ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্নায়ুচাপ কাটিয়ে ওঠার দিকে মনোযোগী পাকরা

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

স্নায়ুচাপ কাটিয়ে ওঠার দিকে মনোযোগী পাকরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ মানেই অন্যরকম এক উন্মাদনা। জাতীয়তা বোধে জাগ্রত দুই দেশের ক্রিকেটার শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় জয়ের জন্য। এমনকি নিজেদের সেরা ফর্মে না থাকলেও ভারত-পাকিস্তান লড়াইটা সবসময়ই স্নায়ু চাপের। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে মাঠের চিরশত্রু ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান দল। এ কারণে এবারও স্নায়ু চাপটা বেশিই থাকবে পাক শিবিরে। দু’দলের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হবে এবার পরস্পরের মোকাবেলার মাধ্যমে। রবিবার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দিন এ্যাডিলেড ওভালে হবে এ আগুন লড়াইটা। এবার পাকিস্তানের জন্য বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে দেয়ার চ্যালেঞ্জ। আর গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের লক্ষ্য চির প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দুর্দান্ত শুরুর। বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে নামার আগেই বেশ স্নায়ু চাপে আছে পাকিস্তান। কারণ প্রায় নবীন একটি দলে ইউনুস খান, মিসবাহ-উল-হক আর শহীদ আফ্রিদি ছাড়া অভিজ্ঞ কোন ক্রিকেটার নেই। শুক্রবার অনুশীলনের মূল নেটেও একই অবস্থা দেখা গেছে। তবে এর মধ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে নামার জন্য নিজেদের কৌশলগুলো নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কাজ করেছেন ব্যাটসম্যানরা। স্মরণীয় একটি মুহূর্ত গেছে ১৯৯২ সালে, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ জিতে ঘরে ফিরেছিল পাকরা। আগামী ৬ সপ্তাহে ২৩ বছর আগের ওই স্মৃতিটা ফিরিয়ে আনাটা খুব কঠিন সাধ্য বিষয় পাকিস্তানের জন্য। সাঈদ আজমল, উমর গুল ও মোহাম্মদ হাফিজের মতো অপরিহার্য ক্রিকেটাররা দলে না থাকায় ভারসাম্য অনেকটাই নষ্ট হয়েছে। সেদিক থেকে ভারতের জন্য পাকদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামাটা সহজ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গত আড়াই মাস ধরেই অবস্থান করছে দলটি। স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের পর আবার ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্টও খেলেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। পূর্ণ শক্তির বহর নিয়েই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মুখোমুখি হবে তারা। তাই সবদিক থেকেই পাকদের চেয়ে এগিয়ে ভারত শিবির। সে কারণে আবারও পাকদের জন্য ১৯৯২ ফিরে আসবে কিনা তা বোঝা যাবে প্রথম ম্যাচ দিয়েই। কারণ অগ্নিপরীক্ষাটা পার হতে পারলে ক্রিকেটাররা অনেকটাই উজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারবে এবং আত্মবিশ্বাসটাও বাড়বে। গত বিশ্বকাপেও ভারতের বিরুদ্ধে খেলেছে পাকরা। মোহালিতে শেষ চারের লড়াই হওয়ার কারণে উত্তাপ ছিল আরও বেশি। সেবার স্বাগতিকরাই জিতে যায়। ১৯৯৯ সালে সুপার সিক্সে, ১৯৯৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয় দু’দল। গ্রুপ পর্বে ১৯৯২ আর ২০০৩ সালে দু’দলের সাক্ষাত হয়েছে। তবে ভারতের বিরুদ্ধে কিছুটা আত্মবিশ্বাসী হতেই পারে পাকিস্তান। কারণ এবার দীর্ঘ অস্ট্রেলিয়া সফরে একটি জয় পেয়েছে ভারতীয় দল। সেটাও আবার আফগানিস্তানের মতো প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে আসা দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে। বিশেষ করে বোলিং নিয়েই বড় সমস্যা মোকাবেলা করছে ভারতীয় দল। এ কারণে অধিনায়ক ধোনি নিজেও দীর্ঘ সময় অস্ট্রেলিয়াতে থাকাটাকেও একটা বাড়তি নেতিবাচক প্রভাব বলে মনে করছেন। সে কারণে পুরনো সময়ের মতোই এবারও দলকে নির্ভর করতে হবে ব্যাটসম্যানদের ওপর। শেষবার মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারতীয়দের হারিয়ে দিয়েছিল পাকরা। গত বছর এশিয়া কাপে শহীদ আফ্রিদির টর্নেডো ইনিংস তাদের পরাজয়ের কারণ হয়ে উঠেছিল। এবারও তেমন কিছু করার লক্ষ্য নিয়েই নামবে পাকরা, সে জন্য কাটাতে হবে স্নায়ু চাপ। সে দিকেই এখন মনোযোগী পাক শিবির।
×