ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কিউইদের এগিয়ে যাওয়ার লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

কিউইদের এগিয়ে যাওয়ার লড়াই আজ

জিএম মোস্তফা ॥ বিশ্বকাপের শুরুটা দারুণভাবেই করেছে নিউজিল্যান্ড। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী শ্রীলঙ্কাকে হারায় তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে আজ কিউইদের প্রতিপক্ষ তুলনামূলকভাবে খর্বশক্তির দল স্কটল্যান্ড। তারপরও স্কটিশদের নিয়ে বেশ সতর্ক এবারের বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক নিউজিল্যান্ড। এ বিষয়ে দেশটির সাবেক অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং বলেন, ‘এই ম্যাচটা হবে কলার বাকলের মতো। প্রতিপক্ষকে সুযোগ দিলেই পা পিছলে যাওয়ার মতোই অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তাই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে সম্পূর্ণরূপে মনোযোগী হতে হবে। যেমনটা খেলেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আমি মনে করি স্কটিশদের বিপক্ষে হার এড়াতে ঠিক এমনটাই খেলা উচিত তাদের।’ প্রতিপক্ষক স্কটল্যান্ডকে সমীহ করছেন নিউজিল্যান্ডের কোচ মাইক হেসনও। এ বিষয়ে দেশটির অভিজ্ঞ কোচ মাইক হেসন বলেন, ‘আমি মনে করি বিশ্বকাপে অঘটনের অনেক ঘটনাই ঘটবে। যদি কোন দল প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নেয় তাহলে তার পরিণতিটাও হবে ভয়ানক। তাই আমরা স্কটল্যান্ডকে ঠিক সেভাবেই দেখব যেমনটি অন্যান্য দলের সময় দেখি।’ ১৯৯৯ এবং ২০০৭ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছিল স্কটল্যান্ড। গত আট বছরের মধ্যে এবারই প্রথম বিশ্বমঞ্চে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে তারা। স্কটিশরা গত বছরের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল। সেই ম্যাচে মাত্র ১ রানে হেরেছিল স্কটল্যান্ড। আর সেই ম্যাচেরই আটজন খেলোয়াড় এবার বিশ্বকাপে খেলছে ব্ল্যাক ক্যাপসদের। তাই কিউইদের হারানোরও স্বপ্ন দেখছে স্কটল্যান্ড। এ বিষয়ে দেশটির অধিনায়ক প্রিস্টন মমসেন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচের ভিডিওটা আজ (সোমবার) সকালেও আমরা দেখেছি এবং সেই ম্যাচ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। সেই ম্যাচে তো জয়ের অনেক কাছেই চলে গিয়েছিলাম আমরা। এমনকি আমাদেরই জেতা উচিত ছিল। সে ম্যাচের অনেক ক্রিকেটার আজকের ম্যাচেও থাকছে। আশা করি সেই ম্যাচের মতো আজও একই পারফর্মেন্স উপহার দিতে পারব আমরা। তবে নিউজিল্যান্ড অবশ্যই শক্তিশালী এবং যোগ্যতাসম্পন্ন একটি দলÑ এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। আমি আশা করি আমরা আমাদের সঠিক খেলাটা খেলতে পারব।’ বিশ্বকাপের আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল স্কটল্যান্ড। সেখানেও তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে আইসিসির সহযোগী দেশটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩১০ রান করতে সক্ষম হয়েছিল তারা। শুধু তাই নয় আরেক সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ডকে তো তারা ১৭৯ রানের বড় হারের লজ্জা উপহার দেয়। যে আয়ারল্যান্ড সোমবার শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করে। এবারের বিশ্বকাপে মোট ১৪টি দল পারফর্মেন্স করছে। তবে ভবিষ্যতে বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে আইসিসি। যার কঠোর সমালোচনা করেছেন স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক প্রিস্টন মমসেন। তাঁর মতে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা বিশ্বব্যপী ক্রিকেটের অগ্রসরকে পিছিয়ে দেবে। বিশ্বকাপে এবারের ফরম্যাট অনুযায়ী ১৪টি দলকে দুই গ্রুপে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ চারটি করে দল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে। কিন্তু সমালোচকদের মতে এই ফরম্যাটের কারণে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ আটে থাকা দলগুলোকেই কার্যত পরের রাউন্ডে খেলার একটি দারুণ সুযোগ করে দিয়েছে আইসিসি। এক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত ছোট দল বা আইসিসির সহযোগী দলগুলোর পরের রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে ২০১৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে শুধুমাত্র ১০টি দেশ খেলতে পারবে। ওই সময় বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে থাকা শীর্ষ আটটি দেশের সঙ্গে আরও যোগ হবে বাছাইপর্ব থেকে উঠে আসা সেরা দুটি দল। টুর্নামেন্ট শুরুর এক বছর আগে বাছাইপর্ব শুরু হবে। ফলে তখনও দ্বিতীয়সারির সহযোগী দেশ কিংবা স্কটল্যান্ডের মতো টেস্ট ঘরানার বাইরের দলগুলোর জন্য বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে। কিন্তু মমসেনের মতে দলের সংখ্যা কমিয়ে কার্যত আইসিসি ক্রিকেটকে অবুদ্ধ করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, আশা করছি সবাই বুঝতে পারবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কোনমতেই বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য সুখকর কিছু বয়ে আনবে না। বিশ্বব্যাপী একটি ইভেন্টের কারণেই বিশ্বকাপকে আমরা এ নামে ডেকে থাকি। যে সমস্ত দল বড় দলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চায় কিংবা নিজ দেশকে আরও এগিয়ে নিতে চায়, সেই সুযোগ নষ্ট করে দিলে মূলত তা কোন কাজে আসবে না। তবে সবকিছুর পরেও বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেরা খেলাটাই উপহার দিয়ে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে চান মমসেন।
×