ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাগেরহাটের রাজাকারের বিরুদ্ধে ১৫তম সাক্ষীর জবানবন্দী শেষ

যুদ্ধাপরাধী বিচার

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

যুদ্ধাপরাধী বিচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত বাগেরহাটের তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৫তম সাক্ষী সোহরাব নকিব জবানবন্দীতে বলেছেন, একাত্তরের ৪ নবেম্বর দিবাগত রাতে আসামি সিরাজ মাস্টার, রাজাকার কমান্ডার খান আকরাম হোসেন, আব্দুল লতিফ তালুকদারসহ রাজাকাররা শাখারিকাঠি বাজার আক্রমণ করে ৪২ হিন্দুকে আটক করে। এবং পরে তাদের হত্যা করা হয়। এরাই মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকে বাজার থেকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে আংশিক জেরা করেন। আজ অসমাপ্ত জেরার জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রবিবার এ আদেশ দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দু সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। সাক্ষীকে জবানবন্দীতে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর সাইয়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন এ্যাডভোকেট আবুল হাসান। সাক্ষী জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম, সোহরাব নকিব। আমার বর্তমান বয়স ৭০Ñ৭১ বছর। একাত্তরে আমার বয়স ছিল ২১ বছর। একাত্তরে আমি কৃষিকাজ করতাম। এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। একাত্তরের ৪ঠা নবেম্বর দিবাগত রাতে আমরা দৈবজ্ঞহাটি রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করি। ওই ক্যাম্পের কমান্ডার ছিলেন খান আকরাম হোসেন। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে আমাদের অপারেশন সফল হয়নি। পরদিন শুক্রবার বিকেল বেলা শাখারিকাঠি হাটের দিন ছিল। আসামি সিরাজ মাস্টার, দৈবজ্ঞহাটি রাজাকার ক্যাম্পের কমান্ডার খান আকরাম হোসেন, আসামি আব্দুল লতিফ তালুকদার, বাবর আলী, রুস্তম আলী মোল্লাসহ রাজাকাররা শাখারিকাঠি বাজার আক্রমণ করে ৪২ হিন্দু মানুষকে আটক করে। এবং তাদের হত্যা করে। প্রসিকিউশনের সাক্ষী সোহরাব নকিব বলেন, একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর আমরা কয়েকজন ভাটখালী ক্যাম্প থেকে তেলিগাতি বাজারে আসি। কিন্তু আমি বাজারে না যেয়ে ব্রিজের গোড়ায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেই। এর মধ্যে আমার সঙ্গী ফজলুর রহমান বাজারের ভেতর ঢুকে পড়ে। বাজারে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গে আসামি খান আকরাম হোসেনসহ আরও কয়েকজন রাজাকার তাঁকে ধরে ফেললে সে চিৎকার করতে থাকে। আমি চিৎকার শুনে পেছন দিকে দৌড় দেই। পরে আড়াল থেকে দেখতে পাই, রাজাকাররা ফজলুর রহমানকে দক্ষিণ খাল পাড়ে নিয়ে যায়। এবং আসামি খান আকরাম হোসেন প্রথমে তাঁকে গুলি করে। পরে আসামি আব্দুল লতিফ তালুকদার, রোস্তম মোল্লাও তাঁকে গুলি করে। এবং তাঁর লাশ খালে ফেলে দেয়। এ ঘটনার পর আমি বাড়িতে না গিয়ে ক্যাম্পে ফিরে যাই। সাক্ষীরা আঠগড়ার ডকে শনাক্ত।
×