ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তির পক্ষে নাশকতা রুখতে ব্যবসায়ীরা নামছেন রাজপথে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

শান্তির পক্ষে নাশকতা রুখতে ব্যবসায়ীরা নামছেন রাজপথে

এম শাহজাহান ॥ কর্মসূচীর শিরোনাম হচ্ছে ‘সবার ওপরে দেশ।’ দেশই প্রিয়, দেশই বড়। দেশে এই মুহূর্তে শান্তি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কিন্তু গুটিকয়েক সন্ত্রাসী নাশকতা, বোমাবাজি এবং যাত্রীবাহী বাস ও রেলে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে সেই শান্তি নষ্ট করছে। স্বাধীনতার ৪৩ বছরে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে যে অর্থনীতি তাও পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে। আর তাই এবার ‘দেশ বাঁচাও অর্থনীতি বাঁচাও এই সেøাগান নিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচী পালন করবেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় পতাকা হাতে ব্যবসায়ী-জনতা শামিল হবেন এক কাতারে। চলমান হরতাল-অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার এই কর্মসূচী আহ্বান করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফবিসিসিআই। জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। এফবিসিসিআই বলছে, পেট্রোলবোমায় যাত্রীবাহী পরিবহনের শান্তিপ্রিয় মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এতে মানুষের মধ্যে এক ধরনের এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ জন্য এখন শান্তি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। শান্তি ফিরে না আসলে অর্থনৈতিক কর্মকা-ও মুখ থুবড়ে পড়বে। সংগঠনটির এই কর্মসূচীর প্রতি ইতোমধ্যে সমর্থন দিয়েছে খাতভিত্তিক দেশের ৪ শতাধিক এ্যাসোসিয়েশন এবং ৬৪টি জেলা চেম্বারসহ আরও ১১টি জয়েন্ট চেম্বারের প্রতিনিধিরা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, ব্যবসায়ীরা সব সময় শান্তির পক্ষে। স্বাধীনতার ৪৩ বছরে সরকারী সহযোগিতায় তিলে তিলে ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতি গড়ে তুলেছে। বেসরকারী খাত এগিয়ে যাওয়ায় সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে কয়েকগুণ। নিজস্ব অর্থায়নে এখন বাজেট তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ এক নম্বর হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। মধ্য আয়ের দেশের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সব কিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হরতাল-অবরোধ, নাশকতা ও সহিংসতার কারণে। এজন্য এই নাশকতা আগে বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, নাশকতা বন্ধ করে দেশে শান্তি ফিরে আসলে প্রয়োজনে এফবিসিসিআই সংলাপের তাগিদ দেবে। কিন্তু নাশকতা ও সংলাপ এক সঙ্গে চলতে পারে না। ইতোমধ্যে মন্ত্রীরাও এ বিষয়ে কথা বলছেন। ব্যবসায়ীরাও মনে করে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, এফবিসিসিআইয়ের এই কর্মসূচীর প্রতি ব্যবসায়ীসহ দেশের সাধারণ জনতাও শামিল হবেন। জানা গেছে, অবস্থান কর্মসূচী ১২টায় শুরু হয়ে তা শেষ হবে ১৫ মিনিটেই। ওই সময়ে জাতীয় পতাকা হাতে দেশের সকল চেম্বার ও এ্যাসোসিয়েশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচীর পাশাপাশি সমাবেশ চলবে। এছাড়া বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও অফিসের সামনেও এই কর্মসূচী পালন করবেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে সড়ক ও মহাসড়কে যেখানে লোকজন সহজে জমায়েত হতে পারে সেখানেও অবস্থান নেয়া হবে। সবচেয়ে বড় অবস্থান কর্মসূচী পালিত হবে মতিঝিল ফেডারেশন ভবনের সামনে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এফবিসিসিআই থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত তাদের অবস্থান ছড়িয়ে পড়বে। এ প্রসঙ্গে নিটল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আবদুল মাতলুব আহমদ জনকণ্ঠকে বলেন, এই কর্মসূচীর প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সারাদেশের মতো মহাখালীর নিটল নিলয় গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ের সামনেও অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হবে। তিনি বলেন, আমরা শান্তি চাই। সবার ওপরে দেশ। এই দেশ, দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য এখন শান্তি প্রয়োজন।
×