ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এ লক্ষ্যে ২৭ ইইউ দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং জয়েন্ট কমিশন কার্যকর ;###;করা হচ্ছে

ইইউ বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য নিতে পারে

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ইইউ বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য নিতে পারে

এম শাহজাহান ॥ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইইউ-বাংলাদেশ জয়েন্ট কমিশন কার্যকর করবে সরকার। বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যেসব বাণিজ্যিক বাধা রয়েছে তা দূর করতে যৌথভাবে কাজ করবে এ কমিশন। এতে বাংলাদেশ থেকে ইইউতে গার্মেন্টসসহ অন্য পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাবে। রফতানি বাণিজ্যে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে জয়েন্ট কমিশন নতুন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে রফতানিকৃত পোশাকের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পরিমাণে পণ্য নেয়ার ঘোষণা দিতে পারে ইইউ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, ভিশন-২১ সামনে রেখে ৫০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানির যে রোডম্যাপ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে ইউরোপের (ইইউ) ২৭টি দেশে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়াতে হবে। যদিও একক বৃহত্তম বাজার হিসেবে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি পণ্য কিনছে ইইউ। পোশাক রফতানির ৬০ ভাগ যাচ্ছে ইইউ’র ২৭ দেশে। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ইইউ’তে রফতানিতে জিএসপি সুবিধা বহাল রয়েছে। এ সুবিধার আওতায় ইউরোপে রফতানি করে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে বাংলাদেশ। এছাড়া ইইউভুক্ত ২৭ দেশে বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদাও আগের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন বেশি। এ কারণে ইইউ’র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের রফতানির সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে ইইউ। ইইউভুক্ত ২৭টি দেশেই বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। তিনি বলেন, জিএসপি সুবিধায় ইইউতে পণ্য রফতানি হলেও স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আরও সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এজন্যই কার্যকর করা হবে ইইউ-বাংলাদেশ জয়েন্ট কমিশন। এ কমিশন কার্যকর করা গেলে রফতানি বাড়ার পাশাপাশি আরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নও বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে চায়। আমরাও চাই। আর এসব কারণেই জয়েন্ট কমিশন কাজ শুরু করেছে। জানা গেছে, ইইউ-বাংলাদেশ জয়েন্ট কমিশন সাবগ্রুপ মিটিং অন ট্রেড রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারির ওই সভায় বাংলাদেশের একক বৃহত্তম রফতানি বাজার ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য ওই সভায় ইইউ’র উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। এদিকে, কিন্তু রানা প্লাজা ধস ও তাজরীন গার্মেন্টসে ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনার পর ইইউ অর্থনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপ দিয়ে আসছিল। এক সময় রফতানিতে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা স্থগিতেরও ঘোষণা দেয় ইইউ। তবে এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। বিদ্যমান সঙ্কট দূর করে ইইউ’র আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। সূত্র মতে, বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয়ান কমিশনের মধ্যে উন্নয়ন, বাণিজ্যিক, পরিবেশ, অর্থনৈতিক, আঞ্চলিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য, সংস্কৃতি ও যোগাযোগ এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে গত ২০০০ সালের ২২ মে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘রুলস অব বিজনেস’ অনুযায়ী যৌথ কমিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করা এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থ বজায় রাখা হয়। গত ২০১০ সালের ৩১ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ কমিশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইউরোপীয় দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে চিংড়ি আমদানি বন্ধ করে দিলেও এ কমিশনে বৈঠকের ফলে আবার তারা বাংলাদেশ থেকে চিংড়ি আমদানি শুরু করে। অপরদিকে এ কমিশনের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের জন্য সে দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা ব্যবস্থা সহজ করা হয়েছে।
×