ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়া ৩৪২/৯, ইংল্যান্ড ২৩১/১

স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে উড়ে গেল ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে উড়ে গেল ইংল্যান্ড

মিথুন আশরাফ ॥ বিশ্বকাপের ১১তম আসরের মাঠের লড়াইয়ের প্রথম দিনে স্বাগতিকদের জয়জয়কার। নিউজিল্যান্ডের পর অস্ট্রেলিয়াও জয় তুলে নিয়েছে। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ১১১ রানের বড় ব্যবধানে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে। এবার বিশ্বকাপে প্রথম জয়টি নিউজিল্যান্ড পেলেও প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এ্যারন ফিঞ্চ। বিশ্বকাপের প্রথমদিনেই অবশ্য ইংল্যান্ড হারলেও নিজেদের ঝুলিতে একটি অর্জন যুক্ত করে নিয়েছে। সেই অর্জন স্টিভেন ফিনের মাধ্যমে পেয়েছে ইংল্যান্ড। এ পেসার প্রথম দিনেই হ্যাটট্রিক করেছেন। শনিবার অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচে টস জিতে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে আমন্ত্রণ জানায়। স্বাগতিকরা সুযোগটি কাজে লাগায়। ফিঞ্চ ১২৮ বলে ১৩৫ রান করেন। ফিঞ্চের এ ইনিংসের সঙ্গে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৬৬ ও অধিনায়ক জর্জ বেইলির ৫৫ রানে ৯ উইকেটে ৫০ ওভারে ৩৪২ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ফিন হ্যাটট্রিকসহ ৫ উইকেট নেন। জবাবে ৫ উইকেট নেয়া মিচেল মার্সের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪১.৫ ওভারে ২৩১ রানেই অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। জেমস টেইলর অপরাজিত ৯৮ রান করেন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি কিছুটা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে। তবে দলীয় ৫৭ রানের জুটিতে ভাঙ্গন ধরেছে। এরপর দুই ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড ও ক্রিস ওয়েকসের গতিতে কিছুটা বিধ্বস্ত হতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। অষ্টম ওভারে পরপর দুই বলে টু ডব্লিউখ্যাত ডেভিড ওয়ার্নার ও শেন ওয়াটসনকে ফিরিয়ে দেন ব্রড। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে স্টিভেন স্মিথকেও ফিরিয়েছেন ওয়েকস। ওয়ার্নার ২২ রান করলেও ওয়াটসন রানের খাতা খুলতে পারেননি। আর ৫ রান করেন স্মিথ। এতে শুরুতে কিছুটা চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই চাপ কাটাতে ফিঞ্চের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন অধিনায়ক জর্জ বেইলি। এই দুজনের ১৪৬ রানের জুটিতে চাপ কাটিয়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। যদিও এরপর ফিঞ্চ ও বেইলি খুব কাছাকাছি সময় সাজঘরে ফিরেছেন। এর আগেই ১৩৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন ফিঞ্চ। ১২৮ বলে ১২টি চার ও ৩টি ছক্কার মারে ইনিংসটি সাজিয়ে রানআউট হয়েছেন তিনি। আর বেইলি করেছেন ৫৫ রান। এরপর স্টিভেন ফিনের গতি আবারও ভুগাতে থাকে অস্ট্রেলিয়াকে। তবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটে বাকি পথ ভালভাবেই পাড়ি দিয়েছে স্বাগতিকরা। যদিও একেবারে শেষ দিকে ৪০ বলে ১১টি চারের মারে ৬৬ রান করে আউট হয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। এ ছাড়া ব্র্যাড হ্যাডিন ৩১ ও মিচেল মার্শ ২৩ রান করেছেন। ইংলিশ বোলারদের মধ্যে ৭১ রানের খরচায় একাই ৫টি উইকেট তুলে নিয়েছেন স্টিভেন ফিন। শেষ ওভারে গিয়ে ২০১৫ বিশ্বকাপের প্রথম দিনে ওয়ানডে ক্রিকেটের ৩৭তম এবং এই বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের মালিক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ফিন। বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলামের পর একই কীর্তির পুনরাবৃত্তি দেখালেন ইংলিশ পেসার। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের শেষ ওভারে অর্থাৎ ৫০ ওভারের চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে যথাক্রমে হ্যাডিন, ম্যাক্সওয়েল ও মিশেল জনসনকে আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। এছাড়া স্টুয়ার্ট ব্রড ২টি ও ক্রিস ওয়েকস একটি উইকেট নিয়েছেন। জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার পেস গতি ঝড়ে সুবিধা করতে পারেনি ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। দলীয় ৯২ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে তারা। অবশ্য সপ্তম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছিলেন ক্রিস ওয়াকেস ও জেমস টেলর। তবে ব্যক্তিগত ৩৭ রানে ওয়াকেস বিদায় নিলে সে প্রচেষ্টাও বৃথা গেছে ইংল্যান্ডের। সতীর্থরা একে একে বিদায় নিলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন জেমস টেলর। ৯৮ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেছেন তিনি। এ জন্য গুটিয়ে যাওয়ার আগে ২৩১ রান তুলতে সমর্থ হয়েছিল ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। প্রথম ম্যাচেই দর্শকে ঠাসা মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। উত্তেজনা ছড়িয়ে শুরুটা বেশ দাপটেই হলো অস্ট্রেলিয়ার। এ পুলের প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা করেছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে নতুন কীর্তি গড়েছেন এ্যারন ফিঞ্চ। এই প্রথম বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেন অস্ট্রেলিয়ার কেউ। ফিনও একটি রেকর্ড গড়েন। প্রথম ইংলিশ পেসার হিসেবে বিশ্বকাপের মতো আসরে হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ফিন। ইংলিশ পেসারের আগে গত বছর ডিসেম্বরে সর্বশেষ হ্যাটট্রিকের নজিরটি ছিল বাংলাদেশের তরুণ স্পিনার তাইজুল ইসলামের। জিম্বাবুইয়ে সিরিজে ওই কীর্তি দেখিয়েছিলেন নাটোরের ক্রিকেটার। ১৯৮২ সালে ওয়ানডেতে প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেছিলেন পাকিস্তানের জালালউদ্দিন। ফিন এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে সর্বশেষ ওয়ানডে হ্যাটট্রিকম্যান। কিন্তু তার এ হ্যাটট্রিক ইংল্যান্ডকে জেতাতে পারল না। হার দিয়েই শুরু হলো ইংলিশদের বিশ্বকাপ। ঠিক তেমনি উল্টো হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে। বড় ব্যবধানে জয়েই শুভসূচনা করেছে অস্ট্রেলিয়া।
×