ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

‘যাত্রাশিল্পের সেকাল-একাল’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

‘যাত্রাশিল্পের সেকাল-একাল’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হারিয়ে যেতে বসেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী যাত্রাশিল্পের সোনালি গৌরব। এই হারানো গৌরবকে ফিরিয়ে আনতে যে কয়জন গুণী ব্যক্তি আজীবন নিরলস চেষ্টা করে গেছেন তাঁদের মধ্যে জীবন্ত কিংবদন্তি যাত্রানট মিলন কান্তি দে। শতাধিক যাত্রাপালায় অভিনয়ের পাশাপাশি যাত্রাশিল্পকে সুসংহত করতে চার দশক ধরে কাজ করে চলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ যাত্রা উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে গেছেন। সম্প্রতি একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে মিলন কান্তি দের লেখা ‘যাত্রাশিল্পের সেকাল-একাল’ নামের একটি গবেষণাধর্মী গ্রন্থ। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের ব্যানারে প্রকাশিত যাত্রাশিল্প বিষয়ক তথ্যবহুল এ বইটি একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে ইত্যাদির ৩৭, ৩৮, ৩৯ নম্বর স্টলে। গবেষণালব্ধ এ বইটি এরই মধ্যে নাট্য-যাত্রা তথা পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যাত্রাশিল্পের ইতিহাস-ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক অধ্যায়ে যাত্রার ইতিহাস, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যাত্রার ভূমিকা, ঢাকার চার শ’ বছরের যাত্রা পরিক্রমা, জাতীয় জাগরণ ও মুক্তিযুদ্ধে যাত্রাশিল্পীদের সংশ্লিষ্টতা- এসব বিষয় প্রাঞ্জল ভাষায় উঠে এসেছে এ বইটিতে। বাদ পড়েনি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, মাইকেল মধূসুদন দত্তসহ যাত্রার বিবেক নিয়ে আলাদা রচনা। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় বইটির প্রকাশনা উৎসব। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যজন এসএম মহসিন ও যাত্রাব্যক্তিত্ব জ্যোৎস্না বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাট্যজন আতাউর রহমান। উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক গাজী বেলায়েতের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ফারুক হোসেন শিহাব। সূচনা পাঠ করেন প্রাবন্ধিক ও নাট্য সমালোচক অপূর্ব কুমার কু-ু। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- কবি ড. আমিনুর রহমান সুলতান, আবৃত্তিকার ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, নাট্যনির্দেশক জাহিদ রিপন, নাট্যকার গেলাম শফিক, যাত্রা পালাকার এমএ মজিদ, প্রাবন্ধিক আবু সাইদ তুলু প্রমুখ। বক্তারা বলেন, যাত্রাশিল্পের সোনালি অতীত অতীতই হয়ে গেছে। এখন এ শিল্পের হারানো গৌরব কী করে ফিরিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে আমরা যারা সচেতন তাঁদের এগিয়ে আসতে হবে। আজ যারা যাত্রাশিল্প নিয়ে গবেষণা করেন তাঁদের জন্য মিলন কান্তি দের এ বইটি খুবই সহায়ক হবে। বাঙালী যে সকল শিল্প নিয়ে গর্ব করতে পারে যাত্রা তার অন্যতম। এ গ্রন্থটি শুধুমাত্র যাত্রাশিল্পীদেরই উপকারে আসবে তা নয়, যারা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের জন্যও বইটি অসাধারণ এক ভূমিকা রাখবে। মিলন কান্তি দের ৬৭ বছর বয়সে যাত্রাজীবনের অভিজ্ঞতার এক পরিণত রূপ প্রকাশ পেয়েছে এই বইটিতে। এতে যাত্রাবিষয়ক অনেক অজানা তথ্য এবং বিষয় রয়েছে যা অনেক আগেই আমাদের হাতে আসা উচিত ছিল। অনুষ্ঠানে মিলন কান্তি দেকে যাত্রাশিল্পের ওপর আরও বেশি বই লেখার আহ্বান জানালে তিনি পৃষ্ঠপোষকতা ও সার্বিক উৎসাহ পেলে কর্মক্ষম অবস্থা পর্যন্ত প্রতিবছর একটি করে বই লিখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্যকে নাগরিক সমাজে উপস্থাপনেও যথেষ্ট অবদান রয়েছে মিলন কান্তি দের। দীর্ঘ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ গুণী অভিনেতা পেয়েছেন শিল্পকলা একাডেমির বিশেষ যাত্রাব্যক্তিত্ব পদক ১৯৯৩, ইবসেন এ্যাওয়ার্ড ২০০৯, সিকোয়েন্স এ্যাওয়ার্ড অব অনার ১৯৮৬, টিভি রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন এ্যাওয়ার্ড (ট্রাব) ২০১২, অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতিপদক ২০০৯সহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। ‘কাটুস কুটুস’র চলচ্চিত্রায়ন শুরু আজ ॥ বর্তমান সময়ের প্রেমের বাস্তবতা এবং বিদ্যমান সামাজিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে তৈরি হচ্ছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘কাটুস কুটুস’। ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে আজ বৃহস্পতিবার থেকে চলচ্চিত্রটির শুটিং শুরু হবে। রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। একমাত্রা এন্টারপ্রেনার্স লিমিটেড আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চলচ্চিত্রটির পরিচালক শুভাশীষ রায়, নির্বাহী প্রযোজক সামির আহমেদ, মূল চরিত্রের অভিনয় শিল্পী পিয়া বিপাশা, মনোজসহ ‘কাটুস কুটুস’-এর সঙ্গে যুক্ত অন্য কলাকুশলী। সেই সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন একমাত্রার অভিভাবক স্থপতি ইকবাল হাবিবসহ অন্যরা। সম্মেলনে চলচ্চিত্রটির পরিচালক শুভাশীষ রায় বলেন, আমরা ‘কাটুস কুটুস’ নিয়ে আশাবাদী। আমরা মনে করি, স্বল্পদৈর্ঘ্য হলেও এই চলচ্চিত্রটির নির্মাণশৈলী এবং কাহিনীর বিন্যাস দর্শকদের ভাল লাগবে।
×