ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গায়েবি বিবৃতিতে সন্ত্রাসী কর্মসূচী, খোদ বিএনপি নেতারা বিচলিত

প্রকাশিত: ০৫:১১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

গায়েবি বিবৃতিতে সন্ত্রাসী কর্মসূচী, খোদ বিএনপি নেতারা বিচলিত

বিভাষ বাড়ৈ ॥ চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ জোটের নামে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে দেয়া অব্যাহত নাশকতামূলক বিবৃতি নিয়ে চরম বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন এমনকি গণমাধ্যমের সঙ্গেও কোন যোগাযোগ ছাড়াই আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের মতো আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পাল্টাপাল্টি বিবৃতির ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। নাশকতায় ব্যাপক গণঅসন্তোষের পরও একই কায়দায় দফায় দফায় বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা কর্মসূচী নিয়ে দলের ভেতরেই তৈরি হয়েছে সংশয়। আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বিএনপির নামে যে কর্মসূচী ঘোষণা করা হচ্ছে তাতে খালেদা জিয়ার সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের ভেতরেই। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব হাফিজ উদ্দীনের বিবৃতি নিয়ে সংশয়ে আছে খোদ দলের মিডিয়া উইং। সিনিয়র নেতাদের অনেকেই আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে পাঠানো নাশকতামূলক কর্মসূচী নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘এসব কর্মসূচীতে চেয়ারপার্সনের আদৌ সমর্থন আছে কিনা আমরা নিশ্চিত নই’। এদিকে এমন বিতর্কের মধ্যেই মঙ্গলবার আরও দুইদিন হরতালের বার্তা দিয়ে বিএনপির নামে একটি বিবৃতি এসেছে গণমাধ্যমে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের নামে পাঠানো ওই বার্তায় বলা হয়েছে, চলমান অবরোধের মধ্যে হরতালের কর্মসূচী বর্ধিত করে এখন তা বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে। ২০ দলীয় জোটের পক্ষে এই বিবৃতিতে গত কয়েক দিনের মতো আবারও অজ্ঞাত স্থানে থাকা যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের একটি স্বাক্ষর কেটে এনে বসানো হয়েছে। বিবৃতিটি দেখলেই স্বাক্ষর কেটে এনে বসানোর বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জানা গেছে, দলটির স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ে অনেক নেতাই আল-কায়েদাসহ আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের মতো আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে একের পর এক নাশকতামূলক কর্মসূচী দেয়ায় বিবৃত। এসব কর্মসূচীতে চেয়ারপার্সনের বাইরেও অদৃশ্য শক্তির হাত আছে বলেও মনে করছেন তারা। সিনিয়র অনেক নেতাকে অন্ধকারে রেখে কিছু নেতা চেয়ারপার্সন ও দলকে নাশকতার পথে ঠেলে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। সংস্কারের মাধ্যমে দলের আগাছা নির্মূল না করা হলে আন্দোলনে সফলতা আসবে না মন্তব্য করে ওই সিনিয়র অনেক নেতা বলেছেন, বিএনপির নামে কর্মসূচীসহ যে পাঠানো হচ্ছে কিংবা যারা এসব করছে তাদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নেই। তবে বিএনপির সম্প্রতি তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, কেবল সোমবারের বিবৃতিই নয় গত এক মাসে বেশ কয়েকবার একইভাবে পাঠানো একটি বিবৃতিতে হরতাল অবরোধের বার্তা দেয়া হয়। গত শনিবারও একইভাবে আসে বিবৃতি। বরাবরের মতো ওইদিনও বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটের অন্য কোন নেতা এই হরতালের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেননি। গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নিজেকে ‘অবরুদ্ধ’ দাবি করে সারাদেশে লাগাতার অবরোধ ডেকেছিলেন। পরে পুলিশ পাহারা সরিয়ে নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত গুলশানের ওই কার্যালয়ে রয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে গত এক সপ্তাহে দুইবার বিদেশ থেকে তারকাঁটা এনে বেড়া দিয়েছেন নিজেরাই। গত ছয় ফেব্রুয়ারি বিএনপির নামে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে ৭২ ঘণ্টার হরতালের বার্তা দেয়া হয়েছিল। ২০ দলের পক্ষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের নামে পাঠানো ওই বার্তায় নতুন করে হরতাল কর্মসূচীর কথা বলা হয়। নতুন হরতালের বার্তার নিচেই সালাহ উদ্দিন আহমেদের নামে একটি স্বাক্ষর কেটে এনে বসানো হয়েছে। বলা হয়, ২০ দলীয় জোটের নেত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষে এই হরতাল ডাকা হয়েছে। বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটের অন্য কোন নেতা এ হরতালের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে কোন কথা বলেননি। এর একদিন আগে ৫ ফেব্রুয়ারি যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠানো হয়েছিল। যাতে বলা হয়েছিল, বিএনপি চেয়ারপার্সন ‘যে কোন পরিস্থিতি বা পরিণতির জন্য’ তৈরি। খালেদা জিয়ার পক্ষে এই বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান। নিচে তার নামেই স্বাক্ষর দেয়া হয়। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়ার নামে এই বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের এ আন্দোলন অভীষ্ট লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত চলতে থাকবে। আমি এ আন্দোলনে সকলকে শরীক হতে আবারও উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। ওই বিবৃতির দুই দিন আগে ৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপি-জামায়াত জোটের পক্ষে অজ্ঞাত স্থান থেকে ডাকা হরতাল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে একটি বার্তা এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের নামে প্রচারিত ওই বার্তায়ও তার একটি স্বাক্ষর কেটে এনে বসানো হয়েছিল। বিবৃতি পাঠানো হয় জি-মেইলের একটি ঠিকানা থেকে। সালাহ উদ্দিন আহমেদের নামে বিবৃতি এলেও তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি গণমাধ্যম। কর্মসূচী নিয়ে কথাও বলেননি বিএনপির কোন নেতা। নিশ্চিত হওয়া না গেলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপির জোটের কর্মসূচী হিসেবেই প্রচার করেছিল গণমাধ্যম। যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর গণমাধ্যমে যে বিবৃতিটি এসেছিল তাও ছিল আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা সালাহ উদ্দিন আহমেদের নামে। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেফতার হওয়ার পর দলের বিবৃতি-বক্তব্য অজ্ঞাত স্থান থেকেই রিজভী ওদিয়ে আসছিলেন। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে ফখরুল ও রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান খান দুদু মুখপাত্রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। শামসুজ্জামান গ্রেফতার হওয়ার পর তখন ওই দায়িত্ব নিয়েছিলেন কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন। এদিকে আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে স্বাক্ষর কেটে এনে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লাগাতার নাশকতামূলক কর্মসূচী নিয়ে সোমবার সর্বশেষ অবস্থান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দীন। জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৯ মিনিটে রহভড়@নহঢ়নফ.ড়ৎম মেইল ঠিকানা থেকে গণমাধ্যমে একটি মেইল আসে। যেখানে ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দীন বলেছেন, বিএনপির নামে যেসব কর্মসূচী ঘোষণা করা হচ্ছে তাতে দেশনেত্রীর সমর্থন আছে কিনা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। মেজর হাফিজের নামে পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিএনপি কোন সহিংস কার্যকলাপের পক্ষে নয়। শহীদ জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচী বিএনপি মূলমন্ত্র। সেখানে সহিংসতার জায়গা নেই। কিছু নেতার কারণে দল জিয়াউর রহমানের আর্দশ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। মনে রাখতে হবে ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়’- এ দর্শন থেকে আমরা দূরে সরে গিয়েছি। যার কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে। ক্ষমতায় থাকতে মানুষের ভাগ্য গড়ার পরিবর্তে নিজেদের আখের গড়েছি। এ অবস্থার অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে। সংস্কারের মাধ্যমে দলের আগাছা নির্মূল না করা হলে আন্দোলনে সফলতা আসবে না। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গুলশানের কার্যালয়ে বিএনপি নেতাদের কেউই খালেদা জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তার টেলিফোন, ফ্যাক্স ইন্টারনেট সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তিনি এক মাস ধরে অবরুদ্ধ। তার সঙ্গে নেতাকর্মীরা যোগাযোগ করতে পারছে না। এ অবস্থায় বিএনপির নামে যেসব কর্মসূচী ঘোষণা করা হচ্ছে, তাতে দেশনেত্রীর সমর্থন আছে কিনা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘ সময় অনিয়ন্ত্রিত ও সহিংস কর্মসূচীর ফলে জনমনে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তা আমাদের অনুধাবন করা জরুরী। হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচী আমরা দিতে চাই না। সংলাপই সঙ্কট উত্তরণে একমাত্র পথ। সরকারকে আলোচনায় বসতে হবে এবং সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে। আরও বলা হয় ‘বিএনপির নামে যারা এসব করছে তাদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের দল বিএনপি বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর রাজনীতি করতে পারে না। দেশবিরোধী কোন অপশক্তি বিএনপির নামে নাশকতা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে। এদের দায় বিএনপি নিতে পারে না। সূত্রগুলো বলছে বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থান পড়েছে দলটি। হাফিজের বিবৃতিকে ভুয়া দাবি করলেও বিষয়টি জোর দিয়ে বলতে পারছে না দলটি। বিএনপির মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে মেজর হাফিজ তার বনানী বাসায় নেই এবং রবিবার রাতেই তার বাসায় পুলিশী তল্লাশি হয়েছে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, তিনি জানিয়েছেন- তার বক্তব্য দেয়ার প্রয়োজন হলে তিনি প্রচার বিভাগের সহায়তায় বিবৃতি পাঠাবেন। তৃতীয় কথা হচ্ছে, এর আগে কয়েকবার মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সব সময় প্রকাশ্যেই কথা বলেন তিনি। এছাড়া যে ই-মেইল ঠিকানা থেকে বিবৃতি পাঠানো হয়েছে, এটি বিএনপির কোন মেইল নয় বলে দাবি করেন শায়রুল কবির খান। এদিকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কাছাকাছি থাকা কিছু নেতার কর্মকা- নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঝে। চেয়ারপার্সনের পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর সমবেদনা জানাতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গেট থেকে ফিরিয়ে দেয়া, আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে আল কায়েদার মতো দল পরিচালনা করা নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। সূত্রগুলো বলছে, দলটির পরিচালনায় সিনিয়র নেতারা অনেকেই পাত্তা পাচ্ছেন না। মিডিয়া ইউং চলছে চেয়ারপার্সনের কাছে থাকা কয়েকজন ব্যক্তির মাধ্যমে। দলটি আসলে কারা চালাচ্ছে তা নিয়েই সন্দিহান অনেক নেতা। তারা বলছেন, বড় ধরনের সঙ্কটের মুখোমুখি বিএনপি। আন্দোলনের নামে দেশজুড়ে নাশকতাকে উস্কে দেয়ার দায় খালেদা জিয়া আর তার বড় ছেলে তারেক রহমানের ওপর দিতে শুরু করেছেন দলটির শীর্ষ অনেক নেতাই। প্রকাশ্যে এখনই মুখ না খুললেও তারা ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলাপে জানাচ্ছেন, জামায়াতের পরামর্শে তারেক রহমানের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটাতে গিয়ে খালেদা জিয়া সবাইকেই ঝুঁকির মুখে দাঁড় করিয়েছেন। পাশাপাশি বিএনপির মতো একটি সংগঠনের কর্তৃত্ব তুলে দিয়েছেন একটি ছোট্ট গ্রুপের হাতে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সিনিয়র সদস্য বলছিলেন, কোকোর মৃত্যুর পর যখন সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের গেট বন্ধ পেয়ে অপেক্ষা করে ফিরে যান, তখনই ভেতরে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। ওই সময় ভেতরের একটি ঘরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে ভেতরে এনে অন্তত বসতে দেয়ার পক্ষে মত দেন। কিন্তু এর প্রতিবাদ করেন দুজন জুনিয়র নেতা ও গুলশান কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তা। বাদানুবাদ প্রবল আকার ধারণ করলে এক জুনিয়র নেতা ঘর থেকে বেরিয়ে যান। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ইতোমধ্যেই বলেছেন, দলে আসলে সিদ্ধান্ত নেয়ার লোক নেই। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বিষয়টি নিয়ে আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্যের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। আমরা সবাই একমত হয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রী আসলে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে। কিন্তু দুই-একজন দ্বিমত পোষণ করেছিল। তখন আমি বলেছিলাম- আমরা সভ্য দল। আমরা অসভ্য আচরণ করতে পারি না। তাহলে কিভাবে চলছে দলটি এই প্রশ্ন এখন দলের নেতাকর্মীদেরই। সম্প্রতি সাংবাদিক কাজী সিরাজ বেসরকারী একটি টেলিভিশনের এক টক শোতে বলেছেন, বিএনপি চালাচ্ছে অফিস স্টাফরা। অফিস স্টাফ বলতে এখানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বেতনভুক্ত স্টাফরা। কাজী সিরাজ বিএনপিপন্থী সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত হলেও দলটির সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে এমন অবস্থানই প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে সভা, সমাবেশ, লিখিত বিবৃতি এমনকি কোন সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত না করে রীতিমতো আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের আদলে গোপন স্থান থেকে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে বিএনপির কর্মকা- পরিচালনা নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিএনপি নেতারা চলে গেছেন আত্মগোপনে। অনেকে একে যুদ্ধাপরাধীর দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের আদলে বিএনপির কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছেন। আলোচনায় কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে আল কায়েদার কৌশল। বিএনপি নেতারা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার খোরাক তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে তবে কি জামায়াত নেতাদের মতো বিএনপিও আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাচ্ছে? মঙ্গলবার সালাউদ্দিনের নামে হরতাল দিয়ে বিবৃতি আসার পর হাসনাত তা ফেসবুক পেইজে বলেছেন, ‘বিবৃতি আর বোমা হামলা-জঙ্গীবাহিনীর সঙ্গে বিএনপি-রাজাকার জোটের সাদৃশ্য স্পষ্ট। জঙ্গীদের সঙ্গে কোন আলোচনা নয়, কঠোরতম উপায়ে দমন করা হোক এদের।’ রাজ্জাক লিখেছেন, তাই খালেদা জিয়া যতবার আন্দোলনের ডাক দেয়, ততবারই কোন সাড়া পায় না। তাই দেশের জনগণের ওপর ক্ষিপ্ত বর্বর খালেদা জিয়া। ক্ষিপ্ত খালেদা জিয়া এখন বাসে-ট্রাকে-রেলে পেট্রোলবোমা মেরে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরে প্রতিশোধ স্পৃহায় মেতেছে। দুবাই থেকে সম্রাট আকবর সালাউনকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, ‘ভাইসাব আপনি দুবাই চলে আসেন, আমার রুম এ থাকবেন আর হরতালের বিবৃতি পাঠাবেন। দেশে থাকা নিরাপদ না, আপনিও গ্রেফতার হয়ে যেতে পারেন। তখন এই ভুতুড়ে বিবৃতি কে পাঠাবে! আর আমার এখান থেকে বিবৃতি পাঠাতে সমস্যাও হবে না। ইন্টারনেটের সুব্যবস্থা আছে, কেউ ইন্টারনেট সংযোগ কেটেও দিতে পারবে না এখানে এসে! নিলিমা লিখেছেন, ‘আল কায়েদার কাছ থেকে ম্যাডাম আর তার ছেলে শিক্ষা নিয়েছেন। জওয়াহিরি এসে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গেছেন কিভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন পরিচালনা করতে হয়। চালিয়ে যান ম্যাডাম’।
×