ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আট দিন পর পুঁজিবাজারে সূচকের পতন

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আট দিন পর পুঁজিবাজারে  সূচকের পতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টানা আট দিন সূচকের উর্ধগতির পরে দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতন ঘটেছে। প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জের (ডিএসই) বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়লেও দিনশেষে সার্বিক সূচক কমেছে প্রায় ১০ পয়েন্ট। তবে আগের দিনের চেয়ে সূচকের সামান্য পতনের কারণে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। সকালে ভাল সূচনার পরও ডিএসইতে ২৬৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৬১ কোটি টাকা বা ১৯ শতাংশ কম। আগের দিন এ বাজারে লেনদেন হয়েছিল ৩২৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নেয় ৩১০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৯টি, কমেছে ১৩১টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টি শেয়ারের দর। সকালে আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন শুরু হয়। কিন্তু মাত্র আধাঘণ্টা পর বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার প্রবণতা দেখা দেয়। ফলে বেশ কিছু কোম্পানি দর হারাতে থাকে। সারাদিন সূচকের উঠানামা শেষে ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্যসূচক ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৮৩১ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৪৭ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৮০৪ পয়েন্টে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পুরো জানুয়ারি মাস জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পুঁজিবাজারে টানা পতন ঘটে। পতনের সময়ে বেশ কিছু কোম্পানির দর কমে লোভনীয় পর্যায়ে আসার কারণে কৌশলী বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বাজারে ক্রয়াদেশ বাড়িয়ে দেন। গত আট কার্যদিবসে বাজারে উর্ধমুখী প্রবণতা ফিরে আসায় তাদের কেউ কেউ, দ্রুত মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। ফলে দিনটিতে কিছুটা সূচক ও লেনদেন কমেছে। তবে বাজারে এই মুনাফা তোলার প্রবণতাকে ইতিবাচক বলছেন তারা। এটি বাজারের স্বাভাবিক আচরণ। ডিএসইতে দিনটিতে প্রকৌশ খাতের সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। খাতটির মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৬ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৪ ভাগ। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল জ্বালানি এবং শক্তি খাতটি। খাতটির মোট লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের প্রায় ১৩ ভাগ। তৃতীয় অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাতের শেয়ারটি। খাতটির সম্মিলিত ৩৮টি কোম্পানির মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ১২ ভাগ। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হচ্ছে- বেক্সিমকো, ইফাদ অটোস, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল রিফাইনারি, গ্রামীণফোন, অগ্নি সিস্টেমস, আমরা টেকনোলজিস, ন্যাশনাল ফিড মিল, বেক্সিমকো ফার্মা, এমজেলবিডি এবং আরএকে সিরামিকস। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ন্যাশনাল ফিড মিলস লিমিটেড, শাহজিবাজার পাওয়ার লিমিটেড, দেশ গার্মেন্টস, রিপাবলিক, প্রিমিয়ার ইন্স্যুরেন্স, পেনিনসুলা হোটেল, সি এ্যান্ড এ টেক্সটাইল, সুহৃদ ইন্ড্রাস্টিজ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স ও প্রিমিয়ার সিমেন্ট। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : এনসিসি ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড, এইচআর টেক্সটাইল, ম্যাকসন স্পিনিং, কাসেম ড্রাইসেল, প্রগ্রেসিভ লাইফ, ৫ম আইসিবি, জিএসপি ফাইনান্স, বিডি অটোকারস, বাটা স্যু ও অগ্নি সিস্টেম। ঢাকার মতো দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব ধরনের সূচক ও লেনদেন কমেছে। সকালে ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরুর পরে দিনশেষে সিএসইতে মোট ২৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসই সার্বিক সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৮০৫ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৪৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে বেড়েছে ১০৬টি, কমেছে ১১১টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টি শেয়ারের দর। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : বেক্সিমকো লিমিটেড, ন্যাশনাল ফিড মিল লিমিটেড, গ্রামীণফোন, ইফাদ অটোস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ইউনাইটেড এয়ার, সি এ্যান্ড এ টেক্সটাইল, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল ও আরকে সিরামিক।
×