ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

উবাচ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে আইএসের যোগসূত্র আছে ॥ প্রধানমন্ত্রী স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্দোলনের নামে দেড় মাস ধরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বীভৎসতায় সামনে চলে এসেছে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যোগসূত্রের বিষয়টি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আইএস যা করছে, তা নৃশংস ও ভয়াবহ। আর এ দেশে খালেদা জিয়া যেভাবে মানুষ হত্যা করছেন, মনে হয় তাঁর সঙ্গে আইএসের যোগসূত্র রয়েছে। এদের সবার কর্মকা- একসূত্রে গাঁথা। তবে নৃশংসভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার অবশ্যই বাংলার মাটিতে হবে। বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন। গোলাম দস্তগীর গাজীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াসহ জঙ্গী-সন্ত্রাসী ও বোমাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে যা যা পদক্ষেপ নেয়া দরকার, সরকার তা নেবে। কেননা, ইস্যুবিহীন আন্দোলনের নামে বীভৎস কায়দায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যার দায় খালেদা জিয়া কোনভাবেই এড়াতে পারেন না। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা মানুষ খুনের মতো জঘন্য কাজ করে, তাদের শাস্তি হবেই। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনের আগে বাস, ট্রাক, ট্রেনে আগুন দিয়েছিল। এখন এসবের পাশাপাশি মানুষ পুড়িয়ে মারছে, হরতাল দিচ্ছে। হরতাল কোথায় হচ্ছে? রাস্তায় যানজট। তবুও মানুষ আতঙ্কে। কারণ তিনি মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। তিনি এখন মানুষ মারার মোহে মোহিত, বিভোর। হুকুমের পর হুকুম দিয়ে যাচ্ছেন। একের পর এক বীভৎস ঘটনা ঘটাচ্ছেন। সংসদ নেতা বলেন, এভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা ও ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত করে বিএনপি নেত্রী কী অর্জন করছেন? মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন করছেন কেন? এর জবাব একদিন তাকে দিতে হবে। পঁচাত্তরে জাতির পিতা হত্যার পর জিয়াউর রহমান সামরিক শাসন জারি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে বিএনপির জন্ম। হাইকোর্ট থেকে এই ক্ষমতা দখলকে এরই মধ্যে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই রায়ের কার্যকারিতা থাকলে জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বিএনপি নামের রাজনৈতিক দলের কোন অস্তিত্বই থাকে না। তবে প্রচলিত বিধিবিধান এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অনুযায়ী দল হিসেবে বিএনপি টিকে রয়েছে। জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরকে এ দেশে অনেক আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর নেতাদের গ্রেফতার ও মামলাও করা হয়েছে। এরা যাতে দেশে কোন নাশকতা চালাতে না পারে, তার পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াত যখনই এ দেশে আইএসের মতো নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করেছে, তখনই হিযবুত তাহরীরের মতো জঙ্গী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডে ইন্ধন পাচ্ছে। খালেদা জিয়ার ছত্রছায়াতেই হিযবুত তাহরীর তাদের কর্মকাণ্ড চালাতে সাহস পাচ্ছে। রফিক-উল হকের প্রশ্ন স্টাফ রিপোর্টার ॥ চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অফিসে খাবার নিতে দিচ্ছে না সরকার- বিএনপির এমন বিভ্রান্তিকর প্রচারণাকে রীতিমতো একহাত নিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। রফিক-উল হক বলেছেন, কার্যালয়ে খাবার না গেলে তিনি (খালেদা জিয়া) বেঁচে আছেন কিভাবে? আর তিনি বাসা ছেড়ে অফিসে আছেন কেন তাও বুঝতে পারছি না। গেল রবিবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে নিজ চেম্বারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর তাকে সমবেদনা জানাতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গেট থেকে ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিশিষ্ট এ আইনজ্ঞ। বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে ফিরে যেতে হলো, এটা খুবই দুঃখজনক। যে ঘটনা ঘটল তা প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্লাস-প্লাস-প্লাস পয়েন্ট। আওয়ামী লীগ সম্পর্কেও জনমনে ধারণা আরও ভাল হলো। প্রধানমন্ত্রী যে সত্যিকারের একজন মা, একজন বোন- খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে তিনি তা প্রমাণ করলেন। এখন আমি বলব-সংলাপ হবে না, কিসের সংলাপ! লাত্থি মারি সংলাপের। যে ভদ্রমহিলা এ ধরনের আচরণ করতে পারলেন, তাঁর সঙ্গে কিসের সংলাপ?’ সর্বশেষ রবিবার খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে খাবার যাওয়া না যাওয়া নিয়ে আরেক দফা বোমা ফাটালেন তিনি। সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিএনপির এ অভিযোগটির বিষয়ে তাঁর মতামত। উত্তরে বলেন, কার্যালয়ে খাবার না গেলে তিনি (খালেদা জিয়া) বেঁচে আছেন কিভাবে? দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রফিক-উল হক বলেন, বর্তমান অবস্থায় সরকারপক্ষ কোন সমস্যা মনে না করলেও আমার কাছে সমস্যা মনে হচ্ছে। আমরা পহেলা ফাল্গুন পালন করছি। আবার ভ্যালেন্টাইন ডেও পালন করছি। মানুষও পোড়াচ্ছি। এগুলোতো একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস অবরোধ হরতাল এগুলো বন্ধ করতে হবে। এগুলো বন্ধ না করলে সমস্যার সমাধান হবে না। বিএনপির টার্গেট? স্টাফ রিপোর্টার ॥ হুটহাট করেই আন্দোলনের হার্ডলাইনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। মাঠে নেতাকর্মী না থাকলেও সহিংস আন্দোলন থেকে পিছু হটছেন না খালেদা জিয়া। তেমনি কর্মসূচীর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে জামায়াত-শিবির দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে। পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহন লক্ষ্য করে ছোড়া হচ্ছে পেট্রোলবোমা। আন্দোলনের নামে জীবন্ত মানুষকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। যদিও তাদের এই সহিংস আন্দোলন নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহল থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন বিএনপির লক্ষ্য নিয়ে? অর্থাৎ কী চায় বিএনপি। সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচন নিয়েও আগ্রহ নেই জামায়াত ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গীগোষ্টীর পৃষ্ঠপোষক বিএনপির। দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য থেকেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, যেখানে জাতীয় নির্বাচন চাচ্ছেন দেশের মানুষ, সেখানে এই মুহূর্তে ডিসিসি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাছাড়া বিএনপির মূল টার্গেট হচ্ছে মধ্যবর্তী জাতীয় নির্বাচন, সিটি নির্বাচন নয়। এ দাবিতে আন্দোলন চলছে, হরতাল-অবরোধ চলছে। এটাকে সরকার পাশ কাটতে চাইলে তা সফল হবে না। প্রশ্ন হলো- গণতান্ত্রিক উপায়ে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত সরকারকে নিজের ইচ্ছামতো সরিয়ে দেবেন; বিষয়টি অনেকটা মামার বাড়ির আবদারের মতো। তাছাড়া সহিংস কর্মকা-, মানুষ হত্যা চালিয়ে গণতন্ত্র ও জনস্বার্থ কায়েমের বিষয়টিও দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট। তাইতো আন্তর্জাতিক মহল থেকেও সহিংসতা বন্ধ করা ও জামায়াতকে বাদ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে বিএনপিকে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার কৌশল হিসেবে সরকার সিটি নির্বাচনের কথা বলছে। এখন আমরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। সিটি নির্বাচন নয়, দেশে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে ভাবার সময় নেই। কোন ষড়যন্ত্র আমাদের আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ফেরাতে পারবে না।
×