ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্পিনে কাত বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

স্পিনে কাত বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের উইকেটে পেস আক্রমণ বাংলাদেশের জন্য ভীতিকর হতে পারে। তা সবারই জানা। সেই ভীতির ছোঁয়া অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে মিলেছেও। তাই বলে স্পিনেও কাত হবে বাংলাদেশ! আবারও হারবে ৬ উইকেটে। স্পিনটা বরাবরই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা ভাল খেলে। অথচ অস্ট্রেলিয়া একাদশের অফস্পিনার এ্যাসটন টার্নারই কিনা সাকিব, মুশফিকদের কাঁপিয়ে দিয়েছেন। যে ক্রিকেটার এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই খেলেননি। মাত্র ৮টি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন, সেই টার্নারই ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ১৯৩ রানে গুটিয়ে দেয়ার পর ব্যাট হাতেও আবার দুর্দান্ত। অপরাজিত ৭১ রান করে ম্যাচও জিতিয়েছেন। এক টার্নারের কাছেই হার হয়ে গেছে বাংলাদেশের! সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। তাহলে বাংলাদেশ কী করল। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচেও হারল। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে তবু ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে রান মিলেছিল। এবার তো করুণ দশা হয়েছে। এক নাসির হোসেন (৫২) ছাড়া আর কেউই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩৬ ও সাব্বির রহমান রুম্মন ৩৩ রান করেছেন। কিন্তু বাকিরা এতটাই ব্যর্থ হয়েছেন যে দলও ব্যর্থ হতে বাধ্যই হয়েছে। ৫৭ রানেই বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছে। ৬ রানে এনামুল হক বিজয়, ২৩ রানে সৌম্য সরকার, ৪০ রানে আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক, ৪৩ রানে সাকিব ও ৫৭ রানে মুশফিক আউট হন। এরপর মাহমুদুল্লাহ-সাব্বির মিলে দলকে ১২১ রানে নিয়ে যান। এমন সময় সাব্বির আউট হতেই মাহমুদুল্লাহও সাজঘরে ফেরেন। নাসির হোসেন নিজেকে সামলে খেলেন। অর্ধশতকও করেন। দলও ১৯৩ রান করতে পারে। তামিম ইকবাল এ ম্যাচেও খেলেননি। এবার সেই না খেলার তালিকায় যুক্ত হয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজাও। তাই নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। যার ওপর এত ভরসা সেই সাকিব কিছুই করতে পারছেন না। ব্যাট হাতে মাত্র ২ রান করেন। আর বল তো করেনইনি। সাকিব ও মুশফিক ছাড়া বাকি সবাই বোলিং করেন। নিজেদের ভালভাবেই ঝালাই করে নেয়া হয়। কিন্তু ফল যে হারই হয়। এ বিষয়টি সবাইকেই এখন চিন্তিত করে তুলবে স্বাভাবিক। বল হাতে আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আরাফাত সানি, তাইজুল ইসলাম, নাসির হোসেন ও মুমিনুল হক বল করেন। কিন্তু স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানদের ঠেকানো যায়নি। আল আমিন, সৌম্য, সাব্বির ও মাহমুদুল্লাহ ১টি করে উইকেট নিতে সক্ষম হন। টার্নার একাই অপরাজিত ৭১ রান করে ম্যাচ জিতিয়ে দেন। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে প্রথম দুই ম্যাচেই হার হয়েছে। যা দলের সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কা তৈরি করে দিয়েছে। এ ম্যাচটিতে ‘ক্লার্ক’কে সামলানোর পরীক্ষায় নামতে হয়েছে বাংলাদেশকে। শুরুতে কথা ছিল, ক্লার্ক শুধু ব্যাটিং করবেন। কিন্তু ব্যাট, বল ও ফিল্ডিং-সবই করলেন ক্লার্ক। ইনজুরি থেকে মুক্ত হতে যানপরানই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ক্লার্ক। তাতে অনেকটাই সফল হতে পেরেছেন। ক্লার্ক ২ ওভার করে ৬ রান দিয়েছেন। ব্যাট হাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেছেন। ইনজুরি নিয়েও ক্লার্ক যেমনটি খেলল, তাতে বোঝাই যাচ্ছে বড় তারকা ক্রিকেটারকে সামলাতে হিমশিম খাওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ দলের দুর্বলতাই শুধু বের হলো। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে পেসারদের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের অসহায় লেগেছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশ পেসাররা বিশেষ কিছুই করে দেখাতে পারেননি। ব্যাট হাতে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটেই অভিজ্ঞ নন, এমন ব্যাটসম্যানরা যেখানে রান পেয়েছেন; সেখানে বাংলাদেশের সাকিব, মুশফিকের মতো ব্যাটসম্যানরা অনুজ্জ্বল থেকেছেন। দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচেও একই দশা দেখা গেছে। স্বাগতিক দলের স্পিনাররা যেখানে সফল হয়েছেন, সেখানে বাংলাদেশ দলের স্পিনারদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি। আর ব্যাট হাতে মুশফিক, সাকিবরা তো অসহায়ই ছিলেন। এমন যখন অবস্থা, তখন বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ কী করবে সেই শঙ্কা তৈরি হয়ে গেছে। এখন ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি যে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ রয়েছে, সেটিতেই আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় নামতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের। স্কোর ॥ বাংলাদেশ ইনিংস ১৯৩/১০; ৪৩.১ ওভার (সৌম্য ১৫, বিজয় ২, মুমিনুল ১৩, মাহমুদুল্লাহ ৩৬, সাকিব ২, মুশফিক ৫, সাব্বির ৩৩, নাসির ৫২, আরাফাত ১৪, রুবেল ১, তাইজুল ০*; টার্নার ৪/৩০, কনওয়ে ২/২৩)। অস্ট্রেলিয়া একাদশ ইনিংস ১৯৪/৪; ৪১.৫ ওভার (টার্নার ৭১*, ক্লার্ক ৩৪, পিয়েরসন ২৯, বসিস্তো ২১; মাহমুদুল্লাহ ১/১৪, সাব্বির ১/২১, সৌম্য ১/২৩, আল আমিন ১/৪৬)। ফল ॥ বাংলাদেশ ৬ উইকেটে পরাজিত।
×