ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাম বদলে গোল্ডেন লাইফ হয়েছে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স

জামালপুরে গ্রাহকের কোটি টাকা হাপিস

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জামালপুরে গ্রাহকের কোটি টাকা হাপিস

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ৩১ জানুয়ারি ॥ বীমা গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ হয়েছে সান ফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ। গ্রাহকরা বীমার টাকা ফেরত পেতে বিভিন্ন মহলে ঘুরলেও এগিয়ে আসছে না কেউ। জানা গেছে, সঞ্চয় সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামালপুর শহরের বকুলতলায় একটি ভবন ভাড়া নিয়ে কয়েক বছর আগে কার্যক্রম শুরু করে গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ। নানা ধরনের সুযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেলার হাজার হাজার মানুষকে পলিসি করায় এবং প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। এই ইন্স্যুরেন্সের জামালপুরের জেএএমডির দায়িত্ব পালন করছেন আনজুমান আরা বেগম। ডিজিএম হয়েছেন তার স্বামী সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহসহ মোট ৩ জন। তারা এই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির নাম দিয়ে জেলার হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে বীমা পলিসির প্রিমিয়াম গ্রহণ করে। কোটি কোটি টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করার পর প্রভাবশালী জিন্না ও তার স্ত্রী কোম্পানির নাম সম্প্রতি পরিবর্তন করে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিমিটেড করেছেন। একই অফিস ভবন, একই কর্মকর্তা ও একই আসবাবপত্র দিয়ে চলছে তাদের নতুন কোম্পানি। এই কোম্পানির নামে চলছে বীমা পলিসি গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ। গ্রাহকদের দেয়া হচ্ছে নানা ধরনের সুযোগের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু বিপাকে পড়েছেন গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কয়েক হাজার গ্রাহক। যারা দিয়েছেন প্রিমিয়ামের কোটি কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার বিকেলে গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বীমা পলিসির গ্রাহকরা বকুলতলায় সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিমিটেড ঘেরাও করে তাদের টাকা ফেরত চান। কিন্তু প্রভাবশালী সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্না পুলিশ দিয়ে গ্রাহকদের অপমান অপদস্ত করে অফিস থেকে বের করে দেয়। এ সময় ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা তাদের আত্মসাতকৃত কোটি কোটি টাকা ফেরত দেয়া এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়ে সেøাগান দেন। জামালপুর সদর উপজেলার শৈলেরকান্দা গ্রামের উমর ফারুক জানান, তিনি গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সে একটি বীমা পলিসি খোলেন। তাতে তিনি ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। হঠাৎ করে খবর পান গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অফিস উধাও হয়েছে। অফিস ভবনে ঢুকে দেখেন শুধু সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে পূর্বের কর্মকর্তারাই সানফ্লাওয়ার নাম দিয়ে অফিস করছেন। টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে উল্টো অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে তিনি অপমান অপদস্ত হয়েছেন। একই এলাকার ছাহেরা বেগম জানান, তিনি বীমার ৭ কিস্তি দিয়েছেন। কাগজে কলমে তার ৩ কিস্তি জমা হয়েছে। এ রকম অভিযোগ অসংখ্য গ্রাহকের। গ্রাহকদের তাড়ানো হয়েছে এলাকার কতিপয় ক্যাডার ও পুলিশ দিয়ে। সানফ্লাওয়ার ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ-এর ডিজিএম সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জানান, সম্প্রতি গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ পরিবর্তন করা হয়েছে। তারা সানফ্লাওয়ারে যোগ দিয়েছেন। গ্রাহকদের পলিসি সচল করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। বীমার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্না ও তার স্ত্রী আনজুমান আরাসহ এর সঙ্গে জড়িতদের সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বীমা পলিসির গ্রাহকরা।
×