ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্বোধনী জুটির কাছে বড় ইনিংসের প্রত্যাশা

ওপেনার তামিম-এনামুলেই দৃষ্টি!

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ওপেনার তামিম-এনামুলেই দৃষ্টি!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেই ১৯৯৯ সাল থেকে শুরু, এখন পর্যন্ত ধারা একটাই চলছে। বড় কোন টুর্নামেন্টে বড় দলকে হারাতে হলে, শুরুতেই ব্যাটিংয়ে কিছু করে দেখাতে হবে বাংলাদেশকে। এটা যেন নিয়তিই হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুরুতে ব্যাটিংয়ে হাল ধরা গেলেই জয় নিশ্চিত। ব্যাটিংয়ে আজও শুরুতেই কিছু না করা ছাড়া যেন বাংলাদেশের কোন গতিই নেই। আর তাই উদ্বোধনী জুটি তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়ের দিকেই সব দৃষ্টি থাকছে। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশ বড় কোন দলকে হারায়। প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েই পাকিস্তানের মতো বড় দলকে হারায়। সেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে টেস্ট খেলুড়ে কোন দলকে হারানোর প্রথম অর্জন। সেই ম্যাচে শুরুতেই শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপির ৬৯ রানের জুটিই দলকে এগিয়ে দেয়। অপি ৪২ বলে ৯ রান করে আউট হলেও শাহরিয়ারকে (৩৯) সহযোগিতা করে যান। এরপর ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচেও শুরুতেই বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে জ্বলে ওঠে। তামিম ইকবালের ৫১ রানে জয় পাওয়ার পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। যদিও আরেক ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস (২) ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে তামিমের অর্ধশতকে দল উজ্জ্বীবিত হয়ে ওঠে। শেষপর্যন্ত জয়ও তুলে নেয় এবং এ জয় বাংলাদেশকে দ্বিতীয় রাউন্ডেও উঠিয়ে দেয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে যে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলকে হারায় বাংলাদেশ, সেখানেও উদ্বোধনী জুটির ছিল অনেক বড় অবদান। জাভেদ ওমর ও তামিম ইকবাল মিলে ৪২ রানের জুটি গড়েছিলেন। জাভেদ ১৭ রানে আউট হলেও তামিম করেন ৩৮ রান। দল এই জুটিতে সেদিন জ্বলে ওঠে। শেষপর্যন্ত জয়ও তুলে নেয়। সর্বশেষ বিশ্বকাপে ২০১১ সালে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও একই অবস্থা দেখা যায়। ম্যাচটিতে তামিম-ইমরুল কায়েস মিলে ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। যে জুটিতে জয়ের পথও তৈরি হয়। জয়ও মিলে যায়। তামিম ম্যাচটিতে ৩৮ রান করেন, ইমরুলের ব্যাট থেকেও আসে ৬০ রান। বাংলাদেশ যে প্রথমবারের মতো ২০১২ সালে এশিয়া কাপ জিতে নেয়ার স্বপ্ন দেখে, প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলে; সেটিও উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের জন্যই সম্ভব হয়। তামিম ইকবাল তো টানা চার ম্যাচেই অর্ধশতক করেন। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ওপেনার নাজিমুদ্দিন ৫ রান করে আউট হলেও তামিম ৭০ রানের ইনিংস খেলেন। ভারতও ম্যাচটিতে হারে। এ ম্যাচটির পর যে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নেয় বাংলাদেশ, সেই ম্যাচেও তামিমের ব্যাট জ্বলে ওঠে। ওপেনার নাজিমুদ্দিন এ ম্যাচেও ৬ রান করে আউট হয়ে গেলেও তামিম করেন ৫৯ রান। যা শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেয়ার ভীত গড়ে দেয়। বড় টুর্নামেন্টে বড় দলকে হারাতে হলে যে উদ্বোধনী জুটিকে বিশেষ কিছু করতে হবে কিংবা উদ্বোধনী জুটির যে কোন একজনকে বড় ইনিংস খেলতে হবে, তা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস ঘেঁটেই বোঝা যাচ্ছে। আজ শ্রীলঙ্কাকে হারাতেও তাই করতে হবে। তা না হলে যে জয় পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তামিম ইকবাল তো বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগে বলেছিলেনই, ‘বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করব। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন ব্যাটসম্যানের শতক নেই। আমি সেই শতকটি করতে চাই।’ আর এনামুল হক বিজয় বলেছিলেন, ‘নিজের সেরা খেলাটা খেলতে চাই। দলের জয়ে বিশেষ ভূমিকা থাকবে, তা দেখতে চাই।’ দুইজনের আশা পূরণ হওয়ার দিনটি আজ হয়ে গেলেই হয়। তামিম-এনামুলেই তাই আজ সব দৃষ্টি থাকছে।
×