ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে জমি নিয়ে সংঘর্ষে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২০ জানুয়ারি ২০১৫

নীলফামারীতে জমি নিয়ে সংঘর্ষে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ বৈমাত্রেয় ভাইদের মধ্যে জমি নিয়ে সংঘর্ষে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাটি ঘটে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার দক্ষিণ চিকনমাটি কামাতপাড়া গ্রামে। হত্যার শিকার দুই ভাই হলেন গ্রামের মৃত জামিলুর ইসলামের প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে জাহেদুল ইসলাম (৫৫) ও জাহাঙ্গীর ইসলাম (৩৫)। এ ঘটনায় আহত হয় উভয়পক্ষের ৫ জন। পুলিশ প্রতিপক্ষের রশিদুল ইসলাম (৪৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ সাড়ে ১৬ শতক জমিতে মৃত জামিলুর ইসলামের প্রথম স্ত্রীর তিন ছেলে জাহেদুল ইসলাম, ইদ্রিস ইসলাম ও জাহাঙ্গীর ইসলাম বোরো ধানের চারা রোপণ করতে গেলে তাদের বৈমাত্রেয় ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম ও আনিছুর রহমান ও তাদের লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে আনোয়ারুল ইসলামের পক্ষের লোকজনের হাতে ওই দুই ভাইকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। আহত হয় হত্যার শিকার ওই দুই জনের মেজ ভাই ইদ্রিস ইসলাম (৪৮)। এলাকাবাসী জানায়, আনোয়ারুল ইসলামসহ ৪ জন আহত হলেও তারা পালিয়ে যায়। ডোমার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম জানান, মৃত. জামিলুর রহমানের প্রথম স্ত্রীর ৫ ছেলে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে রূপালী রয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম তার অংশের সাড়ে ১৬ শতক জমি তার বৈমাত্রেয় ভাই জাহাঙ্গীর ইসলাম কে প্রায় চার বছর আগে ৬০ হাজার টাকায় বন্ধক দিয়েছিলেন। সম্প্রতি আনোয়ারুল ওই জমি ফেরত চেয়ে তার বৈমাত্রেয় বড় মায়ের ভাইদের জমিতে হালচাষ করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু জমি বন্ধকের ৬০ টাকা আনোয়ারুল তাদের ফেরত না দেয়ায় তারা ওই জমিতে বোরোর চারা বোপণ করতে গেলে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পটুয়াখালীতে যত্রতত্র ইটভাঁটি ॥ তীব্র জ্বালানি কাঠ সঙ্কট স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, দশমিনাসহ পটুয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলে জ্বালানি কাঠের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ইটভাঁটিগুলোতে ব্যাপকহারে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার হওয়ায় এ সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে একদিকে বাসাবাড়ির রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে, মানুষকে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ আর অন্যদিকে বেড়েছে জ্বালানি কাঠের দাম। জানা গেছে, পটুয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ইটভাঁটির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বাণিজ্যিক ছাড়াও অনেকে ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটাতেও ইটভাঁটি তৈরি করেছেন। আর এ সব ইটভাঁটির প্রায় সবগুলোতেই ব্যবহার হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। ইটভাঁটিগুলোর জ্বালানির প্রয়োজন মেটাতে উজাড় হচ্ছে গাছপালা। বিভিন্ন গ্রাম ও চর-দ্বীপ থেকে প্রতিদিন শত শত মণ কাঠ পৌঁছে যাচ্ছে ইটভাঁটিগুলোতে। এমনকি ইটভাঁটিগুলোর বহু মালিক গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দিয়েছে এক শ্রেণীর দালাল। তারা সাধারণ মানুষকে প্রলুব্দ করে মোটা দামে গাছপালা কেটে দিতে বাধ্য করছে। অভিযোগ উঠেছে, সরকারী বনায়নের গাছও ইটভাঁটিগুলোতে ব্যবহার হচ্ছে। রাতের আঁধারে বনায়নের গাছ কাটা হচ্ছে। একাধিক স’মিলের মালিক জানান, আগে স’মিলগুলোর জ্বালানি কাঠ প্রতি মণ ৭০-৮০ টাকা বিক্রি হতো। এখন এর দাম এক শ’ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। একইভাবে অন্যান্য জ্বালানি কাঠের দামও মণপ্রতি ৪০-৫০ টাকা বেড়ে গেছে। তাও চাইলেই মিলছে না। ইটভাঁটিগুলোর মালিকরা আগাম দাদন দেয়ায় জ্বালানি কাঠের সরবরাহকারীরা রীতিমতো জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা ইটভাঁটিগুলোতে জ্বালানি কাঠ পৌঁছে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার নিয়েছে। ঘরবাড়ির রান্নার কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জানা গেছে, আগের চেয়ে এখন ইটভাঁটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এলাকায় বেড়েছে ইটের চাহিদা। প্রতি হাজার ইট গুণগতমান ভেদে সাড়ে ৬ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রতি হাজার ইট তৈরিতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। ফলে লাভ বেশি হওয়ায় যে কেউ যত্রতত্র ইটভাঁটি স্থাপন করছে। এর কোন নিয়মকানুনই মানা হচ্ছে না। অন্যদিকে, পটুয়াখালী জেলায় পরিবেশ অধিদফতরের কোন কার্যালয় নেই। যে কারণে ইটভাঁটিগুলোতে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার বন্ধে নেই কোন ধরনের তৎপরতা। স্থানীয় প্রশাসনও নিশ্চুপ। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে।
×