ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের গাড়ি নিবন্ধনে আয়কর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

৩০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে কর সম্মাননা

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

৩০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে কর সম্মাননা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নিবন্ধন ও ফিটনেস নবায়নের সময় আদায় করা উৎসে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এছাড়া ঢাকার তিন কর জোনের ৩০ শ্রেষ্ঠ করদাতা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদান করবে এনবিআর। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (শুল্কনীতি) ফরিদ উদ্দিন, সদস্য (আয়কর নীতি) পারভেজ ইকবাল, সদস্য (মূসক নীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর আলম, গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগের পরিচালক জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারী গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের গাড়ির নিবন্ধন ও নবায়নকালে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআরের বোর্ড সভা। এ সিদ্ধান্ত অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে; তাঁর অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এদিকে এনবিআর সূত্র জানায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আবেদন পাওয়ার পর আয়কর বিভাগের সব সার্কেল থেকে তথ্য চাওয়া হয়। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মাত্র ৬ জন আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। এর মধ্যে মাত্র ৩ জনের ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। সে হিসেবে, গাড়ির কর প্রত্যাহার করলে তেমন রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়বে না। এই বিবেচনায় আয়কর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, যদি ভবিষ্যতে সরকারী গেজেটভুক্ত কোন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ব্যক্তিগত গাড়ি কিনে থাকেন, তবে তারাও এ সুবিধা পাবেন। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ॥ চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান জানান জানুয়ারি মাস পর্যন্ত (জুলাই থেকে জানুয়ারি এই সাত মাস) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭১ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা আর আদায় হয়েছে ৬৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। এই হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মোট রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। তবে, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক বলে জানান এনবিআরের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে উন্মূক্ত মতামত নেয়া হচ্ছে। রাজস্ব আদায়ে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা যথাযথ মোকাবেলা করতে এনবিআর বদ্ধপরিকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগে দেশের উপজেলা পর্যায়ে এনবিআরের সাংগঠনিক কাঠামো ছিল না। এখন উপজেলা পর্যন্ত এনবিআরের ব্যবস্থাপনা কাঠামো বিস্তার করেছে এবং উপজেলা পর্যায়ে আয়কর মেলা আয়োজন করা হবে। মামলা নিষ্পত্তি ॥ বিভিন্ন মামলায় ২৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকে থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এক কোটি টাকা বা তার বেশি পরিমাণ টাকার মামলা আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে কজ লিস্টভুক্ত করতে যুগ্ম কমিশনারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শ্রেষ্ঠ করদাতা সম্মাননা ॥ ঢাকা অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ১০ করদাতা প্রতিষ্ঠান হলো- গ্রামীণ ফোন লিঃ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিঃ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ, দি এইচএসবিসি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো লিঃ, পূবালী ব্যাংক লিঃ, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিঃ, ইস্টার্ন ব্যাক লিঃ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাক লিঃ ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিঃ। কর অঞ্চল-১, ঢাকা অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ১০ করদাতা প্রতিষ্ঠান হলো- আকিজ ফুড এ্যান্ড বেভারেজ লিঃ, এসিআই ফরমুলেশনস লিঃ, আকিজ জুট মিলস্ লিঃ, এসিআই মটরস্্ লিঃ, আকিজ টেক্সটাইল মিলস্্ লিঃ, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোং লিঃ ও আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিঃ। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে আজমত রহমান, মোঃ মশিউর রহমান হুমায়ুন ও নুরুল হুদা। অন্যদিকে কর অঞ্চল-২, ঢাকা অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ১০ করদাতা প্রতিষ্ঠান হলো- এস জি এস বাংলাদেশ লিঃ, স্কয়ার সেফালসপরিনস, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিঃ, কুহনে + নাগাল লিঃ, সাকো ইন্টারন্যাশনাল লিঃ, ইয়াং ওয়ান হাইটেক স্পোর্টস ওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি লিঃ, সায়হাম কটন মিলস লিঃ. স্কয়ার ফুড এ্যান্ড বেভারেজ লিঃ ও স্কয়ার ইয়ার্ন লিঃ।
×