ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একলাখ মোমবাতি!

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

একলাখ মোমবাতি!

আজ একুশ ফেব্রুয়ারি। নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে নড়াইলবাসী অপেক্ষা করে আছেন আজকের সন্ধ্যার মোমবাতি প্রজ্বলনের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার জন্য। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভিক্টোরিয়া কলেজের করিডর মাঠ প্রাঙ্গণ আলোকিত হয়ে উঠবে। মোমবাতিগুলো জ্বলে উঠবে একসঙ্গে। আলোয় ধীরে ধীরে আকার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে নানা বর্ণমালার, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় সংসদ ভবন, শাপলা ফুল আর বিভিন্ন আল্পনার। এর মধ্যেই মাঠের পাশে তৈরি করা মঞ্চে শুরু হয় ভাষার গান আর কবিতা আবৃত্তির। দুই ঘণ্টার এ অনুষ্ঠানের খবর এ জেলা ছাড়িয়ে এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। আয়োজকরা আশা করছেন, এবার একলাখ মোমবাতি জ্বালিয়ে দেশের বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি আর সঙ্গীতশিল্পীদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য হবে অনুষ্ঠানটি। প্রতিবছরই আয়োজনে সেøাগান থাকে ‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করবে একুশের আলো’। একুশে উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান ও সদস্য সচিব কচি খন্দকার জনকণ্ঠকে জানান, আমাদের জ্ঞানের যে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাষ্প, সমাজের কূপমন্ডূকতা; এসব অন্ধকারের বিরুদ্ধে এই একুশের আলো। এ আলো শুধু মাঠের আলো নয়। সামগ্রিক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জেগে ওঠার প্রত্যয় জাগানিয়া আলো। ১৯৯৭ সালে প্রথম কয়েকজন কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মাধ্যমে বাঙালীর সবচেয়ে বড় অহঙ্কারের দিন ২১ ফেব্রুয়ারিকে পালন শুরু হয়। তাঁরা সেদিন ভেবেছিলেন মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে শহীদদের স্মরণের কথা। কিন্তু মোমবাতি জ্বালিয়ে তো দেশের বিভিন্নস্থানে বিশেষ করে অনেক শহীদ মিনারে পালন করা হয়। তাহলে? যেই ভাবা সেই কাজ; বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে এক হতে থাকলেনÑ সেদিনের সাংস্কৃতিক কর্মী আব্দুর রশীদ মন্নু, শরফুল আলম লিটু, শামীমুল ইসলাম টুলু, সৈয়দ ওসমান, লিজা, শান্ত. সংগঠক ওমর ফারুক, মলয় কু-সহ অনেকে। যুক্ত হলেন প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান। তাঁদের অনুপ্রেরণা যোগালেন তখনকার গণসাহায্য সংস্থার কর্মকর্তা আজকের নাট্য নির্মাতা কচি খন্দকার। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিলেন এই আয়োজনের স্থান হবে ভিক্টোরিয়া কলেজ মাঠ। প্রথমবার শুরু হয়েছিল ২০ হাজার মোমবাতি দিয়ে। কয়েক শ’ স্বেচ্ছাসেবী নানা আল্পনায় সাজিয়েছিলেন মাঠটি। সন্ধ্যার পর মোমবাতির আলো জ্বালিয়ে উদ্বোধন করলেন বাংলার সূর্যসন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা। রিফাত-বিন-ত্বহা, নড়াইল থেকে।
×