ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ নিয়ে রাহুল দ্রাবিড় ও গ্রায়েম স্মিথ

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

বিশ্বকাপ নিয়ে রাহুল দ্রাবিড় ও গ্রায়েম স্মিথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দ্রুত এগিয়ে আসছে বিশ্বকাপ ২০১৫। ১৪ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে বসতে যাচ্ছে ক্রিকেট শ্রেষ্ঠত্বের ১১তম লড়াই। কী হবে ক্রিকেটের এই মহাযজ্ঞে? প্রশ্ন, কৌতূহল ও বিশ্লেষণের শেষ নেই। ভারতীয় গ্রেট রাহুল দ্রাবিড় যেমন মনে করছেন নতুন কিছু নিয়ম-কানুন মাঠে পার্টটাইম বোলারদের জন্য সত্যি বিপদ বয়ে আনবে। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথের আবার দীর্ঘ সময় নিয়ে এত দলের টুর্নামেন্টের ফিক্সারটাই পছন্দ নয়! ক্রিকেটের জনপ্রিয় সাইট ইএসপিএনকে দেয়া সাক্ষাতকারে বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে আরও অনেক কিছুই বলেছেন সাবেক দুই বড় তারকা। ‘নতুন এই নিয়মে প্রতিটি ম্যাচকে আরও আক্রমণাত্মক করে তুলবে এবং পার্টটাইম বোলারদের জন্য ভাল করাটা হবে খুবই কঠিন। মাঠে অধিনায়কের জন্য ফিল্ডিং সাজাতে বেশ বেগ পেতে হবে। সেক্ষেত্রে নেতৃত্বে বিচক্ষণতা ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।’ বলেন রাহুল। আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) প্রবর্তিত নতুন নিয়ম অনুযায়ী ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে মাঠে ৩০ গজের সার্কেলের ভেতর উইকেটরক্ষক ছাড়া আর ৫ জন ফিল্ডার থাকতে পারবে। প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ২ জন এবং পরবর্তী ৪০ ওভার পর্যন্ত ৩ জন! বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ‘দ্য ওয়াল খ্যাত’ সাবেক ভারতীয় গ্রেট আরও যোগ করেন, ‘ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্মক মেজাজ থামাতে এক্ষেত্রে পার্টটাইম বোলারদের ব্যবহার হবে খুবই বিপজ্জনক। প্রতিটি দলকেই কমপক্ষে পাঁচজন স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে নামতে হবে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে সেক্ষেত্রে সবাই-ই হতে পারে পেসার!’ নতুন এই নিয়ম প্রতিটি দলকেই বিপদে ফেলবে বলে মনে করেন ‘মি. ডিপেন্ডবল’ খ্যাত রাহুল। নতুন নিয়মে কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো দলকে বড় স্কোর পেতে সমস্যা হবে না, তেমিন তাদের দ্রুতগতির পেসারদের বিপক্ষে উপমহাদেশের দলগুলো বেকায়দায় পড়বে বলেও মত তার। অবশ্য সাম্প্রতিক সমস্যা কাটিয়ে তার দেশ ভারত ভাল করবে বলে আশাবদী রাহুল। অন্যদিকে আগের মতোই বিশ্বকাপের ফিক্সার ও দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে বিরক্ত গ্রায়েম স্মিথ। এবার ৪৪ দিনের দীর্ঘ টুর্নামেন্টে নিয়ে সাবেক তুখোড় প্রোটিয়া সেনাপতি বলেন, ‘গত বিশ্বকাপে আমি খেলিনি। দর্শক হয়ে ছিলাম। এই রকম দীর্ঘ সময় ধরে টুর্নামেন্ট চলছিল। একঘেয়েমির যথেষ্ট কারণ ছিল। একসময় মনে হয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনাল কবে শুরু হবে!’ এবার ১৪ দলের বিশ্বকাপে ১০ টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে আছে ৪ সহযোগী আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ বিষয়ে স্মিতের সঙ্গে একমত পোষণ করে রাহুল যোগ করেন, ‘দুটি গ্রুপে ৭টি করে দল। উভয় গ্রুপ থেকে ৪টি করে দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। বড় কোন অঘটন না ঘটলে ধরেই নেয়া যায় কোন দলগুলো কোয়ার্টারে খেলছে। লীগ পর্বের আকর্ষণ হারিয়ে সবাই কোয়ার্টারের অপেক্ষাতেই থাকবে।’ স্মিথ মনে করেন বিশ্বকাপের সময় কমিয়ে আনা উচিত। তার যুক্তি, ‘সত্যি বলতে আমার মনে হয় বিশ্বকাপের সময়ের পরিধি কমিয়ে আনা উচিত। কারণ এখন যেভাবে খেলা হয়, এতে ক্রিকেটাররা শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নেমে এভাবে বসে থাকলে বড় দলগুলোর ক্ষতিই বেশি। কারণ একটি দারুণ জয়ে যে ছন্দটা আসে, তাতে ভাটা পড়ে যায়।’ সময়ের বিবর্তনে ক্রিকেটে অনেক নিময়-কানুনেই পরিবর্তন এসেছে। শুরুতে ব্যাটিং পাওয়ার প্লের ব্যবহার হতো প্রথম ২০ ওভারের মধ্যে। ইচ্ছেমতো ব্যবহারের নিয়মও ছিল। গত বিশ্বকাপ থেকে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে ৪০ ওভারের মধ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু ২০১১ বিশ্বকাপের পর, অর্থাৎ ২০১২-এর অক্টোবরে আনা হয়েছে আরও পরিবর্তন। এখন ব্যাটিং পাওয়ার প্লের সময় সার্কেলের মধ্যে ৫ জনের বেশি ফিল্ডার থাকতে পারবেন না, চারজন বাউন্ডারিতে। এক্ষেত্রে বোলারদের বিশেষ, করে যারা পার্টটাইম বোলিং করবেন তাদের বেশি ভুগতে হবে। অধিনায়ককে হতে হবে আরও বেশি বিচক্ষণ, নেতৃত্বের ভুলে ম্যাচ খোয়াতে পারে বড় কোন দল!
×