ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রেকর্ড জয়ে শেষ আটে রিয়ালের এক পা

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রেকর্ড জয়ে শেষ আটে রিয়ালের এক পা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েই স্বরূপে ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সেই সঙ্গে অফফর্ম কাটিয়েছেন সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও। বুধবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে অতিথি রিয়াল মাদ্রিদ ২-০ গোলে পরাজিত করে স্বাগতিক জার্মান ক্লাব শালকে জিরো ফোরকে। এই জয়ে বেয়ার্ন মিউনিখের টানা ১০ জয়ের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে গ্যালাক্টিকোরা। আর এক গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন রোনাল্ডো। দারুণ জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালেও এক পা দিয়ে রাখল রিয়াল। আগামী ১০ মার্চ নিজেদের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ খেলবে কার্লো আনচেলত্তির দল। পরশু রাতে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগের এফসি বাসেল ও এফসি পোর্তোর মধ্যকার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। ম্যাচের ১১ মিনিটে গঞ্জালেজের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক সুইস ক্লাব বাসেল। কিন্তু ৭৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে পর্তুগীজ ক্লাব পোর্তোকে সমতায় ফেরান ড্যানিলো। নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলটিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে কোপা ডেল’রে থেকে ছিটকে পড়ার পর তাদেরই কাছে লা লিগায় ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয় রিয়াল। সবমিলিয়ে বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল গ্যালাক্টিকোরা। তবে কোচ কার্লো আনচেলত্তির আশা ছিল, চ্যাম্পিয়ন্স লীগে চিরচেনা রূপে ফিরবে তার দল। কোচকে হতাশ করেননি রোনাল্ডো, বেল, বেনজেমারা। দাপুটে জয়ে আসরের শিরোপা ধরে রাখার দৌড়ে আরেক ধাপ এগিয়েছে রিয়াল। এই জয়ে প্রতিযোগিতায় টানা জয়ের রেকর্ডও ছুঁয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শালকেকে হারিয়ে ২০১৩ সালে বেয়ার্ন মিউনিখের গড়া টানা ১০ জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করেছে রিয়াল। তুলনামূলক সহজ জয় পেলেও শুরুতে অবশ্য স্বাগতিকদের কঠিন পরীক্ষায় পড়ে অতিথিরা। বল দখলে রাখতেই হিমশিম খেতে হচ্ছিল তাদের। প্রথম ২৫ মিনিটে ভাল কোন আক্রমণই করতে পারেননি রোনাল্ডো, বেনজেমারা। তবে এরপরই খোলস থেকে বেরিয়ে আসে রিয়াল। ২৬ মিনিটে এগিয়ে যায় রোনাল্ডোর গোলে। ডান দিক থেকে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার দানি কারভ্যাজালের দারুণ ক্রসে দুর্দান্ত হেডে বল জালে জড়ান বর্তমান ফিফা সেরা ফুটবলার। এটা ইউরোপের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্টে রিয়ালের হয়ে ৫৮ ম্যাচে রোনাল্ডোর ৫৮তম গোল। এই গোল করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বোচ্চ গোলের দৌড়ে মেসির ঠিক অবস্থান করছেন সি আর সেভেন। বর্তমানে রোনাল্ডোর গোলসংখ্যা ৭৩। ৭৪ গোল করে লীগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা বার্সিলোনা জাদুকর মেসি। মৌসুমের শুরুতে কিন্তু সর্বোচ্চ গোলের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সি আর সেভেনই। কিন্তু বার্সা ডায়মন্ড হ্যাটট্রিক করে অনেকটা আকস্মিকভাবেই সবার উপরে চলে যান। তবে দু’জনইকে রাউল গঞ্জালেসকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় এখন শীর্ষ গোলদাতার লড়াইটি দারুণভাবে জমে উঠেছে মেসি ও রোনাল্ডোর মধ্যে। বিরতির পর শুরুতে পাল্টা আক্রমণে অতিথিদের ভালই জবাব দিতে থাকে শালকে। প্রথম দশ মিনিট দারুণ গোছানো আক্রমণে দুটি গোলের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি শালকে। ৭২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন রিয়াল মিডফিল্ডার ইস্কো। কিন্তু তার নেয়া জোরালো শট বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। দুই মিনিট পরেই ডি বক্সের বেশ খানিকটা বাইরে থেকে নেয়া শালকের জার্মান স্ট্রাইকার ফেলিক্স প্লাটের শট বারে লাগলে বেঁচে যায় রিয়াল। ফিরতি বল থেকেও গোল পেতে পারত স্বাগতিকরা, কিন্তু জাপানের ডিফেন্ডার আটসুটো উচিডা ঠিকমতো শট নিতে ব্যর্থ হন। এরপর ৭৯ মিনিটে মার্সেলো ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়ালকে গুরুত্বপূর্ণ জয় এনে দেন। রোনাল্ডোর বাড়ানো বল নিয়ে ডি বক্সের বাইরে কিছুটা আড়াআড়ি দৌড়ে ডানপায়ের কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেন, ম্যাচটা সহজ ছিল না। এই জয়ে খুশি হওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা, রোনাল্ডো স্বরূপে ফিরেছে। যা আমাদের জন্য খুব জরুরী। আশা করছি পরের ম্যাচগুলোতে সে আরও ভাল করবে।
×