ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৯৮ রানের বড় হার দিয়ে শুরু দুইবারের রানার্সআপ শ্রীলঙ্কার

আয়োজক নিউজিল্যান্ডের দুর্দান্ত সূচনা

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আয়োজক নিউজিল্যান্ডের দুর্দান্ত সূচনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপের উত্তাপটা শুরু হয়ে গেল। আর এ শুরুতেই আয়োজক নিউজিল্যান্ডের শক্তির বহরটা দেখার সুযোগ পেল বিশ্ববাসী। শনিবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৯৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দুর্দান্ত এক সূচনা পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম দিনেই দারুণ উপভোগ্য ক্রিকেট দেখতে পেয়েছেন ক্রিকেটপিপাসুরা। গত বছর মাত্র ৩৪ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নিজেকে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি দেয়া অলরাউন্ডার কোরি এ্যান্ডারসনই ছিলেন এর মূলে। মাত্র ৪৬ বলে ৭৫ রানের টর্নেডো এক ইনিংস উপহার দিয়ে দলের সংগ্রহকে যেমন আকাশচুম্বী করেছেন তেমনি আবার বল হাতেও দুটি উইকেট নিয়ে দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছেন। প্রথম ব্যাট করে বিশ্বকাপের জন্য নতুন করে প্রস্তুত ক্রাইস্টচার্চের পুরনো হ্যাগলি ওভাল মাঠের যাত্রাটা স্মরণীয় করেই রাখতে পেরেছে কিউইরা দারুণ এ জয়ের মাধ্যমে। প্রথম ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৩৩১ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড, জবাবে ৪৬.১ ওভারে লঙ্কানরা গুটিয়ে যায় মাত্র ২৩৩ রানে। বিশ্বকাপ অভিষেকের শুরুতেই হ্যাগলি ওভাল স্বাগতিক দর্শকদের জন্য কিছুটা দুঃখ বয়ে এনেছিল। কারণ টস জিতে যায় শ্রীলঙ্কা। টস হারলেও উপস্থিত ১৭ হাজার ২২৮ জন দর্শকের আনন্দে ভাসতে সময় লাগেনি। অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম শুরু থেকেই তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দুই লঙ্কান পেসারকে বেশ কড়া শাসন করতে থাকেন। প্রথম ম্যাচের আগে ইনজুরির পর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থাকা অন্যতম পেস স্তম্ভ লাসিথ মালিঙ্গার খেলা নিয়ে সংশয় থাকলেও তিনি এদিন একাদশে জায়গা করে নেন। তবে তাঁকে কোন পাত্তাই দেয়নি কিউই ওপেনররা। উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ১৫.৩ ওভারেই উঠে আসে ১১১ রান। তবে এরপর লঙ্কান শিবিরে স্বস্তি এনে দেন অভিজ্ঞ স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। তিনি ৪৯ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৫ রান করা ম্যাককুলামকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন। মার্টিন গাপটিল অবশ্য অনেক ধীরস্থির ছিলেন। তিনি ৬২ বলে ৫ চারে ৪৯ রান করে ফিরে যান। পরে কেন উইলিয়ামসন এসে আরেকটি অর্ধশতক উপহার দেন দলকে। তিনি ৬৫ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫৭ রান করে ফিরে যান। রস টেলরকে (১৪) বেশিদূর এগোতে দেয়নি লঙ্কানরা। তখনও বোঝা যাচ্ছিল না কতদূর যাবে কিউই শিবির। এ্যান্ডারসন ক্রিজে আসার পর ছক পাল্টে যায়। শেষ ১০ ওভারে তাঁর ব্যাটিং ঝড়ে উঠে আসে ১০২ রান। এ্যান্ডারসন ৪৬ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৭৫ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৩৩১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় কিউইরা। এটি ছিল বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে কোন দলের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এর আগে গত বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে ৩০২ রান করেছিল তারা। তবে লঙ্কানদের বেহাল ফিল্ডিংয়ের কল্যাণেই এত বড় সংগ্রহ পায় কিউরা। ম্যাককুলাম, এ্যান্ডারসন ও উইলিয়ামসনের সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন লঙ্কান ফিল্ডাররা। অবশ্য বিশ্বকাপে কিউইদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ কানাডার বিরুদ্ধে ২০০৭ বিশ্বকাপে ৫ উইকেটে ৩৬৩। জবাব দিতে নেমে বেশ দেখেশুনেই শুরু করেছিল লঙ্কানরা। ৬৭ রানের জুটিও গড়েছিল ধীর লয়ে। লঙ্কান ইনিংসের গল্পটা দ্বিতীয় জুটিতে ৫৭ রানেই শেষ। লড়েছেন ওপেনার লাহিরু থিরিমান্নে একাই। তিনি ৬০ বলে ৮ চারে ৬৫ রান করেন। অভিজ্ঞ সাঙ্গাকারার ৩৯ এবং এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ৫২ বলে ৫ চারে ৪৬ ছাড়া আর কোন বড় সংগ্রহ নেই। কিউই পেসারদের নিয়ন্ত্রিত ও গতিময় বোলিংয়ের সামনে লঙ্কান ইনিংস মুখ থুবড়ে পড়ে ৩ ওভার ৫ বল বাকি থাকতেই ২৩৩ রানে। শেষ পর্যন্ত প্রথম ম্যাচেই ৯৮ রানের বড় পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লঙ্কান শিবির।
×