ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী

অস্থিরতা সত্ত্বেও চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব আদায় ৯৮%

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

অস্থিরতা সত্ত্বেও চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব আদায় ৯৮%

সংসদ রিপোর্টার ॥ সরকারের বিচক্ষণ নীতি ও দক্ষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় গত ছয় বছরে গড়ে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বৈশ্বিক মন্দাত্তোরকালে বিশ্বের স্বল্প যে ক’টি দেশ ৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। রবিবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত লিখিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত নারী আসনের ওয়াসিকা আয়শা খানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ তথ্য জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের নিমিত্তে সরকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী, মধ্যম মেয়াদী ও স্বল্পকালীন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। সংরক্ষিত নারী আসনের নুরজাহান বেগমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আদায়ের হার শতকরা প্রায় ৯৮ ভাগ। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। তারমধ্যে জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এ ছয় মাসে আদায় হয়েছে ৫৯ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ আদায়ের হার শতকরা ৯৭ দশমিক ৭ ভাগ। এর ধারাবাহিকতায় আশা করা যাচ্ছে যে, চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। জাসদের শিরীন আখতারের অপর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, শুল্ক জটিলতায় বিদেশ হতে আমদানিকৃত ৩০৯টি গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরে আটক রয়েছে। আটক গাড়িগুলোর আনুমানিক মূল্য ১২৪ কোটি টাকা। গাড়ি আমদানিকারকগণ যথারীতি আমদানি শুল্ক ও অন্যান্য কর পরিশোধ করে ছাড় করিয়ে নেন। তবে নির্ধারিত অতিরিক্ত সময়ের পরেও সেগুলো ছাড় না করলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তা যথানিয়মে নিলামের মাধ্যমে সরকারী রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা করে থাকে। সরকারী দলের সুবিদ আলী ভূঁইয়ার প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত গত ছয় বছরের সময়কালে বিশ্বমন্দা বজায় থাকা এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান সরকারের বিগত মেয়াদকালে (২০০৯-১৪) বাংলাদেশে গড়ে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা ছাড়াও অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে এ সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। অর্থমন্ত্রী জানান, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত নেতিবাচক কর্মকা-ের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধনের ফলে গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে কম হবে মর্মে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার প্রাক্কলনে আশঙ্কা করা হয়েছিল। সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতে সরকার দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কাঠামোকে সচল রেখে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, রফতানিমুখী খাতকে বর্ধিত সহায়তা প্রদান এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদ্যুত, জ্বালানি ও যোগাযোগসহ উৎপাদনমুখী অবকাঠামো এবং কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নে অধিকতর সম্পদ বরাদ্দ প্রদান করে। পাশাপাশি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত নেতিবাচক কর্মকা-ে উদ্ভূত অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রভাব কিছুটা প্রশমিত করে দেশের অর্থনীতিকে উর্ধগামী করার লক্ষ্যে উৎপাদন ও রফতানি পর্যায়ে কতিপয় রাজস্ব আর্থিক সুবিধা প্রদান করে।
×