ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যবসায়ীরা আশাবাদী

ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় মানুষের ঢল, বেচাকেনার ধুম

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫

ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় মানুষের ঢল, বেচাকেনার ধুম

রহিম শেখ ॥ টানা অবরোধ ও হরতালে অন্যদিনগুলোতে ক্রেতা-সমাগম না থাকলেও শুক্রবার ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলা ছিল জমজমাট। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় বাণিজ্যমেলা হয়ে উঠেছিল জনসমুদ্র। ছুটির দিন থাকায় দুপুরের পর থেকেই দর্শনার্থীদের স্রোত ছিল মেলা প্রাঙ্গণের দিকে। সেই জনস্রোত সন্ধ্যায় রীতিমতো জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিকেলের দিকে টিকেট কাউন্টারের সামনে ছিল লম্বা লাইন। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা সারতেই ক্রেতারা ছুটছেন বাণিজ্যমেলায়। কিন্তু অনেক ক্রেতাই মেলায় এসে জানতে পারছেন সময় বাড়ানোর কথা। শুধু ক্রেতা-দর্শনার্থীই নয়, বেড়েছে বিক্রিও। আগের তুলনায় বিক্রির রেকর্ডও ভেঙ্গেছেন বিক্রেতারা। অবরোধের ধাক্কায় বিক্রি করতে না পারলেও ১০ দিন সময় বাড়ানোর ফলে সেই ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নেয়া সম্ভব বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার বাণিজ্যমেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলার মূল ফটক খোলার পর থেকেই মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেল হতে না হতেই মেলায় মানুষের ঢল নামে। শেষ বিকেলে আগত যারা তাদের প্রায় ঘণ্টাখানেক দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রবেশ টিকেট কাটতে হয়েছে। ক্রেতার বাড়তি চাপে মেলার আশপাশের সড়কেও ছিল বেশ যানজট। আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবন থেকে মেলার প্রবেশপথ পর্যন্ত ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন। এদিন ক্রেতা বাড়ায়, বিক্রিও বেড়েছে। দিনভর ক্রেতা সামলাতে স্টল মালিকদের ক্লান্তি ঢাকা পড়ে জমজমাট বেচাকেনার কারণে। কয়েকজন বিক্রয় প্রতিনিধি জনকণ্ঠকে জানায়, মেলার শেষ সময়ে প্রকৃত ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। যাঁরা এখন মেলায় আসছেন, সবাই কিছু না কিছু পণ্য কিনছেন। বাণিজ্যমেলার ১০ দিন সময় বাড়ানোর ফলে হরতাল-অবরোধেও ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে বলে মনে করেন নাবিস্কো প্যাভিলিয়নের বিক্রিয়কর্মী কামরুজ্জামান। মেলার সময় বাড়ানোর ফলে বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অনেক বিক্রেতা। অধিকাংশ স্টল ও প্যাভিলিয়নে নগদ অঙ্কের ছাড়, নানা ধরনের উপহার, স্ক্র্যাচকার্ডে পণ্য জিতে নেয়ার সুযোগ, প্যাকেজ অফারে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা ছাড় দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কেনাকাটা বেড়েছে। শুক্রবার বাণিজ্যমেলার প্লাস্টিক পণ্যের স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ক্রেতা দেখা গেছে। বেঙ্গল, আরএফএল, এনপলি, তানিন, গাজীসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্যের স্টলে সারাদিনই ভিড় লেগেছিল। ক্রেতাদে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাণিজ্যমেলায় প্লাস্টিকের বাটি, মগ, জগ, চেয়ার, টেবিল, টুল ও বাচ্চাদের তৈরি খেলনা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। মেলায় ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও বিভিন্ন দোকানে অন্য পণ্যের পাশাপাশি প্লাস্টিকের মগ, জগ, থালাবাটি, পানির পাত্র বিক্রি হচ্ছে। এসব দোকানে মূল্যছাড় দিয়ে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা চলছে। এবার মেলায় গৃহস্থালি পণ্য বিক্রি হয়েছে সর্বাধিক। দিল্লী ও কিয়াম এ্যালুমিনিয়ামসহ কয়েকটি স্টলে ক্রেসার ঠাসা ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অন্য বছরের চেয়ে এবার এ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্রের আধিক্য সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাণিজ্যমেলায় অন্য সব পণ্যের তুলনায় ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদাও বেশ। শুক্রবার ওয়ালটন, রানার, যমুনা, সনিসহ বিভিন্ন নামীদামী প্যাভিলিয়নে সারাদিনই ভিড় লেগেছিল। এদিকে দেশী-বিদেশী ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটরেও ছিল ক্রেতাদের আকর্ষণ। দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন, যমুনা, ভিশন ছাড়াও বিদেশি ব্র্যান্ড শার্প, সিমেন্স, সিঙ্গার, গোদরেজ, র‌্যাংগস, এলজি ফ্রিজের প্যাভিলিয়নের ক্রেতা দর্শকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তবে বিদেশী পণ্যের চেয়ে দেশী পণ্যের দাম তুলনামূলক কম এব মানেও ভালো হওয়ায় সেদিকেই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন তারা। এক্ষেত্রে ওয়ালটন ফ্রিজই এগিয়ে রয়েছে বলেই সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে। বিদেশী ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ওয়ালটনও তৈরি করেছে নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ। তবে এসব ফ্রিজ এখনও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে না।
×