ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপে ভারতের সার্বিক নৈপুণ্যে সন্তুষ্ট সৌরভ গাঙ্গুলী

কঠোর অনুশীলনের ফসল ॥ ধোনি-ধাওয়ান

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

কঠোর অনুশীলনের ফসল ॥ ধোনি-ধাওয়ান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাঁচ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে শিখর ধাওয়ানের। আর ২০১৩ সালে একই দলের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে তার। সাদা পোশাকে অভিষেকেই নিজের জাত চেনান শিখর ধাওয়ান। টেস্ট অভিষেকেই দ্রুততম শতরানের (৮৫ বলে) মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। মোহালির সেই টেস্টে ১৭৪ বলে ১৮৭ রান করে থামেন ধাওয়ান। একই বছরে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে ভারত। সেখানেও সর্বোচ্চ রানের মালিক শিখর ধাওয়ান নির্বাচিত হন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট। গত নবেম্বরে প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্রুততম দুই হাজারী ক্লাবে ঢুকেন তিনি। আর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে চলমান বিশ্বকাপেও সব আলো কেড়ে নিয়েছেন ধাওয়ান। প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭৬ রানের পর রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ১৩৭ রানের ঝলমলে এক ইনিংস উপহার দেন তিনি। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচেই দারুণ জয় পায় ভারত। আর শিখর ধাওয়ানের এমন পারফর্মেন্সে ধোনি-গাঙ্গুলীরা তো দারুণ সন্তুষ্ট-মুগ্ধ। তবে ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি জানালেন, কঠোর অনুশীলনের পরই আজকের এই শিখর ধাওয়ান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের পর ভারতের সফল এই অধিনায়ক বলেন, ‘শিখর ধাওয়ান কঠোর অনুশীলন করেন। অন্য যে কারও চেয়ে বেশি পরিশ্রমী ক্রিকেটার সে। তার পারফর্মেন্সেই আমরা প্রমাণ দেখছি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার স্বাভাবিক খেলাটাই খেলেছে ধাওয়ান। শট খেলতে কোন ধরনের ভয় ছিল না তার মাঝে। একইভাবে স্ট্রাইকিং রেটও দারুণ সচল রেখেছে সে। ক্রিজে ৪৪ ওভার পর্যন্ত অবস্থান করেছে ধাওয়ান। আর এটা অন্য ব্যাটসম্যানদের জন্যই সহজ হয়েছে।’ বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে টানা জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু করেছে ভারত। আর তাতে রোমাঞ্চিত অধিনায়ক ধোনি নিজেও। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলেই ব্যাক টু ব্যাক জয় পাওয়াটা সন্তোষজনক। বিশেষ করে দুই ম্যাচেই আমরা যেভাবে জিতেছি। আমাদের জন্য পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি ম্যাচই গুরুত্বপুর্ণ ছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আমাদের পরিপূর্ণ ব্যাটিং পারফর্মেন্স ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ঠিক তা।’ এদিকে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ভারতের অসাধারণ পারফর্মেন্সে দারুণ তৃপ্ত দেশটির সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীও। তাঁর মতে, দক্ষিণ আফ্রিকার এভাবে ভেঙ্গে পড়ার উদাহরণ দীর্ঘদিন দেখা যায়নি। এ ধরনের পারফর্মেন্সে মহেন্দ্র সিং ধোনির দলও পরবর্তী ম্যাচগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা পেতে পারে। এবারের বিশ্বকাপে স্টার স্পোর্টসের ধারাভাষ্য প্যানেলের অন্যতম সদস্য সৌরভ গাঙ্গুলী। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ভারতের ১৩০ রানের বিশাল জয়ের পর তিনি বলেন, ‘এর আগে কবে যে সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা এই ধরনের পারফর্ম করেছিল আমার মনে নেই।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ান জ্বলে উঠেছিল। যদিওবা ৭৩ রানে থেমে গিয়েছিল তার ইনিংস। পরে বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বাদ পায় তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর রবিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৭ রানের ম্যাচ সেরা ইনিংস উপহার দেন ধাওয়ান। বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ধাওয়ানের এমন ইনিংসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন গাঙ্গুলীÑ ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংসই মূলত ধাওয়ানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল।’ শিখর ধাওয়ানের সপ্তম সেঞ্চুরি ভারতীয় ইনিংসের হাইলাইট হলেও বিরাট কোহলির ৪৬ ও আজিঙ্কে রাহানের ৭৯ রানও দলীয় স্কোর সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করেছে। কিন্তু গাঙ্গুলী তারপরও মনে করেন মিডল অর্ডারের ফর্মে ফেরাটা জরুরী। ‘এ ধরনের টুর্নামেন্টে সবদিক থেকেই নিজেদের মেলে ধরতে হয়। ভারতীয় মিডল অর্ডারে বিশেষ করে সুরেশ রায়না, মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং রবিন্দ্র জাদেজার ফর্মে ফেরাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টিম ইন্ডিয়া মূলত বিরাট কোহলি ও আজিঙ্কে রাহানের ফর্মের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু টুর্নামেন্টে সময় যত গড়াবে দলের মিডল অর্ডারের ওপর চাপ ততই বাড়বে।’ দ্বিতীয় উইকেটে কোহলি ও ধাওয়ানের ১২৭ রানের জুটির ওপর ভর করে ভারত ৭ উইকেটে ৩০৭ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়। দেশটির সাবেক অধিনায়ক গাঙ্গুলী জানান, দলীয় রান ২৫০ পার করার পরই তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন। ৩০৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার জনপ্রিয় ব্যাটিং অর্ডার ৪০.২ ওভারে ১৭৭ রানেই গুঁড়িয়ে যায়। হাশিম আমলা এবং ডি ভিলিয়ার্সের উইকেট দুটি দ্রুত তুলে নেয়ার কারণেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে ধস নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী।
×