ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সহিংসতা বন্ধ করলেই কেবল আলোচনা হতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ২৭ জানুয়ারি ২০১৫

সহিংসতা বন্ধ করলেই কেবল আলোচনা হতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘পুড়ছে মানুষ কাঁদছে দেশ, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ/জ্বালাও পোড়াও নাশকতা / রাজনীতি নয় বর্বরতা/ সব মানুষের প্রতিরোধ/ রুখতে পারে অবরোধ’- এমনসব ব্যানার ও প্রচারপত্র নিয়ে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন ও অনশনসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছে কয়েকটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। সহিংস রাজনীতি বন্ধ করাসহ সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে এসব কর্মসূচী থেকে। পেশাজীবী সংগঠন থেকে বলা হয়, সহিংসতা বন্ধ করলেই আলোচনার পথ তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করে সকল রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসারও আহ্বান জানানো হয়। নেতৃবৃন্দ, নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি ওঠে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধের। পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ ॥ অবরোধের নামে গত ৪ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে যা ঘটছে তাকে কোনভাবেই রাজনৈতিক কর্মসূচী বলা যায় না। গত ২০ দিনে দেশের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। নিহত হয়েছেন ৩৩ নিরীহ মানুষ, দগ্ধ হয়েছেন ২০৮ জন। ৭২০টি যানবাহন পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। রেলে নাশকতা হয়েছে পাঁচ দফায়। এমন পরিস্থতিতে দলমত নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষ গভীর আগ্রহের সঙ্গে দুই নেত্রীর সাক্ষাত আশা করেছিল। তাদের সাক্ষাত বর্তমান সহিংস পরিস্থিতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারত। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের গেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। পেট্রোলবোমায় পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, রাষ্ট্রীয় এবং জনসাধারণের সম্পদে অগ্নিসংযোগ ও দেশের উন্নয়ন-অর্থনীতি ধ্বংসকারী হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোট সারাদেশে নাশকতা চালিয়ে সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করছে। নাশকতা বন্ধ করে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার দায়িত্বও তাদেরই নিতে হবে। তারা সহিংসতা বন্ধ করলেই কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি আলোচনার পথ তৈরি হতে পারে। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষার লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের কাছে দাবিও জানান তিনি। এছাড়া চলমান অবরোধ-সহিংসতা প্রতিহত করতে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনটি কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। এগুলো হলো- ২৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান, ৩১ জানুয়ারি সকাল ১১টায় শাহবাগ থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত সমাবেশ ও পদযাত্রা এবং ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে পেশাজীবীদের সমাবেশ। প্রতিটি জেলায় পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচী চলবে বলেও লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়। পরিষদের সভাপতি বিচারপতি এএফএম মেসবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মাদ তালুকদার, কৃষিবিদ মোহাম্মাদ মোবারক আলী, অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান, প্রকৌশলী এসএম খবীরুজ্জামান, সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, এ্যাডভোকেট মোতাহার হোসেন সাজু, অধ্যাপক নাজমা শাহীন প্রমুখ। সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সাংবাদিক মঞ্চ ॥ রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস বন্ধসহ সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক নেতাসহ বিভিন্ন পেশার নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে হরতাল-অবরোধের নামে জনগণকে জিম্মি করে রাখার অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সাংবাদিক মঞ্চ’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এই আহ্বান জানান। যানবাহনে পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যাসহ দেশজুড়ে অব্যাহত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতার ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিটিবিনিউজ২৪.কম এর প্রধান সম্পাদক আশীষ কুমার দে। দৈনিক জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি রাজন ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতিম-লীর সদস্য নুরুর রহমান সেলিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শফি আহমেদ, খেলাঘর ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান শহীদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু আহমেদ, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সিপিবি নেতা সেকেন্দার হায়াত, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুসার রেহমান, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজিজুল পারভেজ, সাংবাদিক নিখিল ভদ্র, বিভাষ বাড়ৈ, রাকিব উদ্দীন, শামীম খান, অপূর্ব কুমার, টিটু সাহা, রহিম শেখ, আরাফাত মুন্না, মিজান রহমান প্রমুখ। এছাড়া সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান, খেলাঘরের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুল মতিন ভুঁইয়া ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ। বক্তারা সম্প্রতি দিনাজপুরের পার্বতীপুরে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও যশোরের শার্শা এলাকায় নির্যাতিত ৩১টি হিন্দু পরিবারকে দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সাধারণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা লাগাতর অবরোধ ও হরতালের নামে সারা দেশে যে নাশকতা চলছে তা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারী ও তাদের নেপথ্য হুকুমদাতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দের দাবি জানান বক্তারা। ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ॥ ‘সন্ত্রাস-পেট্রোলবোমা, জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যা বন্ধ করুন’ ব্যানার নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি প্রতিবাদ শোভাযাত্রা বের করে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর, পল্টন হয়ে প্রেসক্লাবে এসে তা শেষ হয়। ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, লুৎফর রহমান, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ অংশ নেন। বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ॥ ‘অবরোধ ও নাশকতার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিবাদ’-এ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি আখতারুজ্জামান। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক। সংগঠনের সহসভাপতি নজরুল মজিদ, অরুণ কুমার গোস্বামী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ এই সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন কোন না কোন মা অবরোধকারীদের হামলায় সন্তান হারাচ্ছেন। খালেদা জিয়াও এই সময়ে তার সন্তান হারিয়েছেন। তার এখন সন্তানহারার বেদনা বোঝার কথা। কাজেই তিনি যেন এই সহিংস কর্মসূচী প্রত্যাহার করেন। অনথ্যায় সাধারণ মানুষ যেভাবে প্রতিরোধ শুরু করেছে, তা চলতে থাকবে। অন্যান্য সংগঠনের প্রতিবাদ ॥ প্রেক্লাবের সামনে ‘আগুনে মানুষ পোড়ানোর অপরাজনীতি থেকে দেশবাসীকে মুক্তি দিতে অবিলম্বে সব দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে অর্থবহ সংলাপ’-এর দাবিতে প্রতীকী অনশন করে ন্যাশনাল লেবার পার্টি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ইনসাফ পার্টির শহিদ চৌধুরী, হিন্দু ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার, গণসংগ্রাম পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মাসুম আহমেদ এতে অংশ নেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে পৃথক কর্মসূচী পালন করা হয়। শ্রমজীবী মানুষের ওপর সব রকমের নৃশংসতা বন্ধে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দৃঢ় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম (এসএনএফ)। বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে শ্রমিক হত্যা ও সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস আক্রমণ বন্ধ কর’ শীর্ষক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সংগঠনটি এ দাবি জানায়। শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন বলেন, দেশের শ্রমজীবী মানুষই এই রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে। নৃশংসতা বন্ধে সরকার ও বিরোধীদলসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- রোকেয়া রফিক রেবী, মহিলা আইনজীবী সমিতির সহকারি পরিচালক রাশিদা হোসেন, সৈয়দ সুলতান ইদ্দীন আহম্মদ,ওয়াজেদুল ইসলাম খান, নাজমা আক্তার প্রমুখ। ইতি না টানলে পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকুনÑ ইনু ॥ ‘অবিলম্বে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো বন্ধ করুন। তা না হলে, ভয়াবহ পরিণতি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ঢাকা মহানগর সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে সোমবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার উদ্দেশে এসব কথা বলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আগুনবোমা দিয়ে পুড়িয়ে শিশু-নারী-শ্রমিক-ছাত্র-পুলিশসহ অনেক মানুষ হত্যা করেছেন। অনেক মানুষ পোড়া ক্ষত নিয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি, মানুষ হত্যার নির্দেশদাতা বেগম জিয়াকে অবিলম্বে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। একই সঙ্গে তিনি ১৪ দলের নেতাকর্মীদের জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। জাসদ সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করার জন্য খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াকে অনেক মূল্য দিতে হবে। অবরোধের নামে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা-সহিংসতা-নাশকতা-নিষ্ঠুরতা চলতে দেয়া যায় না। চলমান সন্ত্রাসে জনগণ ভীত নয় বরং জনগণ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হচ্ছে। জনসভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, শিরীন আখতার এমপি, আফরোজা হক রীনা, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, হাবিবুর রহমান শওকত, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, করিম সিকদার, শওকত রায়হান, নইমূল আহসান জুয়েল প্রমুখ। মানুষ হত্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থীÑ মোজাম্মেল হক ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। তিনি বলেন, মানবিক মর্যাদা, সাম্য, সুশাসন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মূলভিত্তি। বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় ও মৃত্যুঞ্জয়ী স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী ও প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান। আজ সাংস্কৃতিক জোটের প্রদীপ প্রজ্বলন ও শপথ ॥ রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে সন্ত্রাস ও পেট্রোলবোমা নিক্ষেপে যে সকল মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও আত্মার শান্তি কামনা করে আজ সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্বলন ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সম্মিলিক সাংস্কৃতিক জোট। একইসঙ্গে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং মানুষ হত্যার ঘটনায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শপথবাক্য পাঠ করাবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। ইসলামী আন্দোলনের তিন দফা ॥ দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে সরকারকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনোই পীর)। সোমবার দুপুরে পল্টনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় তিনি চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ ও সঙ্কট সমাধানে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবিতে তিন দফা কর্মসূচী ঘোষণা করেন। রেজাউল করিম বলেন, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে দেশের অভিভাবক রাষ্ট্রপতিকে উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম। অন্যদিকে খোলা চিঠির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সরকারকেও এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। তিন দফা কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছেÑ ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সাদা পতাকা নিয়ে মানববন্ধন, ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সবল জেলায় সাদা পতাকা নিয়ে মানববন্ধন ও ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশের সকল উপজেলায় সাদা পতাকা নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হবে। গণসংহতি আন্দোলন ॥ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা কর, রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান কর’ শীর্ষক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ্যাডভোকেট আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সমন্বয়কারী হামিদুল হক, সাইফুল হক, মোশরেফা মিশু, মানস নন্দী, আবদুস সাত্তার প্রমুখ।
×