ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে পেট্রোলবোমায় ৩৬ জন দগ্ধ

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে পেট্রোলবোমায় ৩৬ জন দগ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি ও জামায়াত-শিবির টানা অবরোধের নামে শুক্রবার রাতেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পেট্রোলবোমা ও ককটেল হামলা চালিয়েছে। রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ২৫, রাজশাহীর তানোরে শিশু ও নারীসহ ৯ এবং বগুড়ার সাতমাথায় ২ জন দগ্ধ হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৬ জন দগ্ধসহ মোট ৫৮ জন আহত হয়েছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ীর মোল্লার ব্রিজ এলাকায় গ্লোরী পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪৮৮৬) একটি বাসে পেট্রোলবোমা ছুড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগই আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাসের কমপক্ষে ২৫ জন যাত্রী দগ্ধসহ মোট ৪৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় কয়েকটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। দগ্ধরা হলেনÑ জয়নাল আবেদিন (৩০), ইশতিয়াক বাবর (২৫), সালাউদ্দিন পলাশ (৩৫), তাগবিরি ইসলাম (২৮), সালমান (২০), নাজমুল (২৭), মোঃ শরিফ (৪৮), উসমান গণি (২৮), ইয়াসিন আরাফাত (৪০) ও তার স্ত্রী শাহিদা (৩০), মোশারফ হোসেন (৪০) ও তার ভাতিজা (৩০), হৃদয় (২০), রাশেদ (২০), মোমেন (২৫), খোকন (৩০), নুর আলম (৩০), হারিস (৩২), ফারুক হোসেন (২০), মোঃ সুমন (২৫), রুবেল (২২), আবুল হোসেন (৩৫), শাহজাহান সরদার (৬০), মোজাফ্ফর মোল্লা (৬০) এবং শহিদুল ইসলাম (৪০)। এছাড়া আহত হয়েছেন আফরোজা (৩০)। এছাড়া যাত্রাবাড়ীর মেডি কেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে ১৪ জনকে। একটি কিèনিকে ছয়জনকে এবং অন্যান্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে আটজনকে। তাৎক্ষণিকভাবে সবার পরিচয় জানা যায়নি। অগ্নিদগ্ধ জয়নাল আবেদিন বলেন, আমি নিউমার্কেটে একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করি। কাজ শেষে বাসে করে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বাসায় যাচ্ছিলাম। পথে যাত্রাবাড়ী কাঠেরপুল এলাকায় দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার ফরহাদ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে দুটি ইউনিট কাজ করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন ২০ থেকে ২৫ জন যাত্রী। তাদের উদ্ধার করে ঢামেকে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাশিম জনকণ্ঠকে বলেন, আমি ছিলাম বাসের মাঝামাঝি। হঠাৎ দেখি আগুনের ফুলকি। আমি বুঝতে পারি এটা বোমার আগুন। চোখের সামনে দেখি সবাই চিৎকার করছে। কেউ লাফ দিচ্ছে। কেউ বসে গেছে। কেউ জানালা ভাঙ্গছে। আমার পাশের জানালার কাচ ভাঙ্গা। আমি সেখান দিয়ে লাফ দিই। তারপরও অনেক ক্ষণ ধরে বাসটি জ্বলতে থাকে। পুলিশ আসার পর দমকল বাহিনী আসে। ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, বাসে আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ২টি ইউনিট পাঠানো হয়। তারাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিসৎসক মাহমুদ জানান, এদের মধ্যে নয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আজিমপুরে বাসে আগুন আজিমপুরে যাত্রীবেশে বাসে উঠে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে অবরোধ সমর্থকরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় মিরপুর টু আজিমপুর রুটে চলাচলকারী বিকল্প পরিবহনের একটি বাসের শেষের সিটে দুইজন যাত্রী উঠে। বাসটি চলতে শুরু করলে তারা আগুন ধরিয়ে দিয়ে ‘আগুন-আগুন’ বলে দৌড়ে নেমে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। তবে হুড়োহুড়ি করে নেমে যাওয়ায় কোন যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দফতর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার ফরহাদ জানান, সব নিয়ন্ত্রণে। নয়াপল্টনে পেট্রোলবোমা ও ককটেল রাত সাতটার দিকে নয়াপল্টনে অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের গলির মুখে একটি পেট্রোলবোমা ও ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনায় ওই এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। রাস্তায় থাকা সাধারণ মানুষ বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করতে শুরু করে। ঘটনার পর পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। তবে তারা কাউকে আটক করতে পারেনি।
×