ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়া জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

খালেদা জিয়া জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ  ঘোষণা করেছেন ॥  তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, একাত্তরে ভিলেন ছিল পাকিস্তানী হানাদার ও রাজাকাররা; বর্তমান রাজনীতির ভিলেন হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে উনি যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তবে নাশকতা বন্ধ না করলে বিএনপি অচিরেই সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হবে। আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া হবেন সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের নেত্রী। দেশের প্রচলিত আইনেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসএসসি পরীক্ষার সময়ও হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচী দিয়ে ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতকে উনি পুড়িয়ে দিচ্ছেন। শনিবার দুপুরে সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। নাশকতা ও সন্ত্রাস দমনে সরকার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে কার্যকার পদক্ষেপ গ্রহণ করায় দেশব্যাপী সহিংসতা কমে আসছে। সংলাপ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংলাপ চাইলে খালেদা জিয়াকে আগে জঙ্গীবাদ, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক ও সহিংসতার পথ পরিহার করে গণতন্ত্র ক্লাবের সদস্য হতে হবে। হাত থেকে ককটেল মাটিতে রাখতে হবে। সংলাপ-নির্বাচন চান, নাকি এই মুহূর্তে সরকারের পতন চান- তাও তাকে স্পষ্ট করে বলতে হবে। তা হলেই তার সঙ্গে সংলাপ হতে পারে। তবে সরকার পতন চাইলে তো সংলাপ হবে না। হাসানুল হক ইনু বলেন, খালেদা জিয়া মূলত যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা এবং তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তা বন্ধ করে দিতে চান। এজন্য আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়টি একটু আগে শুনেছি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা না বলে এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্দেশে তিনি বলেন, সংস্থাটির উচিত বুঝে-শুনে রিপোর্ট করা। তারা টেরোরিজমকে আড়াল করছে। খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশাসন তার বিরুদ্ধে সময়মতো পদক্ষেপ নেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদের ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ প্রস্তাব বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগে নির্ধারণ করতে হবে যুদ্ধাপরাধ, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও নাশকতা বিষয়ে ওই সরকারের ভূমিকা কি হবে; যারা এসব বিষয়ে নীরবতা পালন করছে তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা সম্ভব নয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমানে গণমাধ্যম যথেষ্ট সরকারবিরোধী মত প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করছে। কিছু গণমাধ্যম বন্ধ থাকাটা গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ নয়। এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা, আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয় জড়িত থাকায় এসব গণমাধ্যম বন্ধ রয়েছে। সাগর-রুনি হত্যার বিচার প্রসঙ্গে হাসানুল হক ইনু বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে এখন পর্যন্ত সাগর-রুনি হত্যাকা-ের বিচার সম্পন্ন হয়নি। হত্যাকান্ডটির তদন্তে প্রশাসনের ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়। তারপরও প্রশাসনের মাধ্যমেই এ হত্যাকান্ডের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন। অবরোধ না তুললে সব লাইন কাটা হচ্ছে- ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এসএসসি পরীক্ষার আগে হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার না হলে এবং নাশকতা বন্ধ না করলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে বিদ্যুত, পানি, গ্যাসসহ সবকিছুর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। কারণ এটা জনগণের দাবি। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী হকার্স লীগ আয়োজিত অবৈধ হরতাল ও মানুষ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচীতে তিনি এ কথা বলেন। দেশ ও জনগণের স্বার্থে আর কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করা হলে জনগণ তাকে ঘেরাও করে আইনের হাতে তুলে দেবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া হানিফের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সংগঠনের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা ফ্রন্টের প্রচার সম্পাদক নূর হোসেন প্রমুখ।
×