ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেজার বৈঠকে অনুমোদন

বিনিয়োগে গতি আনতে নতুন ১৭ অর্থনৈতিক অঞ্চল

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিনিয়োগে গতি আনতে নতুন ১৭ অর্থনৈতিক অঞ্চল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল করতে দেশে ১৭টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। এতে নরসিংদীতে একটি ও মুন্সীগঞ্জে দুটি বেসরকারী অর্থনৈতিক অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে শ্রীলপুর ও গহিরা অর্থনৈতিক অঞ্চল দুটি জাপান ও চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্দিষ্ট থাকবে। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেজার পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বেজার চেয়ারম্যান এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। জানা যায়, সারাদেশে ১৭টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেয়ার পাশাপাশি বৈঠকে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ অনুমোদন করা হয়েছে। প্রত্যেক অর্থনৈতিক অঞ্চলেই বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস রাখারও নির্দেশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে চীন ও জাপান বাংলাদেশে ব্যাপক বিনিয়োগে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এজন্য এ দুটি দেশই পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রদানের প্রস্তাব করেছে। তাদের সেই প্রস্তাব বিবেচনায় বৈঠকে জি-টু-জি ভিত্তিতে জাপান ও চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার জায়গা দেবে সরকার। আর ওই দেশ তা উন্নয়ন করে শিল্পাঞ্চল গঠন করবে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ১৫ বছরে এক শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করে বছরে ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করা। জানা যায়, জাপানী বিনিয়োগকারীদের জন্য গাজীপুরের শ্রীপুরে, কক্সবাজারে পর্যটনের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, নরসিংদীতে বেসরকারী অর্থনৈতিক অঞ্চল, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চীনের জন্য, ঢাকার কেরানীগঞ্জে, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জে, ভোলায়, আশুগঞ্জে, মুন্সীগঞ্জে আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, পঞ্চগড়ে, মুন্সীগঞ্জে তৈরি পোশাক খাতের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, নীলফামারী, কুষ্টিয়া ও আগৈলঝাড়ায় এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো হবে। এছাড়া বৈঠকে অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন-২০১০ এর আওতায় বেজা বোর্ড গঠন করা হয়। বৈঠকের শুরুতে বেজার নির্বাহী বোর্ডের চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি এ পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় বোর্ডের সাফল্যের বিষয় সভায় অবহিত করেন। তিনি জানান, ভিশন-২০২১ ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেগবান করা, দারিদ্র্য বিমোচন, শিল্পায়ন ও দেশের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১০ সালে বেসরকারী অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন প্রণয়ন করা হয়। এর আগে কম্পট্রোলার এ্যান্ড অডিটর জেনারেল মাসুদ আহমেদ ১৪টি বার্ষিক প্রতিবেদন, একটি বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদন, ছয়টি উপযোজন হিসাব প্রতিবেদন, দুটি আর্থিক হিসাব প্রতিবেদনসহ মোট ২৩টি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, পূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বেসরকারী বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
×