ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংলাপের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি ॥ ও. কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সংলাপের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি ॥ ও. কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সরকার ও দলে সংলাপের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে দেশে চলমান অবস্থায় যে কোন সময় আলোর ঝলকানি দেখা যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এই নেতা। এদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালে পরিবহন খাতে ক্ষতিগ্রস্তরা সাড়ে ৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে সংলাপের দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আগ বাড়িয়ে কোনো কথা বলা উচিত না। তাছাড়া আমাদের রেসপন্সিবল-পজেটিভলি বিহ্যাব করতে হবে। এ দায়িত্বশীলতা সবার মধ্যে থাকা উচিত। দেশটা ১৬ কোটি মানুষের। আমরা যারা রাজনীতি করি, দায়িত্বশীল পদে আছি, আমাদের কারোরই দায়িত্বহীন বক্তব্য দেয়া উচিত নয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সংলাপের বিষয়ে সরকারের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি, দলেও (আওয়ামী লীগ) আলোচনা হয়নি। ওয়ার্কিং কমিটিতে হয়তো কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই মুহূর্তে কোন সংলাপ অনুকূলে নয়। এই মুহূর্তে আমি ভিন্ন কোন মন্তব্য বা বক্তব্য দিতে পারি না। কারণ সরকার এবং দলে এখন পর্যন্ত সংলাপের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। চলমান রাজনৈতিক অবস্থার সমাধান কী- জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ঝড় আসে, ঝঞ্জা আসে, অন্ধকার আসে, আবার চলেও যায়। আমার মনে হয়, দেখবেন এই অন্ধকারের মধ্যেও আলোর ঝলকানি হয়তো কোনো সময় দেখা যাবে। এ অবস্থা দীর্ঘকাল চলতে পারে না। তাই বলে আত্মবিনাশী আগুনে আমরা কী পুড়ে মরব? ‘অবরোধের যে আত্মবিনাশী আগুন, তা সারা দেশকে পুড়ছে। এটার সমাধানও আছে, পরিণতিও আছে’, বলেন মন্ত্রী। নির্বাচন সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ- খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, উনি উনার চিন্তা থেকে একথা বলেছেন। আমরা বিরোধী দলে থাকলে আমরাও বলতাম। আলোচনার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার প্রশ্নে তিনি বলেন, কূটনৈতিক-বিদেশীদের উদ্বেগ থাকবে। কারণ তাদের অনেকে দাতা, উন্নয়ন সহযোগী, তাদের উদ্বেগ থাকবে। বন্ধু দেশ আছে, ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি আছে, জাতিসংঘ আছে। আমরা তো ফোরাম থেকে বিচ্ছিন্ন নই। তাদের উদ্বেগ থাকতে পারে। আমাদের সমস্যা, আমাদেরই সমাধান করতে হবে। একটা সংলাপ করার জন্য সংলাপ করতে হবে, এরকম সংলাপ করে কোনো লাভ নেই। পরিবহন খাতে ক্ষতিগ্রস্তরা সাড়ে ৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন ॥ গত ৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়া লাগাতার অবরোধ ঘোষণার পর বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে ৬৭৪টি গাড়ির ক্ষতিপূরণ চেয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির পক্ষ থেকে তালিকা পাঠানো হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। দ্বিতীয় পর্বের তালিকা তৈরির কথা জানিয়েছেন পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। বিএনপি জোটের চলমান সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচীর মধ্যেও গাড়ি চালাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের গাড়ি চালাতে উৎসাহিত করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছিল। সারাদেশে সড়ক-মহাসড়কে জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয় আনসার, র‌্যাব, বিজিবিসহ পুলিশ সদস্যদের। এরপরও দেশের বিভিন্ন স্থানে চোরগোপ্তা হামলার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। কুমিল্লা ও গাইবান্ধায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমার আগুন পুড়ে নিহত হয়েছে অন্তত ২৩ জন। এছাড়া প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথায় পরিবহনকে লক্ষ্য করে অবরোধকারীদের নাশকতা চলছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, অবরোধের মধ্যে এই পর্যন্ত ১২শ’র মতো গাড়ি ভাংচুর ও পোড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে বিআরটিসির কয়েকটি বাসও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৬ কোটি টাকা দেয়া হবে। তালিকা পেয়ে অলরেডি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে এ টাকা খুব শিগগিরই পৌঁছে যাবে। অবরোধ-হরতালে নাশকতায় এ পর্যন্ত ৪০ জন গাড়িচালক ও চালকের সহকারী নিহত হয়েছেন বলে সড়কমন্ত্রী জানান। অগ্নিদগ্ধ হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীনদেরও ১০ লাখ করে টাকার সঞ্চয়পত্র একদিন আগে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
×