়ে প্রতি পন (৮০টি) ১২০-১৩০ টাকা মূল্যে বিক্রি হতো তা এখন ৫০-৬০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে প্রতি সপ্তাহে পান চাষী ও ব্যাপারীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। পানের দাম কম থাকায় অনেকে পানবরজ থেকে পান তুলছে না। সেসব বরজের পান ঝরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। পান ব্যাপারী সান্টু মিয়া, সামাদ ও মারফত আলি জানান, পান যে দামে কিনছি সে দামে বিক্রি করতে পারছি না। পরিবহনে আগে যে খরচ হতো তার ৪ গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। আগে যেখানে এক ডোল (বড় ঝুড়ি) পাঠাতে খরচ হতো ৬০০-৭০০ টাকা সেখানে খরচ হচ্ছে ২৫০০-৩০০০ টাকা। এছাড়া রয়েছে জীবনের নিরাপত্তার অভাব। অনেক ব্যাপারী ট্রাকের বদলে ছোট ছোট ঝুড়িতে ট্রেনের মাধ্যমে পানের চালান পাঠাচ্ছি। এতে মাঝে মাঝে পান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
×