ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাণিজ্যমেলা শেষ হচ্ছে আজ ॥ বেচাকেনার হিড়িক ছিল কাল

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বাণিজ্যমেলা শেষ হচ্ছে আজ ॥ বেচাকেনার হিড়িক ছিল কাল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩১ জানুয়ারি। কিন্তু টানা অবরোধ ও হরতালে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাড়ানো হয় আরও ১০ দিন। সেই সময়ের ইতি টানার মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার পর্দা নামছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার। এদিকে শেষ মুহূর্তেও বাড়তি ছাড় ও উপহারে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। পছন্দের পণ্য কিনতে তাই মেলায় ছুটছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ক্রেতা। স্টল মালিকরা বিক্রি শেষ করতে আখেরি অফার, একটার সঙ্গে অন্যটা ফ্রি, বাড়তি কিনলে বেশি মূল্য ছাড়সহ দিচ্ছে নানা অফার। ফলে স্টল-প্যাভিলিয়নে চলছে কেনাবেচার হিড়িক। ব্যবসায়ীরা জানান, স্টল ও প্যাভিলিয়নে মজুদ পণ্য ফেরত নিতে গাড়িভাড়াসহ বিভিন্ন খরচ বাড়বে। এ কারণে শেষ দিকে বেশি ছাড় দিয়ে হলেও পণ্য বিক্রি করে খরচ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন তারা। আর ক্রেতারাও প্রতিবছরের মতো এবারও শেষ সময়ে এ অফার উপভোগ করে কেনাকাটা করছেন। ফলে শেষ সময়ে বিক্রি বেড়েছে। মেলার আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছে, সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অতিথিদের আমন্ত্রণপত্র দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি মেলায় অংশ নেয়া শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন, স্টল ও করদাতাদের পুরস্কার দেবেন। সোমবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে অনেকটা ফাঁকা থাকলেও দুপুরের পর ক্রেতার পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। পছন্দের দেশী-বিদেশী গয়না, গৃহস্থালি, পোশাক ও প্লাস্টিকসামগ্রী কেনাকাটায় ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার টানা অবরোধ-হরতাল ও সহিংসতার কারণে মেলা আশানুরূপ জমে ওঠেনি। তবে বিভিন্ন পণ্যে ছাড় ও উপহার থাকায় শেষ মুহূর্তে ক্রেতা বাড়ছে। এখন আর ক্রেতারা বেশি সময় মেলায় থাকছেন না। পণ্য কিনেই ফিরে যাবেন। এ কারণেও গত বছরের তুলনায় ভিড় কম মনে হচ্ছে। তবে শেষ সময়ে কেনাবেচা ভাল বলে জানান বিক্রেতারা। স্মার্টেক্সের প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ মোহাম্মদ রুবেল রানা বলেন, মেলার শেষ সময়ে জমজমাট থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তাছাড়া প্যাভিলিয়নের অবিক্রীত পণ্য বেচা শেষ করতেই অফার দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শুরুতে ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়া হলেও এখন ৭০ শতাংশ ছাড় দেয়া হচ্ছে। অন্যান্য পোশাকের স্টলে আগে ১০-২০ শতাংশ যেসব পণ্যে ছাড় ছিল, তা এখন ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড় দেয়া হচ্ছে। বিশেষ কিছু পণ্যে ৫০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। কেবল দেশী পোশাকে ছাড় সীমাবদ্ধ নয়, বিদেশী পোশাকেও ছাড় রয়েছে। ওয়ালটনের প্যাভিলিয়ন ম্যানেজার আকরামুজ্জামান অপু জানান, মেলার প্রথম থেকেই ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের ভিড় ছিল, বিক্রয়ও হচ্ছে আশানুরূপ। বিক্রির দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে মোবাইল ও ফ্রিজ। গতবারের তুলনায় ওয়ালটনের বিক্রি বেড়েছে ১০ শতাংশ। ওয়ালটন আগের ধারাবাহিকতায় এবারও বিক্রির শীর্ষে রয়েছে। পণ্য বিক্রি বাড়ায় সরকারের কোষাগারে ভ্যাট প্রদানেও এগিয়ে রয়েছে ওয়ালটন। এ ছাড়া প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের স্টলেও চলছে ছাড়ের অফার ও উপহার। এসব পণ্যে ১০-২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া হচ্ছে। বেঙ্গল প্লাস্টিকের কর্মকর্তা আলিম উল্লাহ খান বলেন, ছাড়ের জন্য শেষ সময়ে মেলায় বিক্রি বাড়লেও শুরুতে কম হওয়ায় এবার গত বছরের চেয়ে বিক্রি কম হয়েছে। আরএফএল প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর জানান, গত জানুয়ারিজুড়ে প্রতিটি পণ্যে ১২ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া ছিল। কিন্তু হরতাল ও অবরোধে তেমন বিক্রি না হওয়ায় শেষের ক’দিন ২০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।
×