ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানির জন্য নতুন নীতিমালা

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানির জন্য নতুন নীতিমালা

ফিরোজ মান্না ॥ তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের লক্ষ্যে এবার আধুনিক প্রযুক্তির মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানির জন্য নতুন নীতিমালা করেছে বিটিআরসি। নতুন নীতিমালায় হ্যান্ডসেটগুলোতে থ্রিজি (তৃতীয় প্রজন্মের) ও ফোরজি (চতুর্থ প্রজন্মের) সুবিধা থাকতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য দূর করার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিটিআরসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করতে হবে। তবে মোবাইল আমদানিকারকরা বিটিআরসির এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেছে, দেশের মোবাইল ব্যবহারকারীর অর্ধেকই নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা থ্রিজি-ফোরজি মোবাইল সেট কিনতে পারবেন না। এক্ষেত্রে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যেতে পারে। থ্রিজি-ফোরজি সুবিধা আছে এমন একটি সেটের দাম সর্বনিম্ন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। অথচ বাজারে এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকায় মোবাইল সেট পাওয়া যাচ্ছে। মূলত এই সেটগুলোই নিম্নআয়ের গ্রাহকরা কিনে থাকেন। এখন বিটিআরসির নতুন সিদ্ধান্ত মেনেই মোবাইল সেট আমদানি করতে হবে। মোবাইল সেট আমদানীকারকদের কোন কথা আমলে না নিয়েই বিটিআরসি নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালার বাইরে কোন মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানিকারকরা আনতে পারবেন না। থ্রিজি ও ফোরজি সুবিধা থাকলে গ্রাহকরা ইন্টারনেট, ডেটা, ভিডিও, অডিওসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। ঘরে বসে থেকেও মোবাইলের মাধ্যমে সরকারের দেয়া অনেক সুবিধা নিতে পারবেন। বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, মোবাইল সেট আমদানিকারকদের বিদেশ থেকে মোবাইল সেট আনতে বিটিআরসির নীতিমালা অনুসরণ করে আনতে হবে। মোবাইল আমদানির আগে বিটিআরসির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এরপর বিদেশ থেকে মোবাইল হ্যান্ডসেট দেশে আনার পর আবার বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে বাজারে তুলতে হবে। আমদানির নতুন নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য বিটিআরসি (বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন)। থ্রিজি ও ফোরজি সুবিধা সংবলিত মোবাইল হ্যান্ডসেট সহজলভ্য ও সেটের মান নিশ্চিত করতে বিটিআরসি একটি তদারকি কমিটি গঠন করেছে। কোন আমদানিকারক যাতে নীতিমালার বাইরে মোবাইল হ্যান্ডসেট না আনতে পারেন সেজন্য মোবাইল আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রচলিত চালানভিত্তিক পদ্ধতির পরিবর্তে নমুনাভিত্তিক পদ্ধতি প্রচলন করা হয়েছে। এ পদ্ধতি অনুসারে সব ধরনের হ্যান্ডসেট আমদানির জন্য বিটিআরসির অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমদানির অনুমতি পাওয়ার জন্য হ্যান্ডসেট সম্পর্কে বিটিআরসিতে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ আবেদন করতে হবে। মোবাইল সেটের মান সম্পর্কিত তথ্যও দিতে হবে। বিটিআরসি যাচাই-বাছাইয়ের পর আমদানির অনুমতি দেবে। মোবাইল হ্যান্ডসেটের জন্য একটি নাম্বার সরবরাহ করা হবে। অনুমোদন পাওয়া গেলে পরবর্তীতে আর কোন অনুমোদন নিতে হবে না। তখন মোবাইল আমদানিকারকরা যত খুশি তত মোবাইল সেট আমদানি করতে পারবেন। মোবাইল আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিটিআরসি এর আগে ‘মোবাইল হ্যান্ডসেটে কি প্যাডের’ বাংলা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বাংলা লেখা কি প্যাড মোবাইল সেট বাজারে খুব একটা নেই। ইংরেজী লেখা কি প্যাডের মোবাইল সেটই বিক্রি হচ্ছে। নতুন নীতিমালায় মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানির বিষয়টিও একপর্যায়ে থাকবে না। দেশের অর্ধেকের বেশি মোবাইল ব্যবহারকারী নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের পক্ষে বেশি দামের মোবাইল সেট কেনা অসম্ভব। থ্রিজি ও ফোরজি মোবাইল সেট যত কম দামেরই হোক না কেন, তারপরও মোবাইল ব্যবহারকারীর বিরাট একটি অংশ এই সেট কিনতে পারবেন না। থ্রিজি-ফোরজি মোবাইল হ্যান্ডসেট কিনতে সর্বনিম্ন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লাগবে। অথচ বাজারে এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকায় মোবাইল হ্যান্ডসেট পাওয়া যাচ্ছে। নিম্নআয়ের মানুষ এ সব সেট ব্যবহার করে আসছে। বেশি দামের সেট কেনা তাঁদের পক্ষে কষ্টসাধ্য হবে। এরপরও বিটিআরসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তাঁরা সেটা মেনে নিয়েছেন। বিটিআরসির সিদ্ধান্ত মেনেই তাঁরা মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করবেন বলে জানিয়েছেন।
×