ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছাঁটা হচ্ছে ৩৫ মন্ত্রণালয়-বিভাগের বরাদ্দ

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ছাঁটা হচ্ছে ৩৫ মন্ত্রণালয়-বিভাগের বরাদ্দ

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ চলতি অর্থবছরের (২০১৪-১৫) মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) থেকে ৩৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ ছাঁটা হচ্ছে। তবে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ১৮ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। তৈরি হতে যাওয়া সংশোধিত এডিপিতে (আরএডিপি) এটি করা হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই এ বরাদ্দ কমানো হচ্ছে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রথম কল নোটিস অনুযায়ী এসব তথ্য জানা গেছে। যদিও দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটি চূড়ান্ত নয়, এখনও খসড়া চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। ফলে বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কমার বিষয়টির মধ্যে পরিবর্তন আসতে পারে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কিভাবে সময়মতো শেষ করা যায় তার একটি দিকনির্দেশনা দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেছেন, অর্থবছরের শুরুতেই ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করলে প্রথম তিন মাসেই তা শেষ হবে। এছাড়া অর্থবছরের শুরুতেই সামগ্রিক কর্মপদ্ধতি বিশ্লেষণ করলে সহজে বুঝা যাবে বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জটা কোথায়। এ কাজগুলো মাঝপথে শুরু করলে স্বাভাবিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী ওই সময় আগামীতে প্রকল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কর্মকা-, কর্মসংস্থান তৈরি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে ওই প্রকল্পের ভূমিকা কি হবে তা নিশ্চিত হওয়ার পরই তা হাতে নেয়ার কথা বলেন। সূত্র জানায়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রথম কল নোটিস অনুযায়ী প্রস্তাবিত সংশোধিত এডিপিতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ কাটছাঁট হতে যাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হচ্ছে, জন প্রশাসন মন্ত্রালয় থেকে বরাদ্দ কমছে ৬৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে ২০২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে ৯১ কোটি ৭২ লাখ টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৮৮০ কোটি ৩২ লাখ টাকা, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ৮৮৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ৬৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ১৭৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণবিভাগ থেকে ২৪৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ২৯৬ কোটি ২০ লাখ টাকা, বিদ্যুত বিভাগ থেকে ৩২৩ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ কোটি ৩১ লাখ টাকা, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৭৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৪৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে ১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ৫২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং রেলপথ বিভাগ থেকে ৮৭৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, অর্থবছরের শুরুর দিকে বরাদ্দ দেয়া হয়, কিন্তু মাঝামাঝিতে এসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বুঝতে পারে তারা কি পরিমাণ খরচ করতে পারবে। তখন বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বরাদ্দ অর্থ থেকে কিছুটা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ফেরত দেয়। সেই অর্থ আবার যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বেশি ব্যয় করতে পারে তাদের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়। এটি অর্থ ব্যবস্থার একটি ভাল দিক। কেননা এতে করে বরাদ্দকৃত অর্থ অপচয় হয় না। প্রস্তাবিত সংশোধিত এডিপিতে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ বাড়ছে সেগুলো হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মোট বাড়ছে ১৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯ কোটি ২২ লাখ টাকা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০৫ কোটি ২৪ লাখ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৯৭২ কোটি ৯৩ লাখ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক হাজার ৪৬৬ কোটি ২৯ লাখ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৪৭৮ কোটি ৫৯ লাখ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ৭৮ কোটি ৭০ লাখ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১০৭ কোটি ৪৭ লাখ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের ৬০ লাখ, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৪৪ কোটি ৬২ লাখ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ১৫ কোটি এক লাখ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ৫৪৭ কোটি ৫০ লাখ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৫৭ কোটি ৩৪ লাখ, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সাত কোটি ৫৭ লাখ, সড়ক বিভাগের ৪৮০ কোটি ৯৯ লাখ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ৩৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
×