ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জঙ্গী দমন জরুরী

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জঙ্গী দমন জরুরী

রাজনৈতিক সঙ্কটকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা জরুরী- গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিতে তা-ই হওয়া উচিত। বর্তমানে গণতন্ত্র রক্ষার নামে যে পেট্রোলবোমার সহিংসতা, নাশকতা ও জঙ্গী তৎপরতা চলছে তাতে সাধারণ মানুষ শঙ্কিত, ভীত ও ক্ষুব্ধ। দেশের মানুষ এসব থেকে চিরতরে পরিত্রাণ চায়। তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জীবনযাপন করতে চায়। চায় শান্তিতে, নির্বিঘেœ ঘুমাতে। কিন্তু সে সুযোগ কই? তারা শঙ্কার মধ্যে দিনযাপন করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও বাংলাদেশে চলতে থাকা সহিংসতা, নাশকতা ও জঙ্গী তৎপরতায় সমানভাবে উদ্বিগ্ন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আহ্বানে হোয়াইট হাউসে সহিংস উগ্রপন্থী নির্মূল বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ওয়াশিংটন যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী। এ সময় তাঁর সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হয়। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ মহাসচিব এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সনকে সহিংসতা বন্ধে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। বান কি মুন ও জন কেরি চলমান সঙ্কট নিরসনে বাংলাদেশকে সহায়তারও প্রস্তাব দেন। বৈঠকে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছাড়া দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যুতে ফলপ্রসূ কথাবার্তা হয়েছে। আরেক খবরে প্রকাশ, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মাদ্রাসায় উদ্ধার অভিযান চালিয়ে র‌্যাব ১২ জঙ্গীকে গ্রেফতার ও বিপুলসংখ্যক জিহাদী ও জঙ্গী বিষয়ক বইয়ের সফ্ট কপি, অডিও এবং ভিডিও উদ্ধার করেছে। নামে মাদ্রাসা হলেও ধর্মীয় শিক্ষার আড়ালে এখানে চলত সশস্ত্র জঙ্গী প্রশিক্ষণ। জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত দরিদ্র যুব সম্প্রদায়কে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের জঙ্গীবাদের তাত্ত্বিক ধারণা দেয়ার পাশাপাশি হাতে-কলমে দেয়া হতো জঙ্গী প্রশিক্ষণ। অত্যাধুনিক একে ৪৭ রাইফেল চালনা থেকে শুরু করে নানা ধরনের তালিম দেয়া হতো তাদের। জিহাদী প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য তাদের মধ্যে দেখানো হতো সিরীয় আইএস জঙ্গী, আল নুসরা ও আল কায়দার প্রশিক্ষণের ভিডিও চিত্র, হামাস ও হিজবুল্লাহর গেরিলা ভিডিও, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ভিডিও। এ ছাড়া এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত এসএসএফ-এর প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, স্নাইপার ট্রেনিংয়ের ভিডিও চিত্র দেখানো হতো। শুধু তাই নয়, কিভাবে বিমান হাইজ্যাক করতে হয় এবং কাউকে অপহরণ করা হয় সেই সম্পর্কিত ভিডিও এখানে দেখানো হতো। দেশে অব্যাহত সহিংসতা, নাশকতা ও জঙ্গী তৎপরতা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়মিত গ্রেফতার অভিযান ও টহলের পাশাপাশি দ্রুতবিচার আইনে গ্রেফতারকৃতদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে সবাই মনে করে। এটাই এখন সময়ের দাবি।
×