ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

জব্বারের রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের দাবি প্রসিকিউশনের

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জব্বারের রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের দাবি প্রসিকিউশনের

বিকাশ দত্ত ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য পিরোজপুরের পলাতক রাজাকার কমান্ডার জব্বারের আমৃত্যু কারাদ-ের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষ আপীল করার জন্য সরকারের নিকট প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ কর্তৃক আসামি জব্বারের আমৃত্যু কারাদ-ের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি ও আপীল কারার জন্য একটি চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুর লেখা ঐ চিঠি আইন সচিব বরাবর লেখা হয়েছে। ঐ চিঠিতে রায়ের মূল কপি আপীল দায়েরসহ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলার প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম জনকণ্ঠকে বলেন, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আইন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে রায়ের মূল কপি ও আপীলসহ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনৃাল-১ কর্তৃক ২৪ ফেব্রুয়ারি চীফ প্রসিকিউটর বনাম মোঃ আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের মামলা (কেস নং আইসিটি/বিডি -০১/২০১৪ ) এর রায় প্রদান করা হয়। উল্লেখিত রায়ে মোঃ আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের পাঁচটি অভিযোগের সবই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত এবং অভিযোগ ১,২,৩ ও ৫ এ মৃত্যুদ-ের শাস্তি হওয়া সত্ত্বেও বয়স বিবেচনায় আমৃত্যু কারাভোগের দ-াদেশ প্রদান করা হয়েছে। এবং অভিযোগ ৪ এ আসামির বিরুদ্ধে ২০ বছরের সশ্রম কারাদ- এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম জনকণ্ঠকে বলেছেন, ইতোপূর্বে ট্রাইব্যুনাল-২ জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানের মামলায় বৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ট্রাইব্যুনাল দ-াদেশ প্রদান করার ক্ষেত্রে বয়সকে বিবেচ্য বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেন নি। ট্রাইব্যুনাল-১ জব্বারের মামলায় ৮২ বছর বয়সের আসামির বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত মন্তব্য করা সত্ত্বেও দ-াদেশ প্রদান করার ক্ষেত্রে বয়সকে বিবেচ্য বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেছেন। প্রসিকিউটর হিসেবে মনে করি দুটি ট্রাইব্যুনাল সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং একই বিষয়ে বিবেচনায়প্রসুত দ-াদেশ প্রদান করার ক্ষেত্রে বয়সকে গ্রহণ করে দ-াদেশ প্রদান করেছে। ১৯৭৩ সালের আইসিটি এ্যাক্টের ধারা ২১(২) এর অধীনে সরকার পক্ষের আপীল করার অধিকার সংরক্ষিত আছে। এবং এ বিষয়টি আপীল বিভাগে নিষ্পত্তি হবারও সুযোগ রয়েছে। ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদ- প্রদান করে। মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, উস্কানি, সহযোগিতা এবং হত্যা-নির্যাতনে বাধা না দেয়া- পাঁচ ধরনের অপরাধের প্রতিটিতেই গোলাম আযম সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হলেও তাকে কারাদ- দেয়া হয়েছে বয়স ও স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনায়। বিভিন্ন মেয়াদের কারাদ- মিলিয়ে তাকে টানা ৯০ বছর সাজা অথবা ‘আমৃত্যু’ জেল খাটতে হবে। তখন গোলাম আযমের বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। গোলাম আযম জন্মগ্রহণ করেন ১৯২২ সালের ৭ নবেম্বর। অসুস্থ অবস্থায় ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি মারা যান।
×