ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এবারের মেলায় উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া

আইসিটি খাতে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির বিনিয়োগের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আইসিটি খাতে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির বিনিয়োগের সম্ভাবনা

ফিরোজ মান্না ॥ এবারের তথ্য প্রযুক্তি মেলা (আইসিটি) দেশের জন্য বড় ধরনের অর্জন বয়ে এনেছে। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব হোলিন জাও বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৫ মেলা আয়োজকরা বলেন, আইটিইউ মহাসচিবের এই আহ্বান আইসিটি শিল্পের বিকাশের জন্য বড় রকমের অর্জন। তার আহ্বান এবারের মেলাকে অর্থবহ করে তুলেছে। এই মেলা ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে বিশ্বের বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানিও বাংলাদেশে তাদের অফিস স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছে। এমন কি তারা প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনেও বিনিযোগ করবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছে। এবারই প্রথম আইসিটি মেলায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও নাম করা কোম্পানিগুলো অংশ নিয়েছিল। সূত্র জানিয়েছে, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫ মেলার অর্জন নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের বলেন, এবারের মেলা আইসিটি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বড় ধরনের কাজে লাগবে। ১৯টি দেশের ৮৫ জন বিদেশী তথ্য প্রযুক্তিবিদ মেলায় অংশ নিয়েছিলেন। কয়েকটি দেশের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রীরাও মেলায় যোগ দিয়েছিলেন। মেলায় ৫টি জোনের নামকরণ করা হয়েছিল ভাষা শহীদদের নামে। তাদের সম্পর্কে বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় তথ্য ছিল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব হোলিন ঝাও, টিপসি এ্যান্ড টাম্বলারের প্রতিষ্ঠাতা বয়েডলি পোলেন্টাইন, ক্লাউডক্যাম্প প্রতিষ্ঠাতা ডেভ নিয়েলসেন, টাই সিলিকন ভ্যালি প্রেসিডেন্ট ভেঙ্ক শুক্লা ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় যোগ দিয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ এখনও অর্জন করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিংয়ের দিক থেকে গত ৬ বছরে অনেক ওপরে উঠে এসেছে। মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রকল্প এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এ-টু-আই), বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ কল সেন্টার এ্যান্ড আউটসোর্সিং এ্যাসোসিয়েশন, এ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এ্যামটব) ও বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি (বিডব্লিউআইটি)। বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান বলেন, এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স সংযোজন করা হয়েছিল। টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ প্ল্যাটফর্ম, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থার (আইটিইউ) সেক্রেটারি জেনারেল হোলিন ঝাও মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় প্রতিটি সেমিনার, কর্মশালায় যোগ দিয়েছে। মালদ্বীপ ও ভুটানের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীসহ সার্কভুক্ত কয়েকটি দেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীরা এবারের মেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এদিকে, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) আলাদাভাবে আলোচনায় বিশ্ব তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংস্থার (ডাব্লিউআইটিএসএ) এর ডেপুটি চেয়ারম্যান মি. রোজার লাটসম্যান যোগ দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে এসে তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অগ্রগতিতে অবির্ভূত হয়েছেন। ওই আলোচনায় বলা হয়, গত ৬ বছরে বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের বিষয় উঠে আসে। বলা হয়, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম আইসিটি সম্প্রসারণে বড় সম্পদ। তবে যুক্তিযুক্ত মূল্যে তথ্য ও প্রযুক্তি পণ্য নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছানো একটি চ্যালেঞ্জ। ডাব্লিউআইটিএসএ ডেপুটি চেয়ারম্যান বলে গেছেন, বাংলাদেশকে তথ্য প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনাময় দেশ হিসাবে গণ্য করে এ খাতে বিশ্বের বৃহৎ উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য তিনি ডাব্লিউআইটিএসএ’র পক্ষ থেকে ব্যক্তিগতভাবে প্রচেষ্টা চালাবেন।
×