ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রমিকের চাকরি হারানোর আশঙ্কা

হরতাল-অবরোধে রংপুর শিল্পনগরীতে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

হরতাল-অবরোধে রংপুর শিল্পনগরীতে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে

মানিক সরকার মানিক, রংপুর ॥ চলমান অবরোধ-হরতালের কারণে রংপুর বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানাগুলোর উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। পরিবহন সঙ্কট এবং ভাড়া দ্বিগুণ হওয়ায় চাহিদামাফিক কাঁচামাল আসতে না পারায় মূলত এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। অন্যদিকে উৎপাদিত পণ্য সময়মত বাজারজাত করতে না পারা, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়া এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ কমে যাওয়াসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই শিল্প নগরীর ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানায় কর্মরত প্রায় তিন হাজার শ্রমিকসহ নিম্ন পদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রয়েছেন এখন চাকরি হারাবার আতঙ্কে। বিসিক শিল্প নগরী ঘুরে দেখা যায়, উৎপাদন কমে যাওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য নেই আগের মতো। বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক উপস্থিতি থাকলেও কাজের ব্যস্ততা নেই। রংপুর ফাউন্ড্রী লিঃ-এর উর্ধতন ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শরিফউদ্দিন আহমেদ জানান, এ কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে টিউবওয়েল, সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প, গ্যাস স্টোভ, ম্যানহোল কভার, বেলচা-কোদাল, প্রেশার কুকার, এ্যালুমিনিয়াম হাঁড়িপাতিল অন্যতম। কাঁচামাল হিসেবে প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার হয় স্ক্র্যাব জাহাজ ভাঙ্গা লোহা। যা আনতে হয় চট্টগ্রাম থেকে। প্রতিদিন গড়ে ১০ ট্রাক স্ক্র্যাব লোহা আনা হতো। কিন্তু অবরোধের কারণে ট্রাক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ট্রাক প্রতি ২৫ হাজার টাকার স্থলে বর্তমানে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ। স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত পিক আয়রনসহ অন্যান্য কাঁচামালের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কর্মী এবং উৎপাদনের সক্ষমতা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে পণ্যের উৎপাদন প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, এই কারখানায় আগে প্রতিদিন টিউবওয়েল এক হাজার পিস উৎপাদন হতো। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৪শ’ পিস। আবার পরিবহন সঙ্কটে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতেও একই সমস্যায় ভুগছে তারা। অথচ কারখানায় নিয়োগকৃত শ্রমিক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা প্রদান করতে হচ্ছে। অবরোধের কারণে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে অবরোধের কারণে বিসিক নগরীতে অবস্থিত মিল্কভিটার দুধ বহনকারী পরিবহন নিয়মিত না আসায় বিপাকে পড়েছেন দুধ উৎপাদনকারী ৮৬টি সমিতির তালিকাভুক্ত খামারি। মিল্কভিটা সূত্রে জানা যায়, খামারিদের কাছ থেকে তারা সর্বোচ্চ ১০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করতে পারেন।
×