ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অঘটন নয়-পোর্টারফিল্ড, ক্ষিপ্ত সামি!

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

অঘটন নয়-পোর্টারফিল্ড, ক্ষিপ্ত সামি!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুর্দান্তভাবে বিশ্বকাপ শুরু করেছে আয়ারল্যান্ড। তবে এটিকে অবিশ্বাস্য বলা যাবে না। গত বিশ্বকাপেও ইংল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করেছিল দলটি। এবার তারা নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ক্রিকেট পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে। কাগজ-কলমের হিসেব অনুসারে এটিকে অঘটন মনে করা হলেও আইরিশ অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড তা মানতে নারাজ। তিনি দাবি করেন আয়ারল্যান্ড দলকে মর্যাদার সঙ্গেই এখন থেকে ক্রিকেট বিশ্বকে বিবেচনা করতে হবে। অপরদিকে, এমন হারের পর দারুণ ক্ষেপেছেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার ড্যারেন সামি। তিনি মনে করেন তাঁর সতীর্থদের দ্বিতীয়বার এ ধরনের কোন ভাগ্যবরণ করা উচিত হবে না। বোলারদের বাজে বোলিংকেই দুষেছেন সাবেক ক্যারিবীয় অধিনায়ক। বিশ্বকাপের শুরুটাই হোঁচট খেয়ে। তিন শতাধিক রান করার পরও আইরিশদের সেটা তাড়া করার ক্ষেত্রে কোন বাধা হতে পারেনি ক্যারিবীয় বোলাররা। খুব সহজেই যেন স্বাভাবিকভাবে জয়টা ছিনিয়ে নিয়েছে ম্যাচের ফেবারিট হিসেবে আইরিশরা। এ বিষয়ে সামি বলেন, ‘আমরা যদি এভাবে খেলা চালিয়ে যেতে থাকি তবে এটা নিশ্চিত যে বেশিদিন টুর্নামেন্টে টিকতে পারব না।’ উইন্ডিজ বোলাররা খুবই বাজে বোলিং করেছেন। এত রান তোলার পরও হারের পেছনে এছাড়া অন্য কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না সামি। মাঠে ব্যবহৃত মাইক্রোফোনেও নিজের ক্ষুব্ধতা ঢাকতে পারেননি সামি, বেশ বাজেভাবে কথা বলেছেন। সে জন্য সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। সামি বলেন, ‘যখন কোনকিছু নিজেদের স্বাভাবিকপন্থায় চলে না, তখনই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টকর হয়ে ওঠে। তবে দলগতভাবে একটা বিশ্বাস এবং আস্থার পরিস্থিতিটা তৈরি হওয়া খুব জরুরী। আমাদের কিছু কিছু বিষয়ে একটা উদ্বুদ্ধ হওয়ার মতো কিছু একটা প্রয়োজন। আর সেটা খুব দ্রুতই হওয়া দরকার।’ আইরিশদের বিরুদ্ধে ব্যাটিংয়েও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। শেষদিকে সামির দুর্দান্ত ইনিংসের কারণে তিন শতাধিক রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় ক্যারিবীয়রা। ৬৭ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৮৯ রান করার পথে তিনি ষষ্ঠ উইকেটে ১৫৪ রানের জুটি গড়েন লেন্ডল সিমন্সের সঙ্গে। এর আগ পর্যন্ত ক্যারিবীয়দের অবস্থা ছিল শোচনীয়। মাত্র ৮৭ রানেই হারিয়ে ফেলেছিল ৫ উইকেট। তবে সামি-সিমন্সের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেটে ৩০৪ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটা ছুঁতে বিন্দুমাত্র সমস্যায় পড়েনি আইরিশরা। ২৫ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে ৩০৭ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়ে সামি বলেন, ‘ব্যাটিং পারফর্মেন্সটা সত্যিই খুব বড় অনুপ্রেরণার। সেটা বোলারদের জন্য বড় চাপমুক্তির বিষয় হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা মাঠে একেবারেই বিপর্যস্ত ছিলাম বোলিংয়ের সময়।’ এমনভাবে জয়টা এসেছে যে সেটাকে আর অঘটন বলাও যাচ্ছে না। তবে অনেক বড় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশকে হারিয়ে দেয়ার কারণে আইরিশদের জয়টাকে কাগজ-কলমের হিসেবে অঘটন হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান ১২ এবং সহযোগী সদস্য দেশ। তবে এমনটা মানতে নারাজ আইরিশ অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড। তিনি বলেন, ‘আমি এটাকে কোনভাবেই অঘটন হিসেবে দেখছি না। আমরা এ ম্যাচে জয়ের প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলাম। আমরা আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে ম্যাচে নামার আগে জয় নিয়েই নামতে চেয়েছিলাম। সেখানে জিতে আবার আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও তেমন প্রত্যাশা নিয়েই নামতে চাই।’ প্রথম ম্যাচেই জয়ের কারণে ‘বি’ গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথ যেন আগেভাগেই পরিষ্কার হয়ে উঠল আয়ারল্যান্ডের জন্য। কারণ জিম্বাবুইয়ে, আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে জয় পেলে সেটা বেশ সহজ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে পোর্টারফিল্ড বলেন, ‘অঘটন কথাটা তখনই আসে যখন কোন আইসিসির সহযোগী দেশ পূর্ণ সদস্যকে হারিয়ে দেয়। কিন্তু আমি বুঝি না এভাবে কেন দেখা হয় বিষয়টাকে। অন্য কোন ক্রীড়ায় এমন বিষয় নেই। ক্রিকেটে কেন রাখা হয়েছে আমার বোধগম্য নয়।’
×