ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

জনগণের ইচ্ছে ও আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সরকার সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলেন এবং সবাই সাধুবাদ দিয়েছিল। বিশেষত দেশের টিভি দর্শকরা। এই প্রচার মাধ্যমের অনেক গুলোর বল্গাহীন, অনিয়ন্ত্রিত, অদক্ষ, দেশ ও সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড জনগণের অপছন্দনীয়। কারণ এদের ভূমিকা ও কার্যকলাপ গণবিরোধী শুধু নয়, দেশবিরোধীও। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত দেশের মর্যাদাকে ভুলুণ্ঠিত করার জন্য পরাজিত শক্তির পক্ষে এদের অবস্থান দিবালোকের মতো পরিষ্কার। এরা একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সেই নরঘাতকের প্রতি জনসমর্থন আদায়ে ছলচাতুরির আশ্রয় নেয়। কখনও সরাসরি তা করে। বিশেষত টকশোতে এমন কথাবার্তাও হয়, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ্র ও জন্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বর্তমানে পেট্রোলবোমা মারা নাশকতাকারীদের প্রতি তাদের সহানুভূতি জঙ্গীবাদের সমার্থক বলে মনে হয়। মোদ্দা কথা, দেশবাসী চায়, দক্ষ, যোগ্য, মেধাসম্পন্ন, বাংলাদেশের প্রতি অনুরক্ত, সমাজের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সম্পন্নদের সামনে আনার জন্য সম্প্রচার নীতিমালা চালু করা সঙ্গত। যে ক্ষুদ্রগোষ্ঠীর চাপে তথ্য মন্ত্রী, বিষয়টাকে লালফিতায় আটকে রেখেছেন, তা সংগত নয় বরং বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটকে বিচার করে তা চালু করা হোক। সম্প্রচার নীতিমালা না থাকায় সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ প্রশ্রয় পেয়ে আসছে। সরকারের জন্য নয়, দেশ ও জাতির স্বার্থেই নীতিমালাটি কার্যকর করা জরুরী। আর সেজন্য দ্রুত কমিশন গঠন করা হোক। আলী ওয়াজেদ বাবর রোড, ঢাকা। ভাষা আন্দোলনের মাসে সেই ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে, বঙ্গাব্দ ৮ ফাল্গুনে ঢাকার রাজপথে রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিল- রফিক, বীর ভাষা সৈনিকরা। সেদিনই সৃষ্টি হয়েছিল অমর ৮ ফাল্গুনের ইতিহাস ! আমরা যাকে বলি একুশে ফেব্রুয়ারি, সে যাই হোক, ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিটি দিনই ছিল আন্দোলনমুখরÑ সেই আন্দোলনের মুখরতায়ই ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষা স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। সেদিন যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন একটি রাষ্ট্রভাষা পেয়েছি। এই ভাষা আন্দোলনের মাসে তাদের কাছে আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভাষা আন্দোলনের সকল শহীদদের আত্মা শান্তি পাক। দেশ ও মহাবিশ্বের সব মানুষের কল্যাণে। মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম নবাবগঞ্জ। বাংলা ভাষায় কথা বলুন আসুন আমরা সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলি, অন্যকে বলতে উৎসাহ প্রদান করি। ভাষার প্রতি দরদ থাকতে হবে। এর মর্ম অনুধাবন করতে হবে। বাংলা ভাষার জন্য যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে যাঁরা জাতীয় শহীদ মিনারে যান তাঁরা যেন পায়ে জুতা-সেন্ডেল পড়ে না যান। দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করছি, দেশের ব্যাংকগুলো সংবাদপত্রে চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইংরেজীতে প্রকাশ করে থাকেন। নিজ দেশে আঞ্চলিক সভা, সেমিনারে যারা ইংরেজীতে বক্তব্য প্রদান করেন তারা কি বাঙালী? ঢাকা শহরে বহু রেস্তোরাঁ যেগুলোতে ইংরেজী অক্ষরে রেস্টুরেন্ট লেখা দেখতে পাওয়া যায়। প্রেসক্লাব, বার কাউন্সিল, কমিশনার এসিল্যান্ড, ম্যাজিস্ট্রেট এ রকম অসংখ্যা নামÑ পদবি বা সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ইংরেজী চলমানÑ দৃশ্যমান হচ্ছে। সালাম, বরকত ও রফিককে ক’জনে জানে, ক’জনে মনে রাখে। যাঁরা দেশের জন্য রক্ত দিয়ে চিরবিদায় নিয়ে চলে গেলেন। তাঁরা স্মৃতির পাতা হতেও হারিয়ে যাচ্ছেন। ইতিহাস ক’জনে পড়ে। জ্ঞানীজন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও বিপরীত ভাবনা ভাবেন। শহীদ নূর হোসেন চত্বরের তথা জিরো পয়েন্টে ছবি টানিয়ে মাইলফলক ও স্মৃতি ঢেকে রাখা হয়েছে। সোজা পথে হাঁটুন। ভাষার মাসের কথা মনে রেখে বাঁকা পথ পরিহার করুন। বাংলা ভাষা তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। ষড়যন্ত্র পরিহার করুন। এম আলী, শ্রীনগর। ঘুরে দাঁড়াতে হবেই ‘শিক্ষিত ও উন্নত জাতি গঠনে পাঠাভ্যাসের অভ্যাস বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই’ একুশের বইমেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যটি বর্তমান সময়ে অনেক গুরুত্ব বহন করে। বিষয়টি অবশ্যই আনন্দের ও প্রাসঙ্গিক। কেননা সৃজন ও মননশীল বই পড়ার মাধ্যমে আমরা যেমন সত্য ইতিহাস জানতে পারি তেমনই আমাদের মধ্যে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন, যে তরুণ দেশের সত্য ইতিহাস জানার সুযোগ পায়, তারা কখনও দুর্নীতিগ্রস্ত হয় না, সে দেশকে ভালবাসে। আজ যখন আমরা দেখি গণতন্ত্রের নামে, জনগণকে রক্ষার নামে নিরীহ জনগণকে পেট্রোলবোমায় পুড়িয়ে দিচ্ছে, তখন অবশ্যই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে এই কাজগুলো কারা করছে এবং কারা নেপথ্যের কলকাঠি নাড়ছে। বোমাবাজির কারণে ধরা পড়া কিছু তরুণ জানিয়েছে, তারা অর্থের লোভে, তাদের নেতাদের হুকুমে এই অমানবিক কাজটি করছে। এরা যদি দেশকে ভালবাসত, যদি সত্য ইতিহাস জানত, মানুষের জন্য কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে রাজনীতি করত তাহলে অবশ্যই তারা মানুষ পুড়িয়ে মারতে পারত না। শুধু তাই নয় বিএনপি একদিকে নাশকতা চালাচ্ছে, অপরদিকে দেশ যখন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিটি সূচকে উন্নয়ন ঘটিয়েছে তখন বিএনপি-জামায়াত জোটের লবিস্টরা শত কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ভাবমূর্তি বিপন্ন করছে। আমরা যদি সচেতন হতাম তাহলে উপলব্ধি করতে পারতাম দেশকে সহিংসতার আগুনে জ্বালিয়ে, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে লবিস্টদের দিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করত না। তারা আসলে দেশের মঙ্গল চায় না। আমাদের তরুণদের মনে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চা ও দেশের জন্য কার কতটা অবদান, কোন কোন ক্ষেত্রে কে কতটা উন্নয়ন করেছে বা কে দেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেছে সেই তথ্য আমরা নিজেরাই পেতে পারি প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে। কিন্তু আমরা তা করি না। আমরা নেতাদের হীন স্বার্থে, সামান্য অর্থের লোভে বোমাবাজি করি। এর সঙ্গে নৈতিকতার কোন সম্পর্ক নেই। তাই তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। সত্য ও ন্যায়ের পথ বেছে নিয়ে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে হবে। কেউ যেন তরুণদের ব্যবহার না করতে পারে। আমাদের পড়তে হবে, জানতে হবে। তা না হলে আমাদের স্বার্থপর নেতারা আমাদের দিয়ে বোমায় পুড়িয়ে দেবে সারাদেশ। তাই এখন সময় এসেছে তরুণদের ঘুরে দাঁড়ানোর। আবু সুফিয়ান কবির ইকবাল রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। শহীদ মিনারের শৃঙ্খলা ভাষার জন্য রক্তদানের মতো ঘটনা ঘটেছিল এই বাংলাতেই। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদদের ম্মৃতিকে ধরে রাখতে তৈরি করা হয় শহীদ মিনার। বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে শহীদ মিনার এমন এক প্রতীক যার আবেদন কখনও অতিক্রম করা যাবে না। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেডিক্যাল কলেজের পাশে। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই শহীদ মিনার সাজানো হয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়, নিরাপদ রাখা হয়। তারপর শহীদ মিনার গোটা বছর থাকে অরক্ষিত। ময়লা, আবর্জনা, পথশিশুদের আনাগোনা, গরু-ছাগল ও কুকুরের বিচরণ আবার কখনও কখনও দেখা যায় প্রেমিক-প্রেমিকাদের এখানে বসে প্রেম করতে। বিষয়টি অবশ্যই উদ্বেগজনক। যে মিনারটির সঙ্গে আমাদের ভাষা এবং ভাষা শহীদদের সম্পর্ক সেটা কেন অরক্ষিত থাকবে, বিশৃঙ্খলা ও আবর্জনাযুক্ত থাকবে তা আমাদের ভেবে দেখার সময় এসেছে। তাই একে অরক্ষিত না রেখে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা খুব জরুরী। একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই দেশের সর্বস্তরের মানুষ ছুটে যায় শহীদ মিনারে। মিনারটি যেন শুধু একুশে ফেব্রুয়ারিতে সেজে না উঠে, সারা বছর যেন এটি শৃঙ্খলার মধ্যে থাকে, সেই বিষয়টি কি নিশ্চিত করা উচিত নয়। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষকে সাংস্কৃতিক বলয়ের যে পরিকল্পনা, তাকেও দ্রুত দৃষ্টিনন্দন করতে হবে। আর সারা বছর ধরে যেন শহীদ মিনার ও বলয়টিতে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে সেই প্রত্যাশাই করি। নাজনীন বেগম আসাদ এভিনিউ, ঢাকা।
×