ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অবরোধের কারণে-

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫

অবরোধের কারণে-

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধে দেশের শিল্প খাত বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনযাপনকেও বাধাগ্রস্ত করছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত অবরোধের কারণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে। ব্যবসায়ীরা এই ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পেতে রাজপথে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি নেত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বুধবার অবরোধের সহিংসতা বন্ধে রাজধানীর কাওরান বাজারের বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এবং বিটিএম যৌথভাবে রাজপথে নেমে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে অংশ নেয়। তারা মানুষ মেরে অর্থনীতি ধ্বংস করে রাজনীতি না করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মানববন্ধনে অংশ নেয়া দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা রাজনীতিকদের উদ্দেশে বলেছেন, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। ব্যবসা-বাণিজ্যের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে দিন। না হলে পোশাক ও বস্ত্র খাতের সঙ্গে যুক্ত পাঁচ কোটি মানুষকে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এমনকি এ খাতে কর্মরত প্রায় পঞ্চাশ লাখ মহিলা শ্রমিককে কাজও হারাতে হতে পারে। মানববন্ধনে এই তিন সংগঠন ছাড়াও তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক ও শ্রমিক সংগঠনসহ বিভিন্ন চেম্বার এবং সমিতির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। জানা যায়, চলমান অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচীতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবসায়ী আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না, ক্ষেতেই তাঁদের শাকসবজি পড়ে থাকছে। পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় পাইকার ও মজুদদাররা সঠিক মূল্যে এ সব শাকসবজি লোকসানের ভয়ে কিনছেন না। রাজনীতিকদের কাছে ব্যবসায়ীরা আজ অসহায় ও জিম্মি হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটলে ক্রেতাদের মধ্যে ৫ জানুয়ারি পূর্ববর্তী যে অনিশ্চয়তা ছিল তা আবার নতুন করে দেখা দিতে পারে। শিল্প ধ্বংসকারীরা জাতীয় শত্রু। এদের কোন দল নেই, বাঁচাও দেশ, বাঁচাও আমদানি-রফতানি ইত্যাদি সেøাগানসংবলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষজনও অংশ নেয়। এর আগে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পূর্ব সহিংসতার সময়ও ব্যবসায়ীরা যৌথভাবে রাজপথে নামেন। বৃহস্পতিবার পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদে জানা গেছে, চলমান অবরোধ ও হরতালে কেবল পরিবহন খাতেই এ পর্যন্ত তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অপ্রিয় হলেও সত্যি, এই খাতটিই সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশে শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে, পরিবহনের ক্ষতি হচ্ছে, শিক্ষার ক্ষতি হচ্ছে, কৃষির ক্ষতি হচ্ছেÑ সামগ্রিকভাবে ক্ষতি হচ্ছে দেশের অর্থনীতির। এভাবে আর কত দিন চলবে। চলতে পারে না, চলা উচিত নয়। দেশের স্বার্থে দেশের মানুষের স্বার্থে এই অবস্থার অবসান খুবই জরুরী।
×