স্টাফ রিপোর্টার ॥ ওয়াশিংটনে আগামী বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। হোয়াইট হাউসের আয়োজনে এক সম্মেলনের পাশাপাশি দুই দেশের মন্ত্রীর এ বৈঠক হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউসের এই সম্মেলনে অংশ নিতে জন কেরির আমন্ত্রণে মঙ্গলবার ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে মাহমুদ আলীর। সাম্প্রতিককালে অটোয়া, সিডনি ও প্যারিসে উগ্রপন্থী হামলার প্রেক্ষাপটে বুধ ও বৃহস্পতিবার এই সম্মেলন হচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ছাড়াও অর্ধশতাধিক দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপিহীন নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এটিই হবে যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।
দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো দুই মন্ত্রীর আলোচনায় আসবে বলে আশা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর গ্রামীণ ব্যাংকের সংস্কারসহ কয়েকটি বিষয়ে মতবিরোধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। এরপর বিএনপির বর্জনের মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বক্তব্যে সেই তিক্ততার রেশ পাওয়া যায়।
তবে গত ছয় বছরেই নিয়মিত সংলাপের মাধ্যমে দুই দেশের অংশীদারিত্ব একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। ঢাকায় দায়িত্ব পালন শেষে গত ডিসেম্বরে বিদায়ের সময় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজেনা বলে যান, দুই দেশের এই সম্পর্ক ‘যে কোন ব্যক্তির’ চেয়ে বড়।
এই প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিকভাবেই কেরি-মাহমুদ আলী বৈঠকের দিকে বিশ্লেষকদের নজর থাকবে। কেননা যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গত নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেনি, আর সেই নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি নতুন করে ভোটের দাবিতে গত দেড় মাস ধরে লাগাতার অবরোধ চালিয়ে আসছে।
বিএনপি জোটের এই কর্মসূচীতে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পেট্রোলবোমা ছোড়া এবং রেলে নাশকতার কড়া সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বলেছে, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে এ ধরনের কর্মকা-ের কেন যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, হোয়াইট হাউসের সম্মেলনে তিন সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন মন্ত্রী মাহমুদ আলী। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকও প্রতিনিধি দলে থাকছেন।
ঠিক একই সময়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যার দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য টাকা ঢালার অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি।