ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ২৫ হাজার ট্যাব বিতরণ

’১৬ সালের মধ্যেই ফোর জি ফোন সুবিধা ॥ জয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

’১৬ সালের মধ্যেই ফোর জি ফোন সুবিধা ॥ জয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ২০১৬ সালের মধ্যে ফোর জি সুবিধার নিলাম অনুষ্ঠান করা হবে। এ সরকারের মেয়াদেই ফোর জি ফোন(চতুর্থ প্রজন্ম) সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ২৫ হাজার ট্যাব বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমরা থ্রি জি (তৃতীয় প্রজন্মের) ফোন সেবা বাস্তবায়ন করেছি। ২০১৫ সালের মধ্যে এই সেবা উপজেলা পর্যায় পৌঁছে যাবে। আমরা কখনও একটা পর্যায়ে থেমে থাকতে চাই না। একটা টার্গেটে খুশি না হয়ে তথ্য প্রযুক্তির সব সেক্টরের উন্নয়নে খুশি হতে চাই। প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে , ২০১৬ সালে ফোর জির স্পেকট্রাম বসানো হবে। এমনকি ’১৬ সালেই ফোর জি সেবা গ্রাহকরা ব্যবহার করতে পারবেন। দেশের গ্রামাঞ্চলেও এই সেবার পরিধি বাড়ানো হবে। আমরা গ্রাম ও শহরের মধ্যে কোন পার্থক্য রাখতে চাই না। শহরের মানুষ শুধু প্রযুক্তির সেবা পাবেন আর গ্রামের মানুষ পাবেন না। এমন বৈষম্য রাখা হবে না। দেশকে তথ্য প্রযুক্তির দিক থেকে এগিয়ে নিতে হলে সারাদেশেই সমভাবে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান সরকার এই উদ্দেশেই কাজ করে যাচ্ছে। ইন্টারনেট হয়ে যাচ্ছে আমাদের সাধারণ একটি সেবা, ভবিষ্যতের জন্য করতে হবে ইন্টারনেট নিউট্র্যালিটি বা নেট নিউট্র্যালিটি পলিসি। একটি স্ট্রং পলিসি করার দায়িত্ব দেব, যাতে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, ইন্টারনেট যাতে সব মানুষের কাছে সমান থাকে ও কম খরচে সবার কাছে পৌঁছতে পারে। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক স্বপ্ন ছিল। তাঁর সেই স্বপ্ন একের পর এক বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই আমাদের মূল কাজ। আমারও ব্যক্তিগত একটি স্বপ্ন রয়েছে। আর এই স্বপ্ন হচ্ছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার। এই স্বপ্নের অনেক কিছুই বাস্তবায়ন হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সেক্টরে আরও উন্নয়ন ঘটবে। এখনই মানুষ তথ্য প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। দেশের মানুষের উন্নয়নই ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য। সবকিছু দুর্নীতি করলেও কম্পিউটার কখনও দুর্নীতি করে না। দেশের প্রতিটি মানুষের যেন সরকারী সেবা পেতে কষ্ট না হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি রয়েছে। দেশের সব অফিস তথ্য প্রযুক্তির আওতায় এলেই দুর্নীতি বহুগুণে কমে যাবে। ধীরে ধীরে আমরা সেই কাজটিই করে যাচ্ছি। ছয় বছর আগে ডিজিটাল বলে কিছু ছিল না। ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন পুরস্কার আমরা পেয়েছি। দুই লাখ সরকারী ডাটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। সবার আগে এখন আমাদের সাইবার সিকিউরিটির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে সাইবার হামলায় কোন তথ্য বিলীন না হয়ে যায়। আর এটা করতে পারলে দেশে তথ্য প্রযুক্তির ভিত্তি আরও শক্ত হবে। যদি সাইবার সিকিউরিটি না তৈরি করা যায় তাহলে এগুলো রক্ষা করা মুশকিল হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দেশের ২৫ হাজার সরকারী কর্মকর্তাকে ট্যাবলেট দেয়া হচ্ছে। ২৫ হাজার ট্যাবের মধ্যে বৃহস্পতিবার ১৮ হাজার ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। সরকারী কর্মকর্তাদের হাতে ট্যাব তুলে দেয়ার কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সরকারী কর্মকর্তাদের হাতে ট্যাব তুলে দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন। ভিডিও কনফারেন্সের সময় টুঙ্গিপাড়া ও রংপুরের পীরগঞ্জে উপস্থিত সরকারী কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে জয় বলেন, শুধু পীরগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়ায় ভিডিও কনফারেন্স নয়, দেশের সব উপজেলার সঙ্গে যাতে ভিডিও কনফারেন্স করা যায় তার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা দেশের জন্য কাজ করতে চাই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। আপনারা এই সরকারকে সহযোগিতা করবেন তা আমরা আশা করি। এ সময় বিতরণ করা ট্যাবগুলো যথাযথভাবে ব্যবহার করতে সবার প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ‘ইনফো সরকার-২’ নামের একটি প্রকল্পের আওতায় কর্মকর্তাদের এই ২৫ হাজার ট্যাব দেয়া হচ্ছে। এ বছরের জুনের মধ্যে সরকারী দফতর নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। এছাড়া দেশের সব উপজেলাকে ফাইবার অপটিক্যাল কেবলের আওতাভুক্ত করার কাজ চলছে। ট্যাব বিতরণ অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস উপস্থিত ছিলেন।
×