ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

সাহিত্য আলোচনা ও পাঠ, আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সাহিত্য আলোচনা ও পাঠ, আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাহিত্য আলোচনা ও পাঠের মধ্য দিয়ে সোমবার থেকে শুরু হলো আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। জাতির মেধা ও মননের প্রতীক বাংলা একাডেমির ৬০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে গ্রন্থমেলার পাশাপাশি এ বছর চার দিনব্যাপী এ সম্মেলন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এতে অংশ নিচ্ছেন ফ্রান্স, ভারত, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, সুইডেন, ডেনমার্ক, জার্মান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিকরা। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় এ আয়োজন। ‘এই সময়ের সাহিত্য (কথাসাহিত্য)’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় প্রথম অধিবেশনে। এতে আলোচনায় অংশ নেন ভারতের বিহার রাজ্যের বাংলা একাডেমির অধ্যক্ষ দিলীপ সিংহ, কথা সাহিত্যিক জ্যোতি প্রকাশ দত্ত এবং কবি ও উপন্যাসিক নবনীতা দেব সেন। এ অধিবেশনের শুরুতে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সৈয়দ শামসুল হক। বিহার বাংলা একাডেমির অধ্যক্ষ দিলীপ সিংহ বলেন, মাতৃভাষা বাংলা আমার জননী। বিহার ও ঢাকার বাংলা একাডেমির সঙ্গে অনেক সামঞ্জস্য আছে। বলা যায় বিহার বাংলা একাডেমি ঢাকার বাংলা একাডেমির আদর্শ। লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য বিহার বাংলা ভাষাভাষী মানুষ গর্বিত। সেখানের সাড়ে চার লাখ বাঙালী সমাজ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় তাদের আবিষ্কার ফিরে পেয়েছে। আমি আশাকরি হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেও একদিন বাঙালী জাতীয় চেতনাকে অবশ্যই রক্ষা করতে পারবে। কোন বাধাই তাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। জ্যোতি প্রকাশ দত্ত বলেন, কথাসাহিত্য বলতে সব সময়কার বর্তমান সময়কে বুঝি। সেই আমলের পূর্ববাংলা। তখন সুস্পষ্ট বোঝা যেত না আমাদের সাহিত্য কোন দিকে যাচ্ছে। তখন পাঠকের কাছে সাহিত্য পৌঁছে দেয়া আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য ছিল। এ ক্ষেত্রে অনেকটা গতি সঞ্চার করেছিল ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন। সামরিক শাসনের পরবর্তী সময়ে এটা আরও বেশি প্রকাশ পেয়েছিল। ’৯০-এর দিকে লেখকরা আরও বেশি সচেতন হয়। আমাদের লেখকদের মধ্যে অনেক বেশি গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফুটে উঠেছে। উপন্যাসিক নবনীতা দেব সেন বলেন, আমি ইংরেজীর মাস্টার হয়েও বাংলার মধ্যে বড় হয়েছি। বাংলাভাষার বর্তমান পরিস্থিতি খুব ভাল নয়। আপনি ইংরেজীতে লিখলে আন্তর্জাতিক হয়ে যাবেন কিন্তু বাংলাতে লিখলে নয় কেন। যদিও কিছু কিছু অনুবাদ এখন হচ্ছে। আমাদের আন্তর্জাতিক আত্মসম্মানবোধের অভাব আছে। কোন এক সময়ে নারীদের কলম ছিল বোরখা পরা কলম, কিন্তু এখন আর নেই। এটা সাহিত্যের জন্য ভাল। দলিতের মুক্তি হয়েছে কলমে। এরপর দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রশ্ন উত্তর পর্বে অংশ নেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তৃতীয় অধিবেশনে ছিল ভারতের লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ও লেখিকা সেলিনা হোসেনের সঙ্গে আলাপচারিতা। চতুর্থ অধিবেশনে লেখক নিয়াজ জামানের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন মনজু ইসলাম ও কাজী আনিস আহমেদ। সবশেষে অনুষ্ঠিত হয় সাহিত্য থেকে পাঠ ও আলোচনা। এতে অংশ নেন পূরবী বসু, আনোয়ারা সৈয়দ হক, ইমদাদুল হক মিলন, নবনীতা দেব সেন, মঈনুল আহসান সাবের, নাসরীন জাহান, আনিসুল হক, জাকির তালুকদার ও ইনামুল হক। শিল্পকলায় শুরু হলো চায়না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ॥ ‘ডানহুয়াং মেলোডি চার্ম অব দ্য ইস্কিলরোড’ শিরোনামে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় সোমবার থেকে শুরু হয়েছে চায়না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ-চায়না কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪০ বছর পূর্তি ও চীনা নববর্ষ উপলক্ষে এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে যৌথভাবে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার, বাংলাদেশে অবস্থিত চায়না দূতাবাস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সন্ধ্যায় এতে অংশ নিয়েছে গানসু অপেরা হাউজ অব চায়নার শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও চীনা রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম রানা। ‘পাইপার বাউস’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে প্রাচীন চীনের ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সব শেষে এ্যাক্রোবেটি ও জাদু প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
×