ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জয়ের জন্য মরিয়া পাক-উইন্ডিজ দু’দলই

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জয়ের জন্য মরিয়া পাক-উইন্ডিজ দু’দলই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরে গেছে দু’দলই। বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছে পরাজয় দিয়ে। তবে এবার একটি দল জয়ের ধারায় ফিরবে কোন কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত বা টাই না হয়ে গেলে। প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে স্নায়ু চাপের ম্যাচে ৭৬ রানে হেরে গিয়েছিল পাকিস্তান দল। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের পচা শামুকে পা কেটে হয়েছে শুরু। আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ আয়ারল্যান্ডের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছে তারা। এবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে লড়াই এ পরাজিত দু’দলের। বাংলাদেশ সময় অনুসারে শনিবার ভোর ৪টায় (শুক্রবার দিবাগত রাত) ম্যাচটি শুরু হবে। বোলিং এ্যাকশনে ত্রুটি থাকায় অন্যতম স্পিন স্তম্ভ সাঈদ আজমল এবং ইনজুরির কারণে অভিজ্ঞ পেসার উমর গুলকে ছাড়াই দল ঘোষণা করতে হয়েছে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে অপরিহার্য ওপেনার মোহাম্মদ হাফিজ ছিটকে গেছেন ইনজুরির কারণে। ছিটকে যান নির্ভরযোগ্য পেসার জুনাইদ খান। তাই পাকিস্তান দলের শক্তিমত্তায় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সেটার ছাপ পড়েছে প্রথম ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই। আর ক্যারিবীয়দের সমস্যা নিজেদের পারফর্মেন্স। সম্প্রতি দলটি একেবারেই ভাল অবস্থায় নেই। নির্ভরযোগ্য স্পিনার সুনিল নারাইনাকে নেয়া যায়নি বোলিং এ্যাকশনে খুঁত থাকায় আর বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে ছিটকে গেছেন দুই অন্যতম অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো ও কাইরন পোলার্ডকে। এসব কারণে নিজেদের সামর্থ্য অনুসারে দলটি মাঠে মেলে ধরতে পারছে না নিজেদের। সেই দৈন্যতা ফুটে উঠেছে এবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে। শক্তিমত্তায় অনেক এগিয়ে থাকলেও পরাজয় বরণ করতে হয়েছে আইরিশদের কাছে। তবে ক্যারিবীয়দের জন্য বড় সুবিধা হচ্ছে নিউজিল্যান্ডে থেকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামতে পারবে দলটি। আগের ম্যাচটি নেলসনে খেলে তারা পাকদের জন্য অপেক্ষা করেছে। পাকিস্তান প্রথম ম্যাচটি অস্ট্রেলিয়ায় এ্যাডিলেডে খেলার পর নিউজিল্যান্ডে এসেছে ক্যারিবীয়দের মুখোমুখি হতে। এবার দুয়েকটি পরিবর্তন এনে এ ম্যাচে নামতে পারে পাকরা। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে কিছুটা ব্যতিক্রমী কৌশল খাটিয়েছিল পাক শিবির। অভিজ্ঞ ইউনুস খানকে ইনিংস উদ্বোধন করিয়েছিল। তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। সম্প্রতি এ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ফর্মহীনতায় ভুগছেন। সে কারণে তার বদলে ওপেনার নাসির জামশেদকে একাদশে রাখা হতে পারে। তিনি আহমেদ শেহজাদের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধনের দায়িত্ব পালন করবেন। আর উমর আকমল উইকেটের পেছনে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেননি। কোন রান না করেই ফিরে গেছেন। তার পরিবর্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদ একাদশে জায়গা করে নিতে পারেন। এখন পর্যন্ত এ দু’জনই বিশ্বকাপ অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ ম্যাচেও বিধ্বংসী ওপেনার ক্রিস গেইলের জ্বলে ওঠার ওপর নির্ভর করতে হবে। আগের ম্যাচে টপঅর্ডাররা একেবারেই ব্যর্থ ছিলেন। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮৭ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছিল উইন্ডিজরা। তবে মিডলঅর্ডারে নেমে লেন্ডল সিমন্স শতক হাঁকিয়েছেন এবং ড্যারেন সামি দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। সে কারণে বড় সংগ্রহও পেয়েছিল ক্যারিবীয়রা। কিন্তু জিততে পারেনি বোলিং দুর্বলতা ও ফিল্ডিং দুর্দশার কারণে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিততে হলে এ দুটি বিষয় উতরে যেতে হবে ক্যারিবীয়দের। সেই সঙ্গে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মারলন স্যামুয়েলসের ব্যাট থেকেও রান আসা জরুরী। বিশ্বকাপে বরাবরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পারফর্মেন্স ভাল। ১৯৯৬ ও ২০০৩ বিশ্বকাপ ব্যতীত বাকি সব আসরেই মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। মোট ৯ বারের মোকাবেলায় ৬ বারই পাকিস্তানকে হারিয়েছে উইন্ডিজ শিবির। তবে সর্বশেষ গত বিশ্বকাপে ক্যারিবীয়দের ১০ উইকেটে বিধ্বস্ত করেছিল পাকরা। সেটাই তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত দু’দলের সাক্ষাত হয়েছে ১২৭ বার। সে পরিসংখ্যানেও এগিয়ে ক্যারিবীয়রা। ৬৮ বার জয় দেখেছে তারা আর পাকরা জিতেছে ৫৫ ম্যাচ। কিন্তু সর্বশেষ ৫ ম্যাচে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সিরিজ জিতে ফেরা পাকিস্তানের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে এটিও। আর এসবকে পেছনে ফেলে জয় ছিনিয়ে নেয়াটা বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য।
×