ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে ৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার ৮ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

একনেকে ৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার ৮ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গ্যাস পাইপ লাইন সম্প্রসারণসহ আটটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৪৯০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিলের ১ হাজার ৬৩৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা ২ হাজার ৮৪৭ কোটি ১ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সুরাইয়া বেগম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরাস্তু খান, শফিকুল আজম, গোলাম ফারুক, ড. হুমায়ুন খালিদসহ পরিকল্পনা কমিশনের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, পাঁচ লাখ দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও শূণ্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী সন্তানের মা যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদের এখন থেকে নগদ অর্থ প্রদান করবে সরকার। দেশের রংপুর ও ঢাকা বিভাগের ৭টি জেলার ৪২টি উপজেলার ৪৪৩টি ইউনিয়নের ১৬ লাখ পরিবার থেকে এই ৫ লাখ দুস্থ মহিলা বাছাই করা। দরিদ্র মায়েদের দারিদ্র্য নিরসনের পাশাপাশি তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়টি নিশ্চিত করতেই সরকার এ নগদ অর্থ প্রদানের কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার এত উন্নয়ন কাজ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন বাংলাদেশের প্রশংসা করছে ঠিক সে সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কোন যুক্তি নেই। বিএনপির পক্ষে কোন জনমত সৃষ্টি হচ্ছে না, বরং মানুষ তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। কেউ যদি মনে করে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তান বানাবে তাহলে কিভাবে দেশে শান্তি আসবে। সরকার কি করতে পারে? অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ধুনুয়া-এলেঙ্গা এ্যান্ড ওয়েস্ট ব্যাংক অব বঙ্গবন্ধু ব্রিজ নলকা গ্যাস ট্র্যান্সমিশন পাইপ লাইন গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৯৭৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গৌরীপুর-হোমনা সড়কটি কুমিল্লা-সিলেট হাইওয়ে পর্যন্ত সম্প্রসারণ প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ৫০টি বিজি ও ৫০টি এমজি যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন প্রকল্প, ব্যয় হবে ৭১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। ইনকাম সাপোর্ট প্রগ্রাম ফর দ্যা পুওরেস্ট (আইএসপিপি) প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প, বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬৭৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কিশোরগঞ্জ, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলার যমুনেশ্বরী, চিকলী ও চারলকাটা নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প, বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। বরেন্দ্র এলাকায় খালে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সম্প্র্রসারণ প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের বিস্তারিত হচ্ছে, গ্যাস সম্প্রসারণে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সহায়তায় এলেঙ্গা পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের প্রায় ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ লাইন স্থাপন হচ্ছে। ফলে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে জাতীয় গ্রীডে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। সেই সঙ্গে বিদ্যমান ও নির্মাণাধীন বিদ্যুত কেন্দ্র, সার কারখানা ও অন্যান্য কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়-নলকা-হাটিকুমরুল-ঈশ্বরদী-ভেড়ামারা (৩০ ইঞ্চি ব্যাস সম্পন্ন ১০১ কিলোমিটার) পর্যন্ত উচ্চচাপ গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন সংক্রান্ত একটি মূল প্রকল্প ছিল। কিন্তু বৈদেশিক সহায়তার অভাবে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত হতে নলকা পর্যন্ত উচ্চচাপ গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন অংশটির কাজ সমাপ্ত করা যায়নি। এ প্রেক্ষাপটে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন নির্মাণ করে জাতীয় গ্রীডে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
×