ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘রিয়াল মাদ্রিদই শিরোপা জয় করবে’

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

‘রিয়াল মাদ্রিদই শিরোপা জয় করবে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে এবার গোলের মালা উপহার দিয়েছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন রিয়ালকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে লা লিগার বর্তমান শিরোপাধারী এ্যাটলেটিকো। দিয়াগো সিমিওনের দলের এই জয়ে শিরোপা লড়াইও জমে উঠল। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, সম্প্রতি বছরগুলোতে কিছুতেই এ্যাটলেটিকোর বিরুদ্ধে সাফল্য পাচ্ছে না রিয়াল। গত বছরের ২৪ মে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে প্রতিবেশী ক্লাবটিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে রেকর্ড দশমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয় করে লস ব্লাঙ্কোসরা। ব্যস, এই শেষ। এরপর একে একে ছয়টি ম্যাচ খেলেছে দু’দল। কিন্তু রিয়ালের জয় নেই একটিতেও! চারটি ম্যাচ জেতেছে এ্যাটলেটিকো। বাকি দুটি ড্র। এর মধ্যে স্প্যানিশ সুপার কাপ থেকে বিদায়ঘণ্টাও বাজে রোনাল্ডো, বেল, বেনজেমাদের। তবে পরশু রাতে যা হয়েছে তার সঙ্গে কোনটিই তুল্য নয়। রিয়ালকে এক হালি গোলের মালা পরিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে এ্যাটলেটিকো। লজ্বার এই হারের পরও বর্তমান ফিফা সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বলছেন, এ্যাটলেটিকোর চেয়ে রিয়াল ভাল দল। এবং আমরাই শেষ পর্যন্ত শিরোপা জয়ের হাসি হাসব। তবে এমন গোহারা কিছুতেই মানতে পারছেন না পর্তুগীজ সুপারস্টার। ম্যাচ শেষে রোনাল্ডো বলেন, ভবিষ্যতে উন্নতি করতে হলে আমাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এটা ভুলে যাওয়ার মতো একটা দিন। জঘন্য এই হারের পরও অবশ্য পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে রিয়াল। ২২ ম্যাচ থেকে তাদের পয়েন্ট ৫৪। এক ম্যাচ কম খেলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সিলোনার পয়েন্ট ৫০। ২২ ম্যাচ খেলে সমান ৫০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে এ্যাটলেটিকো। তালিকার শীর্ষে থাকার কারণেই শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বুনছেন সি আর সেভেন। বলেন, আমরা এখনও লীগের শীর্ষে আছি। আমরা জানি, আমাদের শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে হবে। আমরা হেরেছি এবং এ নিয়ে রেগে আছি। কিন্তু আমাদের সামনের ম্যাচগুলো নিয়ে ইতিবাচক থাকতে হবে। কারণ আমরা কেবল তিনটি পয়েন্টই হারিয়েছি। রোনাল্ডো আরও বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ্যাটলেটিকোর চেয়ে রিয়াল সবসময়ই ভাল দল। এবং এবারও আমরা শিরোপা জয় করব। হারের জন্য নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে সদ্যই ৩০ বছরে পদার্পণ করা রোনাল্ডো বলেন, আমাদের সবকিছুরই অভাব ছিলÑইচ্ছা, মনোভাব, আকাক্সক্ষা। শারীরিক বা মানসিকভাবে আমরা সতেজ ছিলাম না। কিন্তু এটাকে আমরা অজুহাত বানাতে পারি না। ভিসেন্টে ক্যালডেরনে চোটের কারণে সার্জিও রামোস, পেপে, জেমস রড্রিগুয়েজ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে মার্সেলো না থাকায় রিয়ালের ভঙ্গুর রক্ষণ নিয়ে সমর্থকদের দুশ্চিন্তা ছিল আগে থেকেই। দুর্বল রক্ষণের পাশাপাশি রিয়ালের বড় ভাবনা হয়ে দাঁড়ায় গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসের ব্যর্থতা। ম্যাচের ১৪ মিনিটে তার অমার্জনীয় ব্যর্থতার কারণেই পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। ডি বক্সের মধ্যে ফাঁক খুঁজে না পেয়ে থিয়াগোকে পাস দেন মারিও মানদুকিচ। বল পেয়েই ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে জোরালো শট নেন পর্তুগীজ এই মিডফিল্ডার। অনেকটা দুর্বল শট ক্যাসিয়াসের হাত লেগে জালে জড়ায়। চার মিনিট পর দুর্দান্ত ব্যাকভলিতে এ্যাটলেটিকোকে দুই গোলে এগিয়ে নেন দশম মিনিটে কোকের বদলে মাঠে নামা সাউল নিগুয়েজ। বিরতির পরও রিয়ালের রক্ষণে একচেটিয়া চাপ ধরে রাখে স্বাগতিকরা। একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে ৬৭ মিনিটে সাফল্যও পেয়ে যায় তারা। তুর্কী মিডফিল্ডার আরডা টুরানের ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দ্বিতীয় গোলদাতা সাউল রিয়ালের ডিফেন্ডার নাচো ফার্নান্ডেসের মাথার ওপর দিয়ে বল বাড়ান। অতিথিদের আরেক ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানেকে দৌড়ে পরাস্ত করে আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান ফরাসী স্ট্রাইকার এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। রিয়ালের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগে দুর্দান্ত হেডে ম্যাচের ৮৯ মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করেন মারিও মানদুকিচ। দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফেরেন রোনাল্ডো। কিন্তু দলের এই বিপর্যয়ে তাকে জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি। দারুণ এই সাফল্যে এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠবারের মতো রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রাখল এ্যাটলেটিকো। ১৯৯৯ সালের পর এটাই রিয়ালের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম নিজেদের মাঠে জয়।
×