ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় হরতাল উপেক্ষা করে মেলায় মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বগুড়ায় হরতাল উপেক্ষা করে মেলায় মানুষের ঢল

সমুদ্র হক ॥ বগুড়ার মহিষাবান গ্রামে গাড়িদহ নদীর তীরে মাঘের শেষ বুধবারে বসেছিল ঐতিহ্যের পোড়াদহের মেলা। এবারের মেলার বৈশিষ্ট্য হলো, বাঙালীর শিকড়ের টানে অবরোধ হরতাল উপেক্ষা করে মানুষের ঢল নামে। মাছ আসবাবপত্র ও বাহাড়ি মিষ্টির এই মেলাকে ঘিরে দশ গাঁয়ে আনন্দের জোয়ার বয়। নাইওর আসে মেয়ে জামাই। জামাই যত বয়সী হোক আর পুরনো হোক বরণ করে নেয়ার পালায় জামাইদের মিলন মেলায় পরিণত হয় গ্রামগুলো। এর সঙ্গে জামাই আদর বলে কথা। বগুড়া শহর থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরের মেলায় সকাল থেকেই যানবাহনে লোকজন ছুটতে থাকে। আকর্ষণ বড় মাছ। ৯০ কেজি ওজনের একটি বাঘার মাছের দাম হাঁকা হয় প্রায় এক লাখ টাকা। প্রতি কেজি প্রায় ১১শ’ টাকা করে। যত না দাম তার চেয়ে বেশি মাছের দর্শন। প্রবীণরা বলেন, বহুযুগ আগে নদীর তীরে যে জায়গাটি পোড়াদহ নাম পেয়েছে সেখানে ছিল জোড়া বটগাছ। কোন এক সন্ন্যাসী এসে বটতলায় বসে ধ্যানে বসত। কৌতূহলী লোকজন ভিড় জমাত। এভাবেই সাধু সন্ন্যাসীদের আনাগোনায় পুজো অর্চনা শুরু হয়। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পুজোকে উপলক্ষ করে মেলার বাদ্য বেজে ওঠে। আজও যে বাদ্য মেলা শুরুর কয়েকদিন আগে বেজে জানান দেয়। কালের আবর্তে সেই নদী শুকিয়ে গিয়েছে। জোড়া বটগাছের চিহ্ন নেই। তবে সেই দিনের সেই স্মৃতিরচিহ্ন হৃদয়ে বংশ পরম্পরায় ধারণ করে আছে দশ গাঁয়ের মানুষ। যার ধারাবহিকতায় আজও মেলা বসে পোড়াদহের নিধূয়া পাথারে। দূর দূরান্ত থেকে পসরা নিয়ে ছুটে আসে মেলার দোকানীরা। শিশুকিশোরদের নাগরদোলা, পুতুল নাচ বিচিত্রানুষ্ঠান কোন কিছুরই কমতি নেই মেলায়। বাঙালীর মিষ্টি তো আছেই।
×