ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার সংবিধান পরিবর্তনের দাবি বিএনপির

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

এবার সংবিধান পরিবর্তনের দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার সংবিধান পরিবর্তনের দাবি জানাল বিএনপি। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণায় উল্লেখ নেই এমন কিছু নীতিতে সংবিধানের ভিত্তি বলে উল্লেখ করে বিএনপির পক্ষ থেকে সালাউদ্দিন আহমেদের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে সংবিধান পুনর্লিখন এখন সময়ের দাবি। জাতীয় ঐকমত্য, সংলাপ ও সনদ রচনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। রবিবার গণমাধ্যমে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদের নামে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য, জাতীয় সংলাপ ও জাতীয় সনদ রচনার যে কোন উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। আওয়ামী দুঃশাসন ও একনায়কতন্ত্রের বন্দীশিবির থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষার গণআন্দোলনের বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র মুক্তির চলমান সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। খালেদা জিয়া শত জুলুম-নির্যাতনসহ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছেন। উল্লেখ্য, ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণার পর থেকেই সালাউদ্দিন আহমেদসহ বিভিন্ন নেতার নামে প্রতিদিনই বিবৃতি পাঠানো হচ্ছে। আর এ ধরনের বিবৃতির মাধ্যমেই বিএনপি জোটের দফায় দফায় হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচী ও দলীয় বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। তবে এসব বিবৃতি কোথা থেকে আসে তা কেউ বলতে পারছে না। সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ব স্বীকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক ও দৃঢ় ভিত্তির ওপর নবনির্মাণের জাতীয় স্পৃহা পূরণে আজ সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ। ক্ষমতায় আরোহণের জন্য নয়, বরং স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করার অদম্য বাসনা নিয়ে খালেদা জিয়া গণতন্ত্র মুক্তির চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। শত জুলুম-নির্যাতন নিপীড়নসহ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে তিনি প্রস্তুত রয়েছেন। সালাউদ্দিনের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল ভিত্তি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুযায়ী এগুলো মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি নয়। সালাউদ্দিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে উল্লেখিত ভিত্তিতে জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিকে চূড়ান্ত রূপদানের লক্ষ্যে জাতীয় সনদ রচনা ও প্রয়োজনে সংবিধান পুনর্লিখন বর্তমান সময়ের দাবি। জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক সামাজিক পরিবর্তনের এই সুযোগকে অবশ্যই জনস্বার্থে ফলপ্রসূ করতে হবে। প্রত্যেক সৃষ্টির এবং বিজয়ের প্রসব বেদনা থাকে, সমগ্র জাতি আজ কষ্টসাধ্য বেদনাকে স্বীকার করেই প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর। সালাউদ্দিন বলেন, পোশাক শিল্প মালিকদের অনশনে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সরকারকে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুত বিল এবং ট্যাক্স প্রদান বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারিকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ, ‘অগণতান্ত্রিক অবৈধ সরকারকে রাজস্ব প্রদানের বৈধতা থাকতে পারে না।’ বিজিএমইএর অনুষ্ঠানে সরকারীগোষ্ঠীর মদদে বোমা হামলা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, শনিবার ২০ দলীয় জোটের পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে ঠাকুরগাঁও, মাগুরার শালিকা, নরসিংদীর মনোহরদী, সিলেট, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে মিছিলে পুলিশ যৌথভাবে আক্রমণ চালায় এবং বিরোধীদলীয় অনেক নেতাকর্মীকে আহত ও গ্রেফতার করে। আমরা এহেন ঘৃণ্য অপতৎপরতার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমনপীড়ন করেই ক্ষান্ত নয়, বরং গণআন্দোলনকে কলুষিত করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির ঘৃণ্য অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। বিরোধী দল ও ভিন্নমত দমনের এহেন ঘৃণ্য ও নিকৃষ্টতম উদাহরণ সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে বিরল। আমরা বিশ্বাস করি, গণহত্যা, গণগ্রেফতার, অত্যাচার, জুলুম-নির্যাতন ও পেটোয়া পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের হিংস্র ও পৈশাচিক তা-ব সরকারের মসনদ রক্ষা করতে পারবে না, বরং নির্মম পতনকে ত্বরান্বিত করবে।
×