ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

ছিঃ ছিঃ তুমি এত খারাপ

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ছিঃ ছিঃ তুমি এত খারাপ

মাসাধিককাল ধরে ট্রেনে-বাসে-ট্রাকে-কার-রিকশা-অটোরিকশায় পেট্রোলবোমা, গানপাউডার মেরে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে; মা’র কোলে শিশু, স্কুলগামী কিশোর-কিশোরী, পেটের ধান্ধায় কাজে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষগুলো পোড়া শরীর নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। হাসপাতালগুলোর বার্ন ইউনিটে পেট্রোলবোমার আগুনে পোড়া শত শত মানুষ আসছে, আবার লাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। বার্ন ইউনিটের মানুষগুলো এই শীতের মধ্যে গায়ে কাপড়ও দিতে পারছে না। কারও শরীরের ৫০ ভাগ, কারও ৭০, ৮০ বা ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। টেলিভিশনে দেড়-দুই বছরের যন্ত্রণাকাতর মায়াবি চেহারার বাচ্চাটির যন্ত্রণাকাতর মুখচ্ছবি যে দেখেছে বা সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় তার ছবি দেখেছে বিকৃত মানসিকতার না হলে সে চোখের জল রাখতে পারবে না। আসুন না ঐ শিশুটিকে নিজের সন্তানের আসনে বসাই, বার্ন ইউনিটের বেডে পড়ে থাকা নারীকে নিজের মায়ের আসনে বসাই, তাহলেই কেবল বুঝতে পারব কি যন্ত্রণায় মরছে ওরা, মরছে আমার আপনার মানসলোক। বাঙালী জাতির দুর্ভাগ্য যিনি মাসাধিককাল ধরে পেট্রোলবোমা ছুড়ছেন, বোমার আগুনে পুড়িয়ে মানুষগুলোকে বার্ন ইউনিটে পাঠাচ্ছেন, হত্যা করছেন বা চিরতরে পঙ্গু অকেজো করার মতো বর্বর পৈশাচিক কাজটি করাচ্ছেন এবং নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি সাধারণ নারী ননÑসাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং একজন রাজনৈতিক নেত্রী-প্রতিশোধ নেয়ার জন্যে তার গায়ে তো আর পাল্টা পেট্রোল বোমা ছোড়া যায় না, তবে তার মাতৃহৃদয় এবং মানসলোক জাগিয়ে তোলার জন্যে ভর্ৎসনার আকারে একটি সংলাপ ছুড়ে দেয়া যায়- ছিঃ ছিঃ তুমি এত খারাপ! সংলাপটি একটি টেলিভিশন নাটকের। স্থান-কাল-পাত্র বিষয় হু-বহু মিলবে না, হয়ত কিন্তু একটি জঘন্য বর্বর পৈশাচিক কার্যকলাপের নিন্দা করার জন্যে এরচেয়ে ভদ্র ভাষা আর কি আছে? আমরা কেউই নিশ্চয়ই নিষ্পাপ পবিত্র চেহারার মাইশার কথা ভুলিনি। বাবা ব্যবসায়ী কাজে কক্সবাজার যাচ্ছেন, মাইশা মনে করল সমুদ্র দেখার এই তো সুযোগ, বাবার সঙ্গে কক্সবাজার গেলেন, সমুদ্র দেখলেন, ফেরার পথে খালেদা জিয়ার সন্ত্রাসী শিবির বাহিনীর পেট্রোলবোমায় বাবার সঙ্গে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেলেন। মাইশা তো আমার বা আপনারও মেয়ে হতে পারত, বোন হতে পারত। কি সংলাপ দিয়ে এর নিন্দা করব? তেমন ভাষা, তেমন সংলাপ আছে? অন্তত দশ বার ছিঃ ছিঃ ছিঃ....বলে বলা উচিত ম্যাডাম (?) তুমি এত হিংস্র! তারপরও কি যথাযথ তিরস্কার করা হবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নারী এবং মা। ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে পোড়া শরীর নিয়ে শুয়ে থাকা বাচ্চাটির সামনে গিয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। যাঁরা শেখ হাসিনার সঙ্গে খালেদা জিয়ার তুলনা করেন, এক কাতারে দাঁড় করান, তাঁদের উদ্দেশে বলব, পার্থক্যটা বোঝার চেষ্টা করুন। অবশ্য খালেদা জিয়াকেও একদিন অঘোর কাঁদতে দেখেছি (টিভিতে), যেদিন তাঁকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল। অর্থাৎ উচ্ছেদ করা হয়েছিল। খালেদা জিয়ার নিষ্ঠুরতার আরেকটি উদাহরণ হলো, একজন ছাত্রের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা, তিনি তাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেন। একদিকে অবরোধ চালাচ্ছেন, তার ওপর হরতাল দিচ্ছেন। অবশ্য অবরোধ-হরতালের কোন চিহ্ন বাংলাদেশের কোথাও নেই। যানবাহন চলছে, যথারীতি দোকানপাট খোলা থাকছে, কিন্তু পেট্রোলবোমার আতঙ্ক মানুষকে নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে। যে কারণে আমাদের ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার হলে পাঠানো ঝুঁকিপূর্ণ। তাই হরতালের দিন পরীক্ষা থাকছে না। লক্ষ্য করুন এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫ লাখ। শুধু কি তাই, দেশের লাখ লাখ প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ছেলেমেয়েরাও স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। তাদের বাবা-মা, ভাই-বোন, অন্যান্য আত্মীয়স্বজন মিলে আরও কোটি মানুষকে খালেদা জিয়া জিম্মি করে নিজের প্রয়াত এবং দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত পুত্র কোকোর দুই মেয়েকে তাদের মাসহ মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছেন পরীক্ষার জন্য। অবশ্য তারা দীর্ঘদিন ধরেই মালয়েশিয়ায় বসবাস করছে। শুনেছি অভিজাত জীবন (গাড়ি-বাড়ি অর্থে) যাপন করছে। এই ব্যয় কোন গৌরীসেন বহন করছেন কেউ জানে না। বড় ছেলে তারেক গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ফেরারি আসামি হিসেবে পলাতক জীবন যাপন করছে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। শোনা যায়, লন্ডনের একটি অভিজাত এলাকায় বাস করছে। ওর খরচও কোথা থেকে আসে কেউ জানে না। তবে হ্যাঁ, তার মা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একবার ওমরাহ হজ পালন করতে মার সঙ্গে সৌদি আরব গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে ছিল বিশালাকার অর্ধশতাধিক স্যুটকেস। তখন মানুষের মুখে মুখে যে কথাটি ঘুরে ফিরে এসেছে তা হলো ওই স্যুটকেসগুলো ডলার-রিয়েলে ভরা ছিল। প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবার যাচ্ছেন-ভিআইপি চ্যানেলে, সেখানে তল্লাশির কোন সুযোগ নেই। মণে মণে সোনা নিয়ে গেলেও কেউ তল্লাশি করবে না, কারণ ঘাড়ে তো মাথা একটাই। তারপর সন্ত্রাসীর গডফাদার তারেক রয়েছে সঙ্গে। এই তারেক হাওয়া ভবনে মিটিং করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা করিয়েছিল। কাজেই তাদের লন্ডনের অভিজাত এলাকা কেন বিশ্বের যে কোন ব্যয়বহুল শহরে বসবাস করতে অর্থের অভাব হবে না। তারেকের হাওয়া ভবনই ছিল তার মা’র সরকারের মতো সমান্তরাল আরেকটি সরকার-ওখানে বখরা না দিয়ে কোন কাজ হতো না। এই তারেক কেবল লুটেরা ছিল তাও নয়, বেআদবও। হবেই বা না কেন? তাদের পারিবারিক কালচারটাই তো তা-ই ছিল! লেখাপড়া তো মা’র মতো, আন্ডার ম্যাট্রিক গ্র্যাজুয়েট। কোকোর পাচার করা ২১ কোটি টাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় সিঙ্গাপুর সরকার বাংলাদেশকে ফেরত দিয়েছে। আরও কত আছে কে জানে? তারেকের পাচার করা কোন দেশে কত আছে, সে হিসেব যদি কোনদিন প্রকাশ পায় তাহলে বহু মানুষ জ্ঞান হারাবে। খালেদা জিয়াও এখন নিজ বাড়িতে থাকেন না। থাকেন গুলশানে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম অর্থাৎ পেট্রোলবোমা কার্যালয় পরিচালনার নিমিত্ত কার্যালয়টিকেও সেভাবে সাজিয়েছেন অনেক আগেই। খালেদা জিয়ার করার কিছু নেই। তিনি ভাল করেই জানেন নির্বাচনে অংশ নিয়ে কোনদিনই ক্ষমতায় যেতে পারবেন না। মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনকে আমরা যতই মিলিটারি স্বৈরাচার বলি না কেন, তাঁরা ইতিহাস-বিকৃতি সংশোধনসহ অনেক ভাল কাজ করে গেছেন, যা জাতিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। যেমন এক কোটি ২৪ লাখ ভুয়া ভোট বাতিল করে একটি শুদ্ধ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে দিয়ে গেছেন, সেই সঙ্গে ছবিসহ ন্যাশনাল আইডি কার্ড। লক্ষ্য করুন এক কোটি ২৪ লাখ ভুয়া ভোট আমাদের পার্লামেন্টের ৩০০ আসনে ভাগ করলে প্রতি আসনে ৪১ হাজার ৩৩৩ ভোট পড়ে এবং এই ভোটগুলো প্রতি আসনে খালেদার সন্ত্রাসী শিবির-ছাত্রদল ব্যবহার করে বা আগেই আলাদা বাক্সে সিল মারা ব্যালট ঢুকিয়ে রাখত এবং গণনার সময় মিলিয়ে নিত। এইসব জুয়াচুরি বাস্তবায়নের জন্যে খালেদা জিয়া প্রতিটি থানায় একজন করে ইলেকশন অফিসারও নিয়োগ দিয়েছিলেন, যাদের শতকরা ৯০ ভাগই শিবির সন্ত্রাসী। তাও বাতিল করে দেয়া হয়েছিল। যে কারণে নির্বাচনে জেতার তার সব রকম ফন্দি-ফিকির বন্ধ হয়ে যায়। যার জন্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকে শিবির-ছাত্রদল সন্ত্রাসীদের পথে নামিয়ে দেন নির্বাচন ঠেকাতে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আগে নৃশংসতা আমরা কেউ ভুলিনি। এবারও সেই একই নৃশংসতার আশ্রয় নিয়েছেন খালেদা জিয়া। পেছনে রয়েছে জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসীরা। খালেদা জিয়ার এজেন্ডা হলো ক্ষমতায় যেতে হবে, নয়ত পলাতক পুত্র তারেককে দেশে আনতে পারছেন না, তাদের দুইজনের মামলাগুলোও বাতিল করতে পারছেন না। (শোনা যায় তাড়াতাড়ি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় হয়ে যাবে)। আর জামায়াতীদের এজেন্ডা হলো যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিজামী-মুজাহিদসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জামায়াত নেতাকে মুক্ত করা এবং যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দেয়া। এ লক্ষ্যে পেট্রোলবোমায় যত মানুষ পোড়ে পুড়–ক, যত নারী-শিশু মরে মরুক, বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয় হোক, দেশ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয় হোক, তাতে খালেদা জিয়ার কিছু আসে যায় না, তার সোনার হরিণ (ক্ষমতা) চাই-ই চাই। সবচেয়ে অবাক হতে হয় যখন দেখি ওই আন্ডার ম্যাট্রিক গ্র্যাজুয়েট ভদ্রমহিলার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েশন এবং মাস্টার্স ডিগ্রীধারী কিছু লোক সাফাই গাইছেন। এদের মধ্যে যেমন রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, তেমনি রয়েছেন নেতাগিরি করার সুবাদে বড় সাংবাদিক। অবশ্যই স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার পক্ষের ইউনিয়নের। তাদের মধ্যেও রয়েছে আন্ডার ম্যাট্রিক গ্র্যাজুয়েট যাদের মানসিকতা জামায়াতের পত্রিকা সংগ্রামের পরিবেশে গড়ে উঠেছে। আবার এমনও রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মহসিন হলে ৭ ছাত্র খুনের আসামি, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শফিউল আলম প্রধানের শিষ্য, মিলিটারি জিয়া যাদের সবাইকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। এরা আবার পরিচয় দিয়ে বেড়ান মুক্তিযোদ্ধা বলে (?)। তাদের নাম আমি নিতে চাই না। তবে প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ, প্রফেসর ফেরদৌস হোসেন, প্রফেসর শরফুদ্দিন এদের আন্ডার ম্যাট্রিক গ্র্যাজুয়েট বলার সুযোগ নেই, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে এরা পদাধিকার বলে বুদ্ধিজীবী। খুব সূক্ষ্মভাবে খালেদা জিয়াকে এবং তার পেট্রোল বোমা তথা সহিংস রাজনীতিকে সমর্থন দিয়ে চলেছেন। যেমন : ১. গত ৫ জানুয়ারি তাদের জনসভা করতে দিলে এ পেট্রোলবোমার রাজনীতি হতো না। আবার এ-ও বলে তৃতীয় কোন পক্ষ এই পেট্রোলবোমা মারছে। আমার প্রশ্ন হলো, খালেদা জিয়া অবরোধ-হরতাল তুলে নিন, দেখা যাবে পেট্রোলবোমা পড়ে কিনা। খালেদা জিয়ার অবরোধ ঘোষণার পর থেকেই তো পেট্রোলবোমা পড়তে শুরু করল। আরেকটি প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো কোকোর জানাজার দিন হরতাল-অবরোধ ছিল না, বাংলাদেশের কোথাও একটিও পেট্রোলবোমা পড়েনি। পদাধিকার বলে বুদ্ধিজীবীরা দেশের মানুষকে এতই বোকা ভাবেন (?) যে, মানুষ যেন কিছুই বোঝেন না। হেফাজতে ইসলাম প্রথমবার ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিলে সরকার ঢাকার প্রতিটি প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়ে তাদের ঢুকতে দেয়নি। তখনও এই পদাধিকার বলে বুদ্ধিজীবীরা সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন, সমাবেশ করতে দিলে কি আর হতো? কিন্তু ৫ মে যখন শাপলা চত্বরে তাদের সমাবেশ করতে দেয়া হলো, কথা ছিল তারা ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করে চলে যাবে। না, তারা যায়নি, বরং বেলা ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত গোটা মতিঝিল এলাকা, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, পল্টন, বিজয়নগর এলাকা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিল। এমনকি তাদের আগুনে পবিত্র কোরআন, হাদিস, মসজিদের মেট পর্যন্ত পুড়ে ছাই হয়েছে। তারা টার্গেট করেছিল এসব জ্বালাও-পোড়াও করতে করতে সকালে বঙ্গভবন দখল করবে। সেদিনও খালেদা জিয়া হেফাজতী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে নাশকতা করার জন্যে তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২. বুদ্ধিজীবীরা বলেন, সরকার না কি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছে, অতএব তাদের পেট্রোলবোমা মারা বৈধ। আমার প্রশ্নÑ যারা পেট্রোলবোমা মেরে বাস-ট্রেন-কার-টেম্পো-রিকশা-অটোরিকশায় আগুন দিয়ে মানুষ হত্যাসহ ধংসযজ্ঞে নিয়োজিত বা যারা বোমার যোগানদাতা বা যারা নির্দেশদাতা, তাদের গ্রেফতার করা কি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস? এটা কি আইনশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে না? সরকার কি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে না? শুনেছি এই মাস্টাররা কেউ কেউ রাষ্ট্র বিজ্ঞানেরও শিক্ষক, মহোদয়গণ আমাদের এত বোকা ভাবেন কেন? বরং আমরা জানি বোকারাই বুদ্ধিমান মানুষকেও তারই মতো বোকা ভাবে? ৩. এই বুদ্ধিজীবীরা সংলাপ সংলাপ করে গলা ফাটাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, সরকার যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র সন্তু লারমার সঙ্গে সংলাপ করতে পারে তাহলে বিএনপি’র সঙ্গে সংলাপ করতে পারবে না কেন? ভাল কথা, খালেদা জিয়া অবরোধ-হরতাল তুলে নিন, পেট্রোলবোমা মারাসহ ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ তুলে নিন, হতাহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিন, কেবল তখনই পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা একবারও কি খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাস বন্ধ করতে বলেননি, একবারও কি নিন্দা করেছেন? করেননি। তাহলে তাদের কি বলব? হিপোক্র্যাট বললেও কম বলা নয় কি? শুনলাম আরেক দল বেরিয়েছে যারা ‘জাতীয় সংলাপ’ ‘জাতীয় সনদ’ করতে চায়। আমি মনে করি সরকারের রাজি হওয়া দরকার। এতে ‘জাতীয় শুকতলা পার্টি’, ‘আন্তর্জাতিক পাগলের সংস্থা’ প্রভৃতির সঙ্গে মহাজোটের তৃতীয় পর্যায়ের নেতাদের বসিয়ে দেয়া যেতে পারে। তবে যারা এই দাবি তুলেছেন তাঁরা তো আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল থেকে তাড়া খাওয়া নেতা, টেলিভিশনের টক-শো ছাড়া তাদের কি সামাজিক অবস্থান আছে? সর্বশেষ একটি প্রশ্ন উত্থাপন করতে চাইÑ শান্তির জন্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস কোথায়? ২০১৪-এর ৫ জানুয়ারির আগের ধ্বংসযজ্ঞের সময়ও তাকে দেখা যায়নি। তার কোন কথাও শোনা যায়নি। ছিঃ ছিঃ নোবেল লরেট তুমিও এত খারাপ! ঢাকা- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
×