ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রুশ টিভিতে ক্ষমতাচ্যুত ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্কল্প

দেশে ফিরবেন ইয়ানুকোভিচ!

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

দেশে ফিরবেন ইয়ানুকোভিচ!

ইউক্রেনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ জনগণের দুঃখকষ্ট লাঘব ও যুদ্ধ বন্ধ করতে সহায়তার জন্য দেশে ফেরার সঙ্কল্প ব্যক্ত করেছেন। ঠিক এক বছর আগে তিনি রাজধানী কিয়েভ থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় স্বেচ্ছানির্বাসনে যাওয়ার পর এ ধরনের বিতর্কিত কথাবার্তা বললেন। একই সময় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহীদের রকেট হামলা শান্তি পরিকল্পনার প্রতি হুমকির সৃষ্টি করেছে। মস্কোতে পুতিনের পক্ষে আয়োজিত সমাবেশে হাজার হাজার লোক যোগ দেয়। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের। ইয়ানুকোভিচ বলেন, আমি দুঃখিত, আমি কোন কিছু করতে পারছি না। যথাসম্ভব আমি ফিরে আসব এবং জনগণের জীবনে স্বস্তি আনতে আমার ক্ষমতার মধ্যে সব কিছুই করব। যুদ্ধ বন্ধ করাই এখন প্রধান কাজ। তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় চ্যানেল ওয়ান টেলিভিশনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে নিজেকে তখনও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলে দাবি করে রাশিয়ার রস্তভ-অন-দনে শহরে দু’বার সংবাদ সম্মেলন করার পর এটি তার প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি। তিনি পলায়ন করার পর ঐ বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ক্রিমিয়াকে তার দেশের ভূখ-ভুক্ত করেন, রুশসমর্থিত বিদ্রোহীরা পূর্ব ইউক্রেনে কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে এবং ঐ সংঘর্ষে অন্তত ৫ হাজার ৬শ’ লোকের মৃত্যু হয়। ইয়ানুকোভিচকে ইউক্রেনের অনেকাংশেই ঘৃণার চোখে দেখা হয়। পশ্চিমাপন্থী প্রতিবাদীরা তাকে দুর্নীতিপরায়ণ ও রাশিয়ার হাতের পুতুল হিসেবে দেখতে এবং তাকে প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে বাধ্য করেছিল। রুশপন্থী পূর্বাঞ্চলের লোকজন তাকে কাপুরুষ বলে মনে করত। একই সময়ে ইউক্রেনে এক শান্তি পরিকল্পনা অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে পড়েছে। শনিবার গোলাবর্ষণ চলার মধ্যেই ইউক্রেনীয় বাহিনী এবং বিদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বেশ কিছুসংখ্যক বন্দী বিনিময় করে। দেশটির পূর্বাঞ্চলে এক সপ্তাহ আগে এক অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়। বিদ্রোহীরা দোনেৎস্ক শহরের কাছে স্তেপন ও ভোদিয়ান গ্রামগুলোর দিকে গ্রাদ রকেট ছোড়ে। এটি এ যুদ্ধের অন্যতম ভীতিকর অস্ত্র। ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী একথা জানায়। আঞ্চলিক পুলিশপ্রধান ভিয়াচেসøাভ আবরোস্কিন জানান, একটি গোলা আভদেয়েভকো শহরের এক কাফেতে আঘাত করলে তিনি ব্যক্তি নিহত হয়। দোনেৎস্ক প্রশাসন জানায়, শনিবার রাতে গোলাবর্ষণে শহরের এক চা কারখানা, এক ব্লক ফ্ল্যাট ও একটি কিন্ডারগার্টেন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্রোহীদের দেবালৎসেভ দখল এবং আশপাশের এলাকার অব্যাহত লড়াই তারা সেস্তিয়া শহরটি বা উপকূলীয় শিল্পাঞ্চল মারিউপল অধিকার করতে পারে বলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সেস্তিয়াতে একটি বিদ্যুতকেন্দ্র অবস্থিত এবং এটি কিছু সময় লুহানস্ক বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ইউক্রেনীয় সামরিক মুখপাত্র শনিবার জানান, মারিউপলের ওপর সম্ভাব্য হামলা রোধের জন্য কিয়েভ প্রস্তুতি নিয়েছে। তিনি ঐ এলাকায় ট্যাঙ্ক, সৈন্য ও ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর দায়ে রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেন। মারিউপলের কাছে গত দু’সপ্তাহ ধরে ট্যাঙ্ক ও কামানের যুদ্ধ হয়। এর আগে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা শিরোকাইন গ্রাম দখলের জন্য ‘পাল্টা হামলা’ শুরু করে। মস্কোতে সরকারপন্থী এক সমাবেশে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। তারা কিয়েভের প্রতি নিন্দাসূচক প্রতীক এবং ‘আমাদের পাশ্চাত্য মতবাদের প্রয়োজন নেই’ এবং ‘পুতিন আমাদের প্রেসিডেন্ট’ লেখা ব্যানার বহন করে। কিয়েভে প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো গত শীতকালে অনুষ্ঠিত ইউরোপপন্থী বিক্ষোভের সময় নিহত ১০০ জনেরও বেশি ব্যক্তির স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংঘাত উস্কে দেয়ার দায়ে রাশিয়াকে দোষারোপ করেন। তিনি মে মাসে ঐ পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। শনিবার একই উপলক্ষে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পূর্ব ইউক্রেনে আটক করা গ্রেনেডলঞ্চার, ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করে। এসব অস্ত্র রাশিয়া থেকে পাঠানো হয়েছিল বলে কিয়েভ দাবি করে।
×