ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শামসুল আরেফিন খান

খালেদা জিয়াকে ৭ দফা গণদাবি

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

খালেদা জিয়াকে ৭ দফা গণদাবি

শিশু অনীক জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। শিয়রে অশ্রুসিক্ত অভাগী মা। ‘মনে হচ্ছে কলজেটাকে ছিঁড়ে ফেলি, তাতে যদি আমার যন্ত্রণা কিছু মেটে! হায় আল্লাহ তুমি বিচার কর। ‘আল্লাহ কী বিচার করবেন? অনীকের একটা সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে উঠছিল। অনীক শনৈঃ শনৈঃ বিকশিত হচ্ছিল শুক্লা শশীর মতো। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর পাবলিক পরীক্ষায় ‘এ-প্লাস’ পেয়ে মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। মা স্বপ্ন দেখছিলেন ‘আমার ছেলে বড় হয়ে বিদেশ যাবে। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে মোদের মুখ উজ্জ্বল করবে।’ সেই একই স্বপ্ন লালন করছিলেন প্রবাসী বাবাও। ঘাম ঝরাচ্ছিলেন সন্তানের সুখী সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। কিন্তু এ কী হলো? ‘আল্লার মাল শিশু নওশিনের আল্লার ঘরে যাওয়ার গল্পটা’ একই হাতে বার বার রচিত হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন পটে। সেই ট্রাডিশন চলেছে সমানে। কিন্তু আর কতকাল? ২৪ জানুয়ারি ৬৯ গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে পুলিশের গুলিতে কিশোর মতিউরের শহীদী মৃত্যু দানবতুল্য স্বৈরাচার ‘লৌহ মানব ফিল্ড মার্শাল’ আইয়ুব খানের পাথরের মতো শক্ত মন গলিয়ে ইতিহাস বদলে দিল। ‘আমিই কী দায়ী এই একরত্তি শিশুর মৃত্যুর জন্য জহুর?’ সম্পাদক জহুর হোসেন চৌধুরীকে শুধাল সেই সাক্ষাত দানব অশ্রু টলমল চোখে! (দরবারে জহুর) দানবের চোখে জল! কিন্তু অবরোধের বোমায় শিশু অনীকের হৃদয়বিদারক করুণদশায় ধ্বংসের সিঙ্গা ফোঁকা মায়ের চোখে জল এলো না! প্রাণ কাতর হলো না কোন ঘটক-অনুঘটক ও সংগঠকের! একটুও রহম হলো না ২৪ খুনের আসামির ও হুকুমের আসামির! বাস পুড়ছে। পুড়ছে চালক। পুড়ছে যাত্রী। মা ও শিশু জড়াজড়ি করে রোস্ট হচ্ছে। কি নির্মম কি নিষ্ঠুর এই নারকীয় ‘বার-বি-কিউ’! কি পৈশাচিক নরহত্যা। ‘কী রঙ্গ, বিচিত্র বঙ্গ, রঙ্গলাল! কোথায় তুমি? নিদ্রিত কেন? জেগে ওঠো আবার, অস্ত্র ধর, হে বীর মোহনলাল’! কার শাপে জর্দার কৌটায় মুখ লুকিয়ে সেই লাল রাক্ষুসী আবার ফিরে এলো? রিকশাচালক অমূল্য বর্মণ আগুনে ঝলসে গেল, ট্রাকচালক মুরাদ প্রাণ হারাল? লাল টেপে মোড়া যমদূত ২৪ প্রাণ কেড়ে নিল! কর্মান্বেষী শত দিনমজুরের জীবন ছারখার হলো! শিশু অনীকের নিষ্পাপ জীবন তছনছ হলো! সে যদি বেঁচেও যায়, চোখে দেখবে না। মাথার একাংশে জখম এমন যে সে কোন দিন বুদ্ধিদীপ্ত হবে না। ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, ব্যথা-বেদনা, ক্ষুধা-তৃষ্ণা বুঝবে না। মাকে মা বলে ডাকবে না। বাবাকে আদরে জড়িয়ে ধরবে না। কী অপরাধ তার? কার পাপে এমন সর্বনাশ? সিএনজি টেম্পোর যাত্রী শিশু, যে মার বুকে সহমরণ বরণ করল, তারই বা কী দোষ? কী অপরাধ করেছে নিশ্চল বাসে ঘুমন্ত শ্রমিক, ট্রাকের হেলপার, বাসযাত্রী পথচারী, যারা পেট্রোল বোমার আগুনে ঝলসে মরছে? কিংবা যেসব বিভ্রান্ত তরুণ যুবক কর্তার হুকুমে জান দিচ্ছে, কর্তব্যরত পুলিশ ককটেল বোমায় ঝলসে যাচ্ছে? ফিশ প্লেট উপড়ে, রেল তুলে যাত্রীবাহী ট্রেন উল্টে দেয়ায় নিরীহ জনগণের জানমাল বিপন্ন হচ্ছে। অস্ত্র কেড়ে নিয়ে কর্তব্যরত পুলিশের মাথা থেঁতলে দিচ্ছে সন্ত্রাসী পিকেটার! আগুনে পোড়া মানুষের মৃত্যুমিছিল প্রতিদিন দীর্ঘতর হচ্ছে। এরই নাম কী গণতন্ত্র? কে দেবে জবাব? কে করবে বিচার? ন্যায়দ- দিলে যদি বিচারকের পল্লী নিবাস অনলদগ্ধ হয়? যদি ককটেলে চূর্ণ হয় বসতবাড়ি? ঝালকাঠির জঙ্গী হামলায় নিহত দুই বিচারকের নিয়তি যদি সব দুর্বিনীত হাকিমের জন্য প্রতীক্ষমাণ থাকে, বিদায়ী প্রধান বিচারপতি অপমানিত হন, তবে দেশে আইনের শাসন কী টেকসই হবে? আইনের শাসন নেই, অথচ গণতন্ত্র আছে! এমনটি কি ভাবা যায়? রাষ্ট্রের কাছে মানুষ নিরাপত্তা আশা করে। যে রাষ্ট্র নিরাপত্তা দিতে পারে না সে তো পকিস্তানের মতো, সিয়েরালিওনের মতো, জাম্বিয়ার মতো, সোমালিয়ার মতো ব্যর্থ রাষ্ট্র! আমরা কী এক সাগর রক্তের বিনিময়ে একটি ব্যর্থ অক্ষম অসহায় রাষ্ট্র চেয়েছিলাম? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কী জঙ্গীদের হাতে জিম্মি এমন একটি পঙ্গু রাষ্ট্রের জন্য শহীদ হলেন? এসব প্রশ্নের জবাব পেতে হবে। খুঁজে নিতে হবে আলোর ঠিকানা। ইতিহাসেই রয়েছে সে সমাধান। ১৯২০ সালের কথা। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস খেলাফত নেতাদের সঙ্গে জোট গঠন করল। মোহন দাশ গান্ধীর লক্ষ্য স্বরাজ। তুর্কী অটোমান সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারকামী (এখনকার জামায়াত-আইসিস-এর মতো) ভারতীয় খেলাফতের চূড়ান্ত খায়েশ ব্রিটিশ উৎখাত। মেলবন্ধনের ভিত্তি শেষটাই। কিন্তু ঐক্য টিকল না। গান্ধীর নিখাঁদ অহিংসা মন্ত্র আর খেলাফতের রক্তপাত-হাঙ্গামা-ফ্যাসাদ নীতির অসম পরিণয় স্থায়ী হলো না। বৈপরীত্যের মধুচন্দ্রিমার বিয়োগান্ত পরিণতি ঘটল একটিমাত্র অগণতান্ত্রিক আচরণে। ১৯২২ সালে ‘চাওরি চাউরাতে’ থানা আক্রমণ করে ২৩ পুলিশ হত্যার ঘটনায়। কেটে গেল নেশার ঘোর। শুরুতে করমচাঁদ গান্ধী হিন্দু মুসলিম ঐক্যের অন্ধ বাসনায় খেলাফতের সঙ্গে প্রীতি বন্ধনের ব্যাপারে আবেগাকুল ছিলেন। বিষয়টা ধর্ম নিরপেক্ষতা আর অহিংস নীতির সঙ্গে খাপ খেল না। তাই সে তপস্যা বিতর্কিত হলো। রাজনীতিতে এমনটা হতেই পারে। অভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই জিততে সাপ-নেউলের গাঁটছড়া প্রত্যক্ষ করা গেছে ইতিহাসের অনেক মোহনায়। তেল জলে মেশে না বলেই ইতিহাস অনন্ত কলঙ্কের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আদর্শের অভিন্নতা ছাড়া কোন মৈত্রী বন্ধনই চিরস্থায়ী হতে পারে না। কিন্তু ঐক্যটা যদি হয় শিয়ালে আর খাটাশে, তাহলে সেটা একটু পৃথক মাত্রা পেয়ে টিকেও যেতে পারে। ভাঙ্গা বেড়া গলিয়ে গেরস্থের মুরগি চুরিতে লক্ষ্যের মিল থাকে। কিন্তু শিকার ভাগাভাগিতে কেউ ছাড় দেয় না। রক্ষে যে, মরণ ঘনালে খাটাশ শহরমুখী হয়ে গাড়ি চাপায় অক্কা পায়। তারপরেও চোখ দুটো হেড লাইটের মতো জ্বলতেই থাকে। কথায় বলে, মরা খাটাশের চোখে অঙ্গার। ‘মিডিয়ার কাগুজে বাঘেরও’ এখন কেবল চোখটাই জ্বলছে। ধড়ে প্রাণ নেই। পুণ্যবতী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিশ্চয়ই মনে আছে, ১৯৯৬ সালে সরকারপ্রধান থাকতে অধমকে সাদরে দলে ডেকেছিলেন। প্রাণিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটে বলে হয়নি। ব্যতিক্রমী সে গল্পটা আজও বলা হবে না। ছিয়ানব্বইর সেই লগ্নে, সংবাদ সম্মেলনে দেয়া আমার প্রথম খোলা চিঠিতে ৭ দল নেত্রী খালেদা জিয়াকে জামায়াত-বিএনপি গোপন আঁতাতের ভয়ানক পরিণতির কথা বুঝাবার প্রয়াস পেয়েছিলাম। বিনয়ের সঙ্গে ফরিয়াদ করেছিলাম, ‘মাননীয় নেত্রী জামায়তকে ছেড়ে দিন। গণতন্ত্র ধ্বংস করবেন না। দেশের সর্বনাশ ডাকবেন না।’ গরিবের কথা বাসি না হলে কেইবা শোনে বলুন ! বিদায়ী সাক্ষাতকারে আবার বলেছিলাম, ‘দয়া করে জামায়াতকে না বলুন।’ স্মরণীয় সেই বিকেলে, খাস কামরায় ব্যারিস্টার মওদুদ এবং ওবায়দুর রহমান (প্রয়াত) নেত্রীর সান্নিধ্যে উপস্থিত ছিলেন। পুরনো সেই সুরে আজও আবার সনির্বন্ধ অনুরোধ রাখছি, মোহতারেমা, গদির মোহে রিয়াজ রহমান ও নজরুল ইসলামের মতো বুদ্ধের খ-ের বুদ্ধিতে বিদেশী হস্তক্ষেপ চাওয়ার ভ্রান্তপথ পরিত্যাগ করুন। নির্বোধ তারেকের জঙ্গীদোসর ও সন্ত্রাসবাদী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করুন। সংবিধান মেনে নিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক দর্শন কবুল করুন। যৌক্তিক মীমাংসায় আসুন। ভারতের মতো, শ্রীলঙ্কার মতো, ইংল্যান্ড আমেরিকার মতো ব্রাজিলের মতো ইনকামবেন্ট সরকার প্রধানের অধীনে ‘নির্বাচন-২০১৯’ মেনে নিন। প্রয়োজনে আপনার উপদেষ্টা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইমাজুদ্দীনের সুপারিশ মতো নির্বাচন কমিশনের আইনগত সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক রদবদল ঘটাতে সংলাপ করুন। সর্বাগ্রে ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ব্যাপারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করুন। মোহতারেমা, যশোর-মাগুরার শালিখা নির্বাচনের রূপকার তরিকুল-মজিদুলের সুখস্বপ্নের সেই মায়াযুগ হয়েছে বাসি। মিডিয়ার নজরদারি ফাঁকি দিয়ে ফালুর জয় জয়কারের ‘ঢাকা-১০’-এর মতো ন্যক্কারজনক নির্বাচন-কারচুপি করা এখন আর কারও পক্ষেই সম্ভব না। জনপ্রিয়তা অর্জন করে সরকার গঠন করুন। আপনার ভাষায়, ‘শিশু ও পাগলের কাম্য’ কেয়ার টেকার বর্জন করুন। সাধ্যে বেড় পেলে, দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সংবিধান সংশোধন করতে সার্বিক ঐকমত্য গড়ুন। কুচক্রী আনোয়ার জাহিদ-কাজী জাফরদের আবদার শুনে মওলানা ভাসানী বলতেন, ‘ছ্যাড়ার মুতে আছাড় খাইতে আমি রাজি না।’ আপনাকেও বুঝতে হবে নালায়েক-অর্বাচীনের কাঁচা বুদ্ধিতে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ লালন করে মানুষ পুড়িয়ে, অস্ত্র কেড়ে পুলিশ খুন করে, থানা জ্বালিয়ে, আর যাই হোক গণতন্ত্র হয় না। আপনার এও জানা দরকার যে, রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ যারা মানে না, যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর কোন দেশেই তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। পুঁজিবাদী গণতন্ত্রের পিঠস্থান যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য কানাডা অস্ট্রেলিয়ায় বর্ণবাদ, সমাজবাদ, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ নাৎসীবাদের জন্য কোন পরিসর নেই। চীনে পুঁজিবাদ ও পুঁজিতান্ত্রিক বাকস্বাধীনতা, মতস্বাধীনতার জন্য কোন স্পেস নেই। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, ঠিক তেমনি কুইসলিং, রাজাকার ও পাকি পঞ্চম বাহিনীর ঠাঁই নেই। যুদ্ধাপরাধীদের শূলে না চড়িয়ে জাতির জনকের কন্যা মরতেও রাজি না। ধনুর্ভাঙ্গা পণ। সেটাই বাঙালীর ভরসা। মুজিব হত্যা পরবর্তী চার দশকে জামায়াত-জঙ্গী তিল তিল করে প্রবৃদ্ধ হয়েছে। পতাকা উড়িয়ে তর তর করে বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গী পৃষ্ঠপোষকতা পেতে ১২০০ এনজিও নিবন্ধিত হয়েছে মুজাহিদ মন্ত্রীর সমাজ কল্যাণে। পঁচাত্তরের খুনীদের হাত ধরে গত ৪০ বছর সবার অগোচরে নীরব গৃহযুদ্ধ ক্যান্সারের মতো, নিঃশব্দ মৃত্যুর আদলে বেড়ে উঠেছে। এখন সেই সর্বনাশের আলামত উত্যুঙ্গ হয়ে প্রকাশ্য যুদ্ধের আকার ধারণ করেছে। ২০১৩ সালে কোন রাখ ঢাক না করেই বিএনপি মুখপাত্র ‘কৃতঘ্ন’ শামশের মবিন চৌধুরী জোর গলায় যুদ্ধ ঘোষণা করেন। সুন্দরগঞ্জ থানার বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশ মেরে, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০ সদস্য হত্যা করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেন। আপনার হুকুমে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ নির্বাচন প্রতিহত করতে ৫৮২ স্কুলে আগুন জ্বলল। প্রিসাইডিং অফিসারসহ ২৬ জন খুন হলো। হাজার হাজার বৃক্ষ নিধন হলো। ধার্মিকের হাতে পবিত্র কোরান জ্বলল। বোবা গরুও রেহাই পেল না। এরই নাম কী গণতন্ত্র? তারই ধারাবাহিকতায় বাতাসে এখন মানুষ পোড়ার গন্ধ! মৃত্যুর আহাজারি! ৫ জানুয়ারি ’১৫, কোন অবরোধই পূর্ব ঘোষিত ছিল না। তবু বিনা নোটিসে ‘অবরোধ চলছে, অবরোধ চলবে’ বলে ঘোষণা দিলেন। স্থগিত যুদ্ধেরই পুনর্জীবন ঘটল। অগ্রসরমান অর্থনীতিকে ধ্বংসের চিতানলের মধ্যে ঠেলে দেয়ায় ‘প্রতিদিন ৬৫০০ টাকার আর্থিক ক্ষতি’ হচ্ছে। এমন সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ সোমালিয়ায় পরিণত হবে। এটা গণতান্ত্রিক আন্দোলন হলে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ, ফ্যাসিবাদ, নাৎসীবাদ, ফেরাউনবাদ কোনটা? সুশীলরা না জানার ভান করেন। অভাজন জানি। ‘মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকার/পঞ্চম বাহিনীর দ্বন্দ্ব আদর্শিক দ্বন্দ্ব, মৌলিক দ্বন্দ্ব এবং মীমাংসাহীন দ্বন্দ্ব!’ তা সত্ত্বেও আপোসের শেষ চেষ্টায় সংলাপের প্রত্যাশায় ৭ দফা শর্তের কথা মোহতারেমা, আপনাকে ৬ জানুয়ারি জনকণ্ঠ মারফত দেয়া খোলা চিঠিতে বলেছি। অবশ্য, অভিন্ন প্রথম দফা আমার আগেই ঘোষণা করেছে তরুণ প্রজন্মের লড়াকু ‘ষষ্ঠ বাহিনী’ (ছাত্রলীগ)। তারা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছে, ‘তারেক জিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করে জাতির জনকের অবমাননার জন্য দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।’ তারপরই রয়েছে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার গণদাবি। যা প্রজন্মের প্রাণের দাবি। এর পর আসে শর্ত নং-৩. বিচার বানচাল করে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাবার সব ষড়যন্ত্র থেকে হাত ধুয়ে সাফ সুতরা হয়ে আপনাকে বেরিয়ে আসতে হবে; ৪. ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ভুয়া জন্মদিন পালনের মতো গর্হিত ন্যক্কারজনক কাজের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে; ৫. মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত জাতীয় চার মূলনীতি ‘ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালী জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র’ সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করতে হবে; ৬. সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গী সংসর্গ ছেড়ে সংবিধান মেনে পরবর্তী পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে হবে। আর সর্বশেষ (৭নং) দাবিটা পবিত্র কোরানে আল্লা পাক নিজেই জানিয়ে রেখেছেন-‘দিয়ে দাও এতিমদের মাল সম্পদ। ভাল সম্পদের সঙ্গে মন্দ সম্পদ বদল করো না। তোমরা গ্রাস করো না তাদের মাল সম্পদ তোমাদের মাল সম্পদের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে। কারণ এটা একটা কবিরা গুনাহ্ (সুরা আন নিসা, রুকু-২)!!’ ‘পরম করুণাময় আল্লাহ পাক কোনদিনই কারও কবিরা গুনাহ মাফ করবেন না (আল হাদিস)। লেখক : ভাষাসৈনিক-বীর মুক্তিযোদ্ধা, কলামিস্ট
×