ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের সেমির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল মালয়েশিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশের সেমির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল মালয়েশিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শনিবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ফুটবল আসর ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’-এ গ্রুপ ‘এ’র ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জাতীয় ফুটবল দলকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মালয়েশিয়া অনুর্ধ-২৩ জাতীয় ফুটবল দল। এ জয়ে বেঁচে থাকল স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের সেমিতে খেলার স্বপ্ন। এ জন্য বাংলাদেশ ধন্যবাদ দিতেই পারে মালয়বাহিনীকে! মালয়রা যদি শনিবার হেরে যেত লঙ্কাবাহিনীর (ফিফা র‌্যাঙ্কিং ১৭২) কাছে, তাহলে লঙ্কানদের বেশি গোলে হারিয়ে (ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলা-লঙ্কা মুখোমুখি হবে ২ ফেব্রুয়ারি) সেমিতে উঠার কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকবেলা করতে হতো বাংলাদেশকে (ফিফা র‌্যাঙ্কিং ১৬৫), যা তাদের জন্য হতো একপ্রকার অসম্ভবই। এখন লঙ্কানদের বিরুদ্ধে জয় নয়, ন্যূনতম ড্র করলেই স্বপ্নের সেমিফাইনালে উঠতে পারবে বাংলাদেশ। শনিবারের জয়ে ২ ম্যাচের সবই জেতে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সবার আগে শেষ চারে নাম লেখাল ১৫৪ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী মালয়েশিয়া। এই সিলেটের মাঠেই আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম সেমিফাইনালে খেলবে তারা। প্রতিপক্ষ হবে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ (বাহরাইন, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে যে কোন একটি দল) দল। শ্রীলঙ্কা জিতলে বিপদ, মালয়েশিয়া জিতলে সুবিধাÑ বিষয়টা ভালমতোই জানা ছিল খেলা দেখতে আসা সিলেট দর্শকদের। কাজেই গলা ফাটিয়ে তারা সমর্থন জুগিয়েছে মালয়বাহিনীকে, যারা কি না দু’দিন আগেই হারের স্বাদ উপহার দিয়েছিল স্বাগতিকদের (১-০)! দর্শকদের এই সমর্থন পেয়ে মালয় ফুটবলাররাও দারুণ উজ্জীবিত হয়ে খেলেছে। প্রতিদান দিয়েছে তাদের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনের। ম্যাচে শ্রীলঙ্কা হারলেও তারা খেলেছে দুর্দান্ত। লড়াই করেছে সমানতালে। একবার তারা মালয়দের গোলপোস্টেও বল লাগিয়েছে। কিন্তু ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন হওয়াতে কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায়নি তারা। খেলা শুরু হলে উভয়দলই সতর্ক ও ধীরস্থিরভাবে খেলা শুরু করে। কিন্তু বলার মতো কোন আক্রমণ শাণাতে পারেনি কোন দলই। ৪২ মিনিটে একটি উল্লেখযোগ্য আক্রমণ করে শ্রীলঙ্কা। তাদের মিডফিল্ডার রোশান যে ফ্রি কিকটি নেন ডান পায়ে, তা মালয়েশিয়ার গোলবারে লেগে ফেরত এলে আফসোসে পুড়তে হয় রাবণের দ্বীপদেশ লঙ্কাবাহিনীকে। প্রথমার্ধ ভালভাবেই মালয়েশিয়াকে প্রতিরোধ করে শ্রীলঙ্কা। যদিও বল নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে ছিল মালয়রাই (৭২ শতাংশ)। যখনই মনে হচ্ছিল গোলশূন্য স্কোরলাইন নিয়েই বিশ্রাম নিতে উভয় দল চলে যাবে ড্রেসিংরুমে, তখনই প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে (৪৫+২) গোল করে এগিয়ে যায় মালয়েশিয়া! ডি-বক্সের মধ্যে লঙ্কান ডিফেন্ডার মাধুসান হেড করে বল বিপদমুক্ত করতে গেলে হ্যান্ডবল হয়ে যায়। আর যায় কোথায়! ব্যাপারটি সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলেন রেফারি। কালবিলম্ব না করে পেনাল্টির নির্দেশ দেন তিনি। ফরোয়ার্ড সিয়ারুল আজওয়ারি কোন ভুল করেননি বলকে জালে পাঠাতে (১-০)। উল্লাসে ফেটে পড়ে মালয়েশিয়া যুব দলের ফুটবলাররা এবং সেই সঙ্গে গ্যালারিতে উপস্থিত বাংলাদেশী দর্শকরা। এক গোল করে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করাটা আজকাল বিপজ্জনক। কাজেই জয় নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় গোলের কোন বিকল্প নেই। বিষয়টি অনুধাবন করেই আরেকটি গোলের সন্ধানে মরিয়া হয়ে ওঠে মালয়বাহিনী। ৬০ মিনিটে সফলকামও হয় তারা। কর্নার পায় মালয়েশিয়া। কর্নার করেন সিজয়ান। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে জট পাকিয়ে ফেলেন পেনাল্টি বক্সের ভেতরে অবস্থান করা লঙ্কান খেলোয়াড়রা। এক ফাঁকে বল গিয়ে পড়ে মালয় ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ রিদজুয়ানের পায়ে। জটলার মধ্য থেকেই সুযোগ বুঝে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়ে দেন তিনি (২-০)। এর ঠিক দু’মিনিট পর ফরোয়ার্ড আদম নূরের দূরপাল্লার শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসায় অল্পের জন্য তৃতীয় গোল পায়নি মালয়েশিয়া। ৮২ মিনিটে বক্সের বাম কোনা থেকে বদলি খেলোয়াড় কুমাহরনের শট দারুণ দক্ষতায় লুফে নেন লঙ্কান গোলরক্ষক সুজন পেরেরা। রেফারি শেষ বাঁশি বাজালে সন্তুষ্টির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মালয় টাইগার্সরা। এখন দেখার বিষয়, আগামী ২ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিক বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমির টিকেট কাটতে পারে কি না রাবণের দ্বীপদেশ লঙ্কাবাহিনী।
×